07.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা হলে অত্যন্ত রাজকীয় শিক্ষার্থী, তোমাদেরকে সর্বদা বাবার, শিক্ষকের আর
সদ্গুরুর স্মরণে থাকতে হবে, অলৌকিক সেবা করতে হবে”
প্রশ্নঃ -
যে নিজেই
নিজেকে অসীম জগতের অভিনেতা মনে করে চলে, তার লক্ষণ শোনাও?
উত্তরঃ
তার বুদ্ধিতে
কোনও সূক্ষ্ম বা স্থূল দেহধারীর স্মরণ থাকবে না। সে এক বাবাকে আর শান্তিধাম ঘরকে
স্মরণ করতে থাকবে, কেননা মাহাত্ম্য এক-এরই। যেরকম বাবা সমগ্র জগতের সেবা করছেন,
পতিতদেরকে পবিত্র বানাচ্ছেন। এইরকম বাচ্চারাও বাবার সমান অলৌকিক সেবাধারী হয়ে যায়।
ওম্ শান্তি ।
সর্বপ্রথমে
বাবা বাচ্চাদেরকে সাবধান করছেন। এখানে বসে আছো তো নিজেকে আত্মা মনে করে বসে আছো ?
এটাও বুদ্ধিতে নিয়ে এসো যে, আমরা বাবার সামনেও বসে আছি, শিক্ষকের সামনেও বসে আছি।
প্রথম কথাই হল - আমি আত্মা, বাবাও আত্মা, শিক্ষকও হলেন আত্মা, গুরুও হলেন আত্মা।
তিনি হলেন এক, তাই না! এই নতুন কথা তোমরা এখন শুনছো। তোমরা বলবে - বাবা প্রতি
কল্পেই এই কথা শুনে আসছি। তাই এটা যেন বুদ্ধিতে থাকে যে - বাবা পড়াচ্ছেন, আমরা
আত্মারা এই অর্গ্যান্স দ্বারা শুনছি। বাচ্চারা, এই সময়ই তোমরা উঁচুর থেকেও উঁচু
ভগবানের দ্বারা এই জ্ঞান প্রাপ্ত করো। তিনি হলেন সকল আত্মাদের পিতা, যিনি তোমাদের
অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রদান করেন। কি জ্ঞান প্রদান করেন? সকলের সদ্গতি করেন অর্থাৎ
ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যান। কতজনকে নিয়ে যান? এই সব তোমরা জানো। মশার ঝাঁকের মতো সমস্ত
আত্মাদেরকে যেতে হবে। সত্যযুগে একটাই ধর্ম, পবিত্রতা, সুখ-শান্তি সবকিছুই থাকে।
বাচ্চারা, চিত্র দেখিয়ে সবাইকে বোঝানো খুব সহজ। বাচ্চারাও পৃথিবীর মানচিত্র দেখে
বুঝতে পারে যে, এটা হল ইংল্যান্ড বা এটা হল এই জায়গা... এবং তার সাথে সাথে সেই
জায়গার কথাও মনে পড়ে যায়। এটাও হলো সেই রকম। এক-একজন শিক্ষার্থীকে বোঝাতে হয়,
মহিমাও এক-এরই - শিবায় নমঃ, উচ্চ থেকেও উচ্চ ভগবান। রচয়িতা বাবা ঘরের মধ্যে সবথেকে
বড়, তাই না! সেটা তো হল লৌকিক পিতা আর ইনি হলেন সমগ্র অসীমের গৃহের বাবা। ইনি আবার
শিক্ষকও। তোমাদেরকে পড়াচ্ছেন। তাই বাচ্চারা তোমাদের খুব খুশিতে থাকতে হবে। বাচ্চারা
শিক্ষার্থী হিসেবেও তোমরা হলে অত্যন্ত রাজকীয়। বাবা বলেন যে - আমি সাধারণ শরীরে আসি।
প্রজাপিতা ব্রহ্মাকেও অবশ্যই এখানে প্রয়োজন। তিনি ছাড়া কাজ কি করে চলবে এবং অবশ্যই
তাঁকে বৃদ্ধ হতে হবে কেননা তিনি হলেন অ্যাডপ্টেড, তাই না ! তাই তাঁকে বৃদ্ধ হতে হবে।
কৃষ্ণ তো কাউকে বাচ্চা-বাচ্চা বলতে পারবে না। বৃদ্ধকেই ‘বাচ্চা’ বলে ডাকা শোভা পায়।
