11-05-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
07-03-2005 মধুবন
"সম্পূর্ণ পবিত্রতার ব্রত পালন আর আমিত্ব বোধকে
সমর্পণ করাই শিব জয়ন্তী উদযাপন করা"
আজ বিশেষভাবে শিব বাবা নিজের শালগ্রাম বাচ্চাদের বার্থ ডে উদযাপন করতে এসেছেন। তোমরা
বাচ্চারা বাবার জন্মদিন উদযাপন করতে এসেছো আর বাপদাদা বাচ্চাদের বার্থ ডে উদযাপন
করতে এসেছেন। কারণ বাচ্চাদের প্রতি বাপদাদার অনেক ভালোবাসা রয়েছে। বাবা অবতরিত
হওয়ার সাথে সাথেই যজ্ঞ রচনা করেন এবং ব্রাহ্মণ ব্যতীত যজ্ঞ সম্পন্ন হয় না।
সেইজন্য এই বার্থ ডে অলৌকিক, স্বতন্ত্র এবং সুন্দর। এমন বার্থ ডে যা বাবা আর
বাচ্চাদের একত্রিত হওয়া, সেটা সমগ্র কল্পে না হয়েছে, না কখনো হতে পারে। বাবা
নিরাকার, একদিকে নিরাকার, আরেকদিকে জন্ম উৎসব পালন করেন। শিব বাবা এক, যাঁর নিজের
শরীর থাকে না সেইজন্য ব্রহ্মা বাবার তনে অবতরিত হন, এই অবতরিত হওয়াই জয়ন্তী রূপে
উদযাপন করেন। তো সবাই তোমরা বাবার জন্মদিন উদযাপন করতে এসেছ নাকি নিজেদের জন্মদিন
উদযাপন করতে এসেছো? অভিনন্দন জানাতে এসেছো, নাকি অভিনন্দন নিতে এসেছো? সাথে সাথে
থাকার এই প্রতিজ্ঞা বাবার তাঁর বাচ্চাদের প্রতি। এখনও সঙ্গমে কম্বাইন্ড, সাথে আছেন,
অবতরণও সাথে, পরিবর্তন করার কার্যও সাথে এবং ঘর-পরমধামে যেতেও সাথে সাথেই আছেন। এটা
হলো বাবা আর বাচ্চাদের ভালোবাসার স্বরূপ।
শিব জয়ন্তী ভক্তরাও উদযাপন করে, কিন্তু তারা শুধু আহ্বান করে, গীত গায়। তোমরা
আহ্বান জানাও না, তোমাদের উদযাপন করা অর্থাৎ সমান হওয়া। উদযাপন করা অর্থাৎ
উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে উড়তে থাকা। সেইজন্য এটাকে উৎসব বলা হয়। উৎসবের অর্থই হলো
উৎসাহে থাকা। তো সদা উৎসব অর্থাৎ উৎসাহে থাকো তোমরা, তাই না! সদা নাকি কখনো কখনো?