কোনও বাচ্চাকে কি কখনো ‘বাবা’ বলা যায় ?* তাই বাচ্চারা, এই সমস্ত কথা তোমাদের
বুদ্ধিতে চিন্তন করতে হবে, আমরা কার সামনে বসে আছি ! অন্তর্মনে খুব খুশিতে থাকতে হবে।
লৌকিক শিক্ষার্থীরা যেখানেই বসে থাকুক, কিন্তু তাদের বুদ্ধিতে বাবার কথাও মনে থাকে,
শিক্ষকের কথাও মনে আসে। তাদের তো বাবা আলাদা এবং শিক্ষকও আলাদা হয়। তোমাদের তো এক
বাবা-ই হলেন শিক্ষক আবার গুরু। এই ব্রহ্মা বাবাও তো শিক্ষার্থী, তাই না! তিনিও এখন
পড়ছেন। কেবলমাত্র লোনের উপর রথ দিয়েছেন আর কিছু পার্থক্য নেই। বাকি সবই তোমাদের
মত। এঁনার আত্মাও সেটাই বোঝেন, যেটা তোমরা বোঝ। মহিমা তো এক-এরই হয়। তাঁকেই প্রভু,
ঈশ্বর বলা হয়ে থাকে। এটাও বলা হয় - নিজেকে আত্মা মনে করে এক পরমাত্মাকে স্মরণ করো,
বাকি সব সূক্ষ্ম বা স্থূল দেহধারীদেরকে ভুলে যাও। তোমরা হলে শান্তিধামের বাসিন্দা।
তোমরা হলে অসীম জগতের অভিনেতা। এসমস্ত কথা অন্য কেউ জানতে পারে না। সমগ্র জগতে
কারোরই এ বিষয়ে জানা নেই। এখানে যারা আসে, তারাই বুঝতে পারে। আর বাবার সেবাতে আসা
যাওয়া করতে থাকে। তারা হল ঈশ্বরীয় সেবাধারী, তাই না! বাবাও এসেছেন সেবা করতে।
পতিতদেরকে পবিত্র বানানোর সেবা করতে। তোমরাই তো নিজেদের রাজ্য হারিয়ে দুঃখী হয়ে
বাবাকে ডেকেছিলে। যিনি রাজ্য দিয়েছিলেন, তাঁকেই তো আহ্বান করবে, তাই না!
বাচ্চারা, তোমরা জানো
যে, বাবা তোমাদের সুখধামের মালিক বানাতে এসেছেন। দুনিয়াতে এটা কারোরই জানা নেই। আছে
তো সবাই ভারতবাসী এক ধর্মের। এটা হলোই মুখ্য ধর্ম। সেটা যখন না থাকে, তখনই তো বাবাকে
এসে স্থাপন করতে হয়। বাচ্চারা জানে যে, ভগবান... যাকে সমগ্র দুনিয়া আল্লাহ্, গড -
বলে আহবান করে, তিনি এখানে ড্রামা অনুসারে কল্প পূর্বের ন্যায় এসেছেন। এটা হল
গীতার এপিসোড, যেটা বাবা এসে স্থাপন করেন। গাওয়া হয় যে, ব্রাহ্মণ আর দেবী-দেবতা
ধর্ম... ক্ষত্রিয় বলা হয় না। ব্রাহ্মণ, দেবী-দেবতা নমঃ - বলা হয়, কেননা ক্ষত্রিয়
তো দুই কলা কম হয়ে যায়, তাই না! স্বর্গ বলাই যায় নতুন দুনিয়াকে। ত্রেতাকে নতুন
দুনিয়া বলা যাবে না। সর্ব প্রথম সত্যযুগ হলো একদম নতুন দুনিয়া। আর এটা হলো সবথেকে
পুরানো দুনিয়া। আমরা পুনরায় নতুনের থেকেও নতুন দুনিয়াতে যাব। আমরা এখন সেই
দুনিয়ায় যেতে চলেছি, তবেই তো বাচ্চারা বলে যে আমরা নর থেকে নারায়ণ হতে চলেছি।
আমরা তো সত্যনারায়ণের কথাও শুনে এসেছি, তাই না! প্রিন্স হওয়ার কথা বলা হয় না।
সত্যনারায়ণের কথা-ই বলা হয়। তারা তো নারায়ণকে আলাদা মনে করে। কিন্তু নারায়ণের তো
কোনো জীবন কাহিনী নেই। জ্ঞানের কথা তো অনেক আছে, তাই না! এইজন্য ৭ দিনের কোর্স আগে