বাস্তবিক পক্ষে দেখা যায় যে ব্রাহ্মণ জীবনের শ্বাসই হলো উৎসাহ উদ্দীপনা। যেমন, বিনা
শ্বাসে থাকা যায় না, তেমনই ব্রাহ্মণ জীবন ব্যতীত তোমরা থাকতে পারো না। এমন অনুভব
করতে পারো তো না? দেখো, বিশেষভাবে জয়ন্তী উদযাপন করার জন্য সেই কোথায়-কোথায়,
দূর-দূরান্ত থেকে ছুটতে ছুটতে এসেছো। বাপদাদার নিজের জন্মদিনের এত খুশি নেই যতটা
বাচ্চাদের জন্মদিনের জন্য রয়েছে। সেইজন্য বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে থলি ভরে ভরে
পদ্মগুন খুশির অভিনন্দন জানাচ্ছেন। অভিনন্দন, অভিনন্দন, অভিনন্দন।
আজকের দিনে বাপদাদাও প্রকৃত ভক্তকে খুব স্মরণ করছেন। তারা তো ব্রত রাখে এক দিনের আর
তোমরা ব্রত রেখেছ সারা জীবনে সম্পূর্ণ পবিত্র থাকার। তারা ভোজনের উপবাস (ব্রত) রাখে,
তোমরাও মনের ভোজনের উপবাস রাখো - ব্যর্থ সংকল্প, নেগেটিভ সংকল্প, অপবিত্র সংকল্পের।
পাক্কা ব্রত রেখেছ তো? ডবল ফরেনার্স এই সামনের সারিতে বসে আছে। কুমাররা বলো, তোমরা
কুমাররা ব্রত রেখেছো, পাক্কা? কাঁচা নয়। মায়া শুনছে। সবাই পতাকা নাড়াচ্ছ, মায়া
দেখছে তোমরা পতাকা নাড়াচ্ছ। যখন তোমরা ব্রত রাখো পবিত্র হতেই হবে, তো ব্রত রাখা
অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ বৃত্তি বানানো। তো বৃত্তি যেমন হয় তেমনই দৃষ্টি, কৃতি আপনা থেকেই
তৈরি হয়ে যায়। তো এমন ব্রত তোমরা রেখেছ তো না? পবিত্র শুভ বৃত্তি, পবিত্র শুভ
দৃষ্টি, যখন একে অপরকে দেখো তখন কী দেখো? ফেস দেখো, নাকি ভ্রুকুটির মাঝখানে ঝলমলে
আত্মাকে দেখো? অনেক বাচ্চারা বলে যে, যখন কথা বলতে হয়, কাজ করতে হয় তখন ফেস দেখেই
কথা বলতে হয়, চোখের দিকেই নজর যায়, তখন ফেস দেখে কখনো কখনো বৃত্তি খানিক বদলে যায়।
বাপদাদা বলেন, চোখের সাথে তো ভ্রুকুটিও আছে, তো ভ্রুকুটির মধ্যে আত্মাকে দেখে কথা
বলতে পারো না! এখন বাপদাদা সামনে ব'সে থাকা বাচ্চাদের চোখে দেখছেন, নাকি ভ্রুকুটির
মধ্যে দেখছেন, জানো তোমরা? একসাথেই তো আছে। তো ফেসের দিকে দেখ কিন্তু ফেসের মধ্যে
ভ্রুকুটিতে ঝলমলে নক্ষত্রকে দেখ। তো এই ব্রত নাও, নিয়েছ তোমরা, কিন্তু আরও
অ্যাটেনশন দাও। আত্মাকে দেখে কথা বলা উচিত, আত্মার সাথে আত্মা কথা বলছে। আত্মা দেখছে।
তাহলেই বৃত্তি সদা শুভ থাকবে। আর সেইসঙ্গে আরেকটাও সুবিধা আছে যেমন বৃত্তি তেমন
বায়ুমণ্ডল তৈরি হয়। বায়ুমণ্ডল শ্রেষ্ঠ বানানোয় নিজের পুরুষার্থের সাথে সাথে
সেবাও হয়ে যায়। সুতরাং ডবল লাভ হলো তো না! নিজের এমন শ্রেষ্ঠ বৃত্তি বানাও যাতে
কোনও বিকারী, পতিত তোমার বৃত্তির বায়ুমণ্ডল দ্বারা পরিবর্তন হয়ে যায়। এমন ব্রত
যেন সদা স্মৃতিতে থাকে, স্বরূপে থাকে।
আজকাল বাপদাদা বাচ্চাদের চার্ট দেখেছেন, নিজের বৃত্তি দ্বারা বায়ুমণ্ডল বানানোর
পরিবর্তে কোথাও কোথাও কখনো কখনো অন্যদের বায়ুমণ্ডলের প্রভাব পড়ে যায়। কারণ কী
থাকে? বাচ্চারা আত্মিক আলাপচারিতায় অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে, তারা বলে এর
বিশেষত্ব ভালো লাগে, এনার থেকে খুব ভালো সহযোগ পাওয়া যায়, কিন্তু বিশেষত্ব প্রভুর
দান। ব্রাহ্মণ জীবনে যে প্রাপ্তি রয়েছে, যে বিশেষত্বই রয়েছে সব প্রভুর প্রসাদ,
প্রভুর দান। তো দাতাকে ভুলে গিয়ে গ্রহীতাকে স্মরণ করবে! প্রসাদ কখনো কারও
পার্সোনাল এরকম গাওয়া হয় না, প্রভু প্রসাদ বলা হয়ে থাকে। অমুকের প্রসাদ বলা হয়
না। সহযোগ পাও সেটা ভালো ব্যাপার কিন্তু সহযোগ প্রাপ্ত করানোর দাতাকে তো ভুলো না!
তো পাক্কা পাক্কা বার্থ ডে'র ব্রত রেখেছো? বৃত্তি বদলে গেছে? সম্পন্ন পবিত্রতা, এটা
সত্যিকারের ব্রত নেওয়া বা প্রতিজ্ঞা করা। চেক করো - বড়-বড়ো বিকারের উপবাস তো
রেখেছো কিন্তু তাদের ছোট ছোট বাচ্চা-কাচ্চার থেকে মুক্ত হয়েছো? বাস্তবিকপক্ষে, দেখ,
যারা প্রবৃত্তির তাদের জীবনে সন্তানের থেকে নাতি-নাতনিদের প্রতি ভালোবাসা বেশি হয়।
মাতাদের ভালোবাসা থাকে তো না! তো বড়-বড়ো রূপ থেকে তো জিতে গেছ, কিন্তু ছোট ছোট
সূক্ষ্ম স্বরূপে আঘাত করে না তো? যেমন কেউ কেউ বলে - আসক্তি নেই কিন্তু ভালো লাগে।
এই জিনিস বেশি ভালো লাগে কিন্তু আসক্তি নেই। বিশেষভাবে কেন ভালো লাগে? অতএব, চেক করো
ছোট ছোট রূপেও অপবিত্রতার অংশ থেকে যায়নি তো? কারণ অংশ থেকে কখনো বংশের জন্ম হতে
পারে। যে কোনও বিকার, হয় ছোট রূপে, নয়তো বড় রূপে আসার নিমিত্ত এক শব্দের ভাব,
সেই এক শব্দ হলো - "আমি।" বডি কন্সাস এর আমি। আমি এই এক শব্দে অভিমানও আসে এবং
অভিমান যদি সফল না হয় তবে ক্রোধও আসে। কেননা, অভিমানের লক্ষণ হলো - নিজের অপমান হয়
এমন একটা শব্দও সে সহ্য করতে পারে না। সেইজন্য ক্রোধ উৎপন্ন হয়। ভক্তরা তো বলি
উৎসর্গ করে কিন্তু তোমরা আজকের দিনে সীমাবদ্ধ দুনিয়ার যা কিছু আমিত্ব বোধ আছে, তা'
বাবাকে সমর্পণ করে দাও। এটা ভেবো না, করতে তো হবে, হতে তো হবে... তো তো ক'রো না।
তোমরা সমর্থ আর সমর্থ হয়ে সমাপ্তি করো। কোনো নতুন বিষয় নয়, কত কল্প, কত বার
সম্পূর্ণ হয়েছো, স্মরণ আছে - এটা কোনো নতুন বিষয় নয়! কল্প কল্প হয়েছ, যা
হয়েছিলে সেটাই হচ্ছ, শুধু রিপিট করতে হবে। যা হয়ে আছে সেটাই বানাতে হবে। সেইজন্য
বলা হয়ে থাকে নির্ধারিত ড্রামা। তৈরি হয়ে আছে, এখন শুধু রিপিট করতে হবে অর্থাৎ
তৈরি করতে হবে। কঠিন নাকি সহজ? বাপদাদা মনে করেন সঙ্গম যুগের বরদান হলো - সহজ
পুরুষার্থ। এই জন্যে সহজ পুরুষার্থের বরদান দ্বারা ২১ জন্মের সহজ জীবন আপনা থেকেই
প্রাপ্ত হবে। বাপদাদা সব বাচ্চাকে পরিশ্রম থেকে মুক্ত করতে এসেছেন। ৬৩ জন্ম তোমরা
পরিশ্রম করেছ, এক জন্ম পরমাত্ম ভালবাসায়, প্রেম প্রীতি ভালবাসায় পরিশ্রম থেকে
মুক্ত হয়ে যাও। যেখানে প্রেম আছে সেখানে পরিশ্রম নেই, যেখানে পরিশ্রম আছে সেখানে