করতে হয়। ৭ দিনের ভাট্টিতে থাকতে হয়। কিন্তু এটাও নয় যে, এখানে ভাট্টিতে থাকতে হবে।
এইরকম হলে তো অনেকেই ভাট্টির বাহানা দিয়ে এখানে এসে থেকে যাবে। এই পড়াশোনা সকালে আর
সন্ধ্যার সময় হয়। দুপুর বেলাতে বায়ুমন্ডল ঠিক থাকে না। রাত্রিতেও ১০টা থেকে ১২টা
পর্যন্ত অত্যন্ত খারাপ সময় চলে। এখানে বাচ্চারা, তোমাদেরকেও স্মরণের যাত্রায় থেকে
সতোপ্রধান হওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। সেখানে তারা তো সারাদিন কাজ-ধান্ধা নিয়েই
থাকে। এরকমও অনেকে আছে যারা ব্যবসা আদি করেও পড়াশোনা করে, আরও ভালো কোনো চাকরী করার
জন্য। এখানেও তোমরা পড়াশোনা করছো, তাই যিনি তোমাদের এখন পড়াচ্ছেন সেই শিক্ষককে
স্মরণ করতে হবে। আচ্ছা, শিক্ষক মনে করেই স্মরণ করো, তাহলে তিনজনই একসাথে মনে এসে
যাবে - বাবা, শিক্ষক আর সদ্গুরু, তেমাদের জন্য তো খুবই সহজ, তাই সেকেন্ডে মনে এসে
যাবে। ইনি হলেন আমাদের বাবা, শিক্ষক আবার গুরুও। উচ্চ থেকেও উচ্চ হলেন বাবা, যার
থেকে আমরা স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। আমরা স্বর্গে অবশ্যই যাবো। স্বর্গের
স্থাপন অবশ্যই হবে। তোমরা পুরুষার্থ করছো উঁচু পদ প্রাপ্ত করার জন্য। এটাও তোমরা
জানো। সাধারণ মানুষও জানতে পারবে, তোমাদের আওয়াজ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। তোমাদের,
ব্রাহ্মণদের অলৌকিক ধর্ম হল - শ্রীমতে চলে অলৌকিক সেবাতে তৎপর থাকা। এটাও সাধারণ
মানুষের কাছে জ্ঞাত হয়ে যাবে যে, তোমরা শ্রীমত অনুসারে সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ করছো।
তোমাদের মতো এই অলৌকিক সেবা আর কেউ করতে পারবে না। তোমরা, ব্রাহ্মণ ধর্মের আত্মারাই
এই রকম কর্ম করো। তাই এইরকম কর্ম করে যেতে হবে, এতেই ব্যস্ত থাকতে হবে। বাবাও
ব্যস্ত থাকেন তাই না! তোমরা এখন রাজধানী স্থাপন করছো। লৌকিকে তো পঞ্চায়েতের মাধ্যমে
সাধারণ মানুষদের কেবল পালন করে। এখানে তোমরা গুপ্ত বেশে কি করছো! তোমরা হলে গুপ্ত,
অজানা যোদ্ধা, অহিংসক। এর অর্থও কেউ বোঝেনা। তোমরা হলে ডবল অহিংসক সেনা। সবথেকে বড়
শত্রু তো হল এই বিকার, যে তোমাদেরকে পতিত বানিয়ে দেয়। একেই জয় করতে হবে। ভগবানুবাচ
- কাম মহা শত্রু, এর উপর জয় প্রাপ্ত করলেই তোমরা জগৎজীত হতে পারবে। এই
লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন জগৎজীত তাই না! ভারত জগৎজীত ছিলো। এই বিশ্বের মালিক কিভাবে হবে
! এটাও বাইরের (লৌকিক) মানুষেরা জানতে পারে না। এটা বোঝার জন্য বিশাল বড় বুদ্ধি চাই।
বড় বড় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া পরীক্ষার্থীদেরও বিশাল বুদ্ধি হয়, তাই না!
তোমরা শ্রীমতে চলে নিজেদের রাজ্য স্থাপন করছো। তোমরা যে কাউকেই বোঝাতে পারো যে,
বিশ্বে এক সময় শান্তি ছিল, তাই না! তখন আর অন্য কোনও রাজ্য ছিল না। স্বর্গে
সম্পূর্ণ শান্তি থাকে না (লোকে ভাবে মানুষ মরে গেলে স্বর্গে যায়, তখনই শান্তি পায়।
তাই বাবা তাদেরকে সেকথা বোঝানোর জন্য বলেছেন)। স্বর্গকে বলাই হয় আল্লাহ-র বাগিচা।
শুধু বাগান-ই থাকবে নাকি! মানুষও তো থাকবে, তাই না? বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে
আমরা স্বর্গের মালিক হতে চলেছি। বাচ্চারা তোমাদেরকে অনেক নেশায় থাকতে হবে আর
শ্রেষ্ঠ চিন্তনে থাকতে হবে। তোমরা বাইরের কোনও সুখ উপভোগ করতে চাও না। এই সময়
তোমাদেরকে একদম সাধারণ থাকতে হবে। এখন তোমরা শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছো। এটা হল পিতৃ গৃহ।
এখানে তোমরা ডবল বাবা পেয়েছো। এক হল নিরাকার উঁচুর থেকেও উঁচু, দ্বিতীয় হলো সাকার,
তিনিও উঁচুর থেকে উঁচু। এখন তোমরা শ্বশুর বাড়ি বিষ্ণুপুরীতে যাচ্ছো। তাকে কৃষ্ণপুরী
বলা যাবে না। বাচ্চাদের পুরী হয় না। বিষ্ণুপুরী অর্থাৎ লক্ষ্মী-নারায়ণের পুরী।
তোমাদের হল রাজযোগ। তাে অবশ্যই নর থেকে নারয়ণ হবে।
বাচ্চারা, তোমরা হলে
সত্যিকারের খুদাই খিদমতগার। বাবা তাকেই সত্যিকারের খুদাই খিদমতগার (‘ঈশ্বরীয়
সেবাধারী’) বলেন, যে অন্ততপক্ষে ৮ ঘন্টা আত্ম-অভিমানী হয়ে থাকার পুরুষার্থ করে। যখন
কোনও কর্ম-বন্ধন থাকবে না তখন সেবাধারী হতে পারবে আর কর্মাতীত অবস্থাও প্রাপ্ত হবে।
নর থেকে নারায়ণ হতে হবে তো কর্মাতীত অবস্থা অবশ্যই চাই। কর্ম-বন্ধন থাকলে শাস্তি
ভোগ করতে হবে।* বাচ্চারা বুঝতে পারে যে - স্মরণ করার পরিশ্রম খুব কড়া। যুক্তি খুব
সহজ, কেবলমাত্র বাবাকে স্মরণ করতে হবে। ভারতের প্রাচীন যোগ -কথিত আছে। যোগের জন্য
জ্ঞান আছে, যেটা বাবা এসে শেখান। কৃষ্ণ কোনও যােগ শেখায় না। কৃষ্ণকে আবার স্বদর্শন
চক্র দিয়ে দিয়েছে। সেই চিত্রটিতেও কতো ভুল আছে। এখন তোমাদেরকে কোনও চিত্র আদিকে
স্মরণ করতে হবে না। সবকিছু ভুলে যাও। কারো প্রতি যেন বুদ্ধি না যায়, লাইন ক্লিয়ার
চাই। এটা হল পড়াশোনার সময়। দুনিয়াকে ভুলে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে
থাকো, তবেই পাপ নাশ হবে। বাবা বলেন যে, প্রথম-প্রথম তোমরা অশরীরী এসেছিলে, পুনরায়
তোমাদেরকে অশরীরী হয়ে ফিরে যেতে হবে। তোমরা হলে অলরাউন্ডার। তারা তো হল কোনও
নির্দিষ্ট স্থানের অভিনেতা, আর তোমরা হলে অসীম জগতের..। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে,