প্রেম নেই। তাইতো বাপদাদা সহজ পুরুষার্থী ভব-র বরদান দিচ্ছেন। আর মুক্ত হওয়ার সাধন
হলো - প্রেম, বাবার সাথে হৃদয়ের ভালবাসা। ভালবাসায় লাভলিন হওয়ার মহামন্ত্র হলো
মন্মনা ভব-র মন্ত্র। তো এই মন্ত্র কাজে লাগাও। কাজে কীভাবে লাগাতে হবে সেটা তোমরা
জানো তো না! বাপদাদা দেখেছেন, সঙ্গমযুগে পরমাত্ম প্রেম দ্বারা, বাপদাদার দ্বারা কত
শক্তি প্রাপ্ত হয়েছে, গুণ প্রাপ্ত হয়েছে, জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে, খুশি প্রাপ্ত
হয়েছে, এত সব প্রভুর দান, এই সমূহ ভাণ্ডারকে সময় মতো কার্যে প্রয়োগ করো।
তো বাপদাদা কী চান, শুনেছো? প্রত্যেক বাচ্চা সহজ পুরুষার্থী, সহজও, তীব্রও। দৃঢ়তা
ইউজ করো। হতেই হবে, আমি হবো না তো কে হবে! আমিই ছিলাম, আমিই আছি আর প্রতি কল্প আমিই
হবো। এত দৃঢ় নিশ্চয় নিজের মধ্যে ধারণ করতেই হবে। করবো ব'লো না, করতেই হবে। হতেই
হবে। হয়ে রয়েছে।
বাপদাদা দেশ বিদেশের বাচ্চাদের দেখে খুশি হন। কিন্তু, তোমরা যারা সমুখে রয়েছো কেবল
তাদেরই দেখছেন না, চতুর্দিকের দেশ ও বিদেশের বাচ্চাদের দেখছেন। যেখান সেখান থেকে
বার্থ ডে'র মেজরিটি অভিনন্দন জানিয়েছে, কার্ডও পেয়েছেন, ই-মেলও পেয়েছেন, হৃদয়ের
সংকল্পও পেয়েছেন। বাবাও বাচ্চাদের গীত গেয়ে থাকেন, তোমরা গীত গাও তো না - বাবা
আপনি চমৎকার করে দিয়েছেন। বাপদাদা সদা বলেন যে তোমরা তো সমুখে বসে আছ, কিন্তু যারা
দূরে আছে তারাও বাপদাদার হৃদয়ে বসে আছে। আজ চারদিকে বাচ্চাদের সংকল্পে রয়েছে -
অভিনন্দন, অভিনন্দন, অভিনন্দন। বাপদাদার কানে এই আওয়াজ পৌঁছাচ্ছে আর মনে সংকল্প
পৌঁছাচ্ছে। নিমিত্ত এই কার্ড আছে, পত্র আছে কিন্তু অনেক বড় হিরের থেকেও মূল্যবান
গিফ্ট আছে। সবাই শুনছে, আনন্দিত হচ্ছে। তো সবাই তোমরা নিজের বার্থ ডে উদযাপন করে
নিয়েছ তো, তাই না! হতে পারে তোমাদের মধ্যে কেউ দু' বছরের, কেউ এক বছরের হবে, এমনকি
এক সপ্তাহেরও হতে পারে, কিন্তু এটা যজ্ঞ স্থাপনের বার্থ ডে। তো সব ব্রাহ্মণ অবশ্যই
যজ্ঞ নিবাসী। সেইজন্য সব বাচ্চাকে হৃদয়ের অনেক অনেক স্মরণ-স্নেহ ও আশীর্বাদও, সদা
আশীর্বাদেই প্রতিপালিত হতে থাকো, উড়তে থাকো। আশীর্বাদ দেওয়া আর নেওয়া সহজ তো না!