আমরা অনেকবার এই পার্ট প্লে করে এসেছি। অনেকবার তোমরা অসীম জগতের মালিক হয়েছো। এই
অসীম জগতের নাটকে পুনরায় ছোটো-ছোটো নাটকও অনেকবার চলতে থাকে। সত্যযুগ থেকে কলিযুগ
পর্যন্ত যাকিছু হয়েছে সেটাই রিপিট হতে থাকে । শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবই এখন
তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। মূল বতন, সূক্ষ্ম বতন আর সৃষ্টিচক্র, ব্যস্ আর অন্য কোনও
ধামের সাথে তোমাদের কোনও কাজ নেই। তোমাদের ধর্ম অত্যন্ত সুখদায়ী। তাঁর যখন সময় হবে,
তখন তিনি আসবেন। নম্বরের ক্রমানুসারে যেরকম সবাই এসেছিলে, সেরকমই আবার ফিরে যাবে।
আমি অন্য ধর্মের আর কি বর্ণন করবো! তোমাদের তো কেবল এক বাবারই স্মরণে থাকতে হবে।
চিত্র আদি এই সব ভুলে এক বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। ব্রহ্মা - বিষ্ণু - শংকরকেও নয়,
কেবলমাত্র এক বাবাকে স্মরণ করতে হবে। দুনিয়ার মানুষ মনে করে যে পরমাত্মা হলেন লিঙ্গ
স্বরূপ। এখন লিঙ্গ সমান কোনো জিনিস কিভাবে হতে পারে? তারা জ্ঞান কি করে শোনাবে?
প্রেরণার মাধ্যমে কি কোনো লাউড স্পিকার থাকবে, যা তোমরা শুনবে। প্রেরণার দ্বারা তো
কিছু হয় না। এমনও নয় যে, তিনি শংকরকে প্রেরণা দেন। ড্রামাতে এইসব প্রথম থেকেই
নির্ধারিত রয়েছে । বিনাশ তো হবেই। যেরকম তোমরা আত্মারা শরীরের দ্বারা কথা বলো,
সেইরকম পরমাত্মাও তোমাদের সাথে কথা বলেন। তাঁর পার্টই হলো দিব্য অলৌকিক। পতিতদেরকে
পবিত্র করার জন্য একমাত্র বাবা-ই আসেন। তিনি বলেন যে - তাঁর পার্ট হলো সকলের থেকে
আলাদা। কল্প পূর্বে যারা এসেছিল, তারাই আসবে। যা কিছু অতীতে ঘটে গেছে, সেসবই হল
ড্রামা, পূর্ব কল্পের সাথে এই ড্রামার কোনো পার্থক্য নেই। তবুও পুরুষার্থ করার জন্য
চিন্তা করতে হবে। এরকম নয় যে, ড্রামা অনুসারে আমাদের কম পুরুষার্থ চলছে, তাহলে তো
পদও অনেক কম হয়ে যাবে। তীব্র পুরুষার্থ করতে হবে। ড্রামার উপর ছেড়ে দিও না। নিজের
চার্টকে দেখতে থাকো। বৃদ্ধি করতে থাকো। নোট রাখো যে - আমার চার্ট (স্মরণের সময়সীমা)
বৃদ্ধি হচ্ছে? কম তো হচ্ছে না? খুব সতর্ক থাকতে হবে। এখানে তোমাদের হলো ব্রাহ্মণের
সঙ্গ। বাইরের সবই হলো কুসঙ্গ। তারা তো সবকিছু উল্টোই শোনায়। এখন বাবা তোমাদেরকে
কুসঙ্গ থেকে বের করছেন।
কুসঙ্গে এসে মানুষ
নিজের আচার-ব্যবহার, থাকা-খাওয়া, পোষাকাদি সবই পরিবর্তন করে ফেলেছে, দেশ-বেশভূষারও
পরিবর্তন করে ফেলেছে, এটাও একরকম নিজের ধর্মের ইনসাল্ট করা। দেখো কিরকম ভাবে চুলের