সহজ? যারা মনে করো সহজ তারা হাত তোলো। পতাকা নাড়াও। তো আশীর্বাদ ছাড়ো না তো?
সবচাইতে সহজ পুরুষার্থ হলোই আশীর্বাদ দেওয়া, আশীর্বাদ নেওয়া। এর মধ্যে যোগও এসে
যায়, জ্ঞানও এসে যায়, ধারণাও এসে যায়, সেবাও এসে যায়। চার সাব্জেক্টই এসে যায়
আশীর্বাদ দেওয়া আর নেওয়াতে।
ডবল ফরেনার্স তাহলে আশীর্বাদ দেওয়া আর নেওয়া সহজ তো না! সহজ? ২০ বছরের যারা এসেছো
তারা হাত তোলো। তোমাদের তো ২০ বছর হয়েছে, কিন্তু বাপদাদা তোমাদের সবাইকে পদ্মগুন
অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কত দেশ থেকে এসেছে? (৬৯ টি দেশ থেকে) অভিনন্দন। ৬৯ তম বার্থ ডে
উদযাপন করার জন্য ৬৯ টি দেশ থেকে এসেছে। কত ভালো হয়েছে। আসতে কষ্ট হয়নি তো না।
সহজভাবে এসে গেছো তো না! যেখানে ভালোবাসা আছে সেখানে কিছুই পরিশ্রম নেই। তো আজকের
কোন্ বিশেষ বরদান স্মরণে রাখবে? সহজ পুরুষার্থী। যা কিছু সহজ কার্য তা' তাড়াতাড়িই
করা হয়ে থাকে। পরিশ্রমের কাজ কঠিন হয় তো না, সেইজন্য টাইম লাগে। তো সবাই তোমরা
কে? সহজ পুরুষার্থী। বলো এটা। স্মরণে রাখো। নিজের দেশে ফিরে গিয়ে পরিশ্রমে লেগে
যেও না। যদি কোনো পরিশ্রমের কাজ আসেও তো হৃদয় থেকে বলবে, বাবা, আমার বাবা, তাহলে
পরিশ্রম শেষ হয়ে যাবে। আচ্ছা। তোমরা উদযাপন করে নিয়েছো তো না! বাবাও উদযাপন করে
নিয়েছেন। আচ্ছা।
এখন এক সেকেন্ডে ড্রিল করতে পারো তোমরা? করতে পারো তো না! আচ্ছা। (বাপদাদা ড্রিল
করিয়েছেন।)
চতুর্দিকের সদা উৎসাহ-উদ্দীপনায় থাকা শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের, সদা সহজ পুরুষার্থী সঙ্গম
যুগের সর্ব বরদানী বাচ্চাদের, সদা বাবা আর আমি আত্মা এই স্মৃতিতে যারা বলে, আমি
আত্মা, যারা সদা সর্ব আত্মাকে নিজের বৃত্তি দ্বারা বায়ুমণ্ডলের সহযোগ দেয় এমন
মাস্টার সর্বশক্তিমান বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন, আশীর্বাদ আর নমস্কার।
ডবল বিদেশি বড় বোনেদের প্রতি - তোমরা সবাই খুব ভালো প্রয়াস করেছো। গ্রুপ গ্রুপ
বানিয়েছো তো না, আন্তরিকভাবে কঠোর পরিশ্রম করেছ। আর এখানে বায়ুমন্ডলও ভালো,
সংগঠনেরও শক্তি আছে, তাইতো সবাই ভালো রিফ্রেশমেন্ট পেয়ে যায় এবং তোমরা নিমিত্ত হয়ে
যাও। এটা ভালো। তোমরা সবাই দূরে দূরে থাকো তো না, সেইজন্য সংগঠনের যে শক্তি সেটাও
খুব ভালো। এত সব পরিবার একত্রিত হয়, সেইজন্য তো প্রত্যেকের বিশেষত্বের প্রভাব পড়ে।
ভালো প্ল্যান বানিয়েছ। বাপদাদা খুশি হন। সবার সুগন্ধি তোমরা নিয়ে নাও। তারা খুশি
হয়, তোমরা আশীর্বাদ প্রাপ্ত করো। এটা ভালো, এই যে সবাই একত্রিত হও এটা খুব ভালো,
নিজেদের মধ্যে দেওয়া নেওয়াও হয়ে যায় আর রিফ্রেশমেন্টও হয়ে যায়। পরস্পরের যে
বিশেষত্ব খুব পছন্দ হয়, তোমরা সেটা ইউজ করে থাকো, এতে সংগঠন ভালো হয়ে যায়। এটা
ঠিক।
সেন্টারবাসী ভাই বোনেদের প্রতি - (সবাই ব্যানার দেখাচ্ছে, ব্যানারে লেখা আছে -
প্রেম আর দয়ার জ্যোতি প্রজ্জ্বলিত রাখবো) খুব ভালো সংকল্প নিয়েছ। নিজের প্রতিও দয়া
দৃষ্টি, সাথীদের প্রতিও দয়া দৃষ্টি আর সকলের প্রতিও দয়া দৃষ্টি। ঈশ্বরীয় লাভ
চুম্বক, তো তোমাদের কাছে ঈশ্বরীয় লাভের চুম্বক আছে। যে কোনো আত্মাকে ঈশ্বরীয়
ভালবাসার চুম্বক দ্বারা বাবার বানাতে পারো। সেন্টারে যারা থাকে তাদেরকে বাপদাদা
বিশেষভাবে হৃদয়ের আশীর্বাদ দেন, তোমরা সবাই বিশ্বে বাবার নাম মহিমান্বিত করেছো।
কোণে কোণে ব্রহ্মা কুমারীসের নাম ছড়িয়ে দিয়েছো তো না! বাপদাদার সবচাইতে ভালো লাগে
যে বিষয় সেটা হলো তোমরা যেমন ডবল বিদেশি, তেমন ডবল জব করো। মেজরিটি লৌকিক জবও করে
তো অলৌকিক জবও করে এবং বাপদাদা দেখেন, বাপদাদার টিভি অনেক বড়, এরকম বড় টিভি এখানে
নেই। তো বাপদাদা দেখেন কীভাবে খুব সহজে এবং দ্রুত গতিতে ক্লাস করো, দাঁড়িয়ে
দাঁড়িয়ে কীভাবে জলখাবার বানাও, টাইমলি জবে পৌঁছাও, চমৎকার করো তোমরা। দেখতে দেখতে
বাপদাদা হৃদয়ের ভালোবাসা দিতে থাকেন। খুব ভালো, তোমরা সেবার নিমিত্ত হয়েছ আর
নিমিত্ত হওয়ার গিফ্ট হিসেবে বাবা সদা বিশেষ দৃষ্টি দিতে থাকেন। খুব ভালো লক্ষ্য
রেখেছো, তোমরা ভালো, ভালো থাকবে, ভালো বানাবে।
বরদান:-
সর্ব ভাণ্ডারের ইকনমির বাজেট করে সূক্ষ্ম পুরুষার্থী
ভব
যেমন লৌকিক রীতিতে যদি ইকনমি পরিবার না হয় তবে সঠিক
রীতিতে চলতে পারবে না। এভাবে যদি নিমিত্ত হওয়া বাচ্চারা ইকনমির না হয় তাহলে
সেন্টার ঠিকভাবে চলে না। ওটা হলো সীমাবদ্ধ দুনিয়ার প্রবৃত্তি, এটা হলো অসীম
দুনিয়ার প্রবৃত্তি। তো চেক করা উচিৎ যে, সংকল্প, বোল আর শক্তিতে কী কী এক্সট্রা
খরচ করেছ। যারা সর্ব ভাণ্ডারকে ইকনমির বাজেট বানিয়ে সেই অনুসারে চলে তাদেরকেই
সূক্ষ্ম পুরুষার্থী বলা হয়ে থাকে। তাদের সংকল্প, বোল, কর্ম ও জ্ঞানের শক্তি কোনকিছু
ব্যর্থ হতে পারে