স্টাইল করে। দেহ-অভিমান হয়ে যায়। ১০০-১৫০ টাকা খরচা করে শুধু চুলে স্টাইলের পিছনে ।
একে বলা যায় অতি দেহ-অভিমান। তারা কখনোই এই জ্ঞান ধারণ করতে পারবে না। বাবা বলছেন -
একদম সিম্পল থাকো। দামী শাড়ি পড়লেও দেহ-অভিমান আসে। দেহ-অভিমান ত্যাগ করার জন্য
সবকিছু হালকা করে দিতে হবে। দামী জিনিস দেহ-অভিমানে নিয়ে আসে। তোমরা এই সময় বনবাসে
আছো, তাই না ! প্রতিটি জিনিসের থেকে মোহ ত্যাগ করতে হবে। অত্যন্ত সাধারণ থাকতে হবে।
বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে যদিও দামী শাড়ি পড়ে যাও, সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য দামী শাড়ি
পড়া, পুনরায় বাড়িতে এসে পরিত্যাগ করে ফেলবে। তোমাদেরকে তো বাণীর (শব্দের) থেকেও উপরে
যেতে হবে। বাণপ্রস্থীরা সাদা পোষাক ধারণ করে। তোমরা এক-একজন হলে ছোটো-বড় সব
বাণপ্রস্থী। ছোটো বাচ্চাকেও শিব বাবারই স্মরণ করা শেখাতে হবে। এতেই কল্যাণ হবে।
ব্যস্, এখন আমাদের যেতে হবে শিববাবার কাছে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সর্বদাই খেয়াল রাখতে হবে যে, আমাদের কোনও আচরণ যেন দেহ-অভিমান বশতঃ না হয়। খুব
সাধারণ থাকতে হবে। কোনও জিনিসের প্রতি আসক্তি রেখো না। কুসঙ্গ থেকে নিজেকে রক্ষা
করতে হবে।
২ ) স্মরণের
পুরুষার্থের দ্বারা সকল কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে কর্মাতীত হতে হবে। অন্ততপক্ষে ৮
ঘন্টা আত্ম-অভিমানী থেকে সত্যিকারের খুদাই-খিদমতগার হতে হবে।
বরদান:-
বিশাল
বুদ্ধি বিশাল হৃদয় দিয়ে আপনভাবের অনুভূতি করানো মাস্টার রচয়িতা ভব
মাস্টার রচয়িতার
প্রথম রচনা হল - এই দেহ। যারা এই দেহের মালিকানায় সম্পূর্ণ সফলতা প্রাপ্ত করে নেয়,
তারা নিজেদের স্নেহ বা সম্পর্ক দ্বারা সবাইকে আপনত্বের অনুভব করায়। সেই আত্মাদের
সম্পর্কে এসে সুখের, দাতা ভাবের, শান্তি, প্রেম, আনন্দ, সহযোগ, সাহস, উৎসাহ উদ্দীপনা
- কোনও না কোনও বিশেষ গুণের অনুভূতি হতে থাকে। তাদেরকেই বলা হয় বিশাল বুদ্ধিবান,
বিশাল হৃদয়বান।
স্লোগান:-
উৎসাহ-উদ্দীপনার ডানা মেলে সদা উড়ন্ত কলার অনুভূতি করতে থাকো।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
নিজেকে শ্রেষ্ঠ
সংকল্পের দ্বারা সম্পন্ন বানানোর জন্য ট্রাস্টি হয়ে থাকো, ট্রাস্টি হওয়া অর্থাৎ ডবল
লাইট ফরিস্তা হওয়া। এইরকম বাচ্চাদের প্রত্যেক শ্রেষ্ঠ সংকল্প সফল হয়। একটা শ্রেষ্ঠ
সংকল্প বাচ্চারা করলে, হাজার শ্রেষ্ঠ সংকল্পের ফল বাবার দ্বারা প্রাপ্ত হয়ে যায়।
একের হাজার গুণ প্রাপ্ত হয়ে যায়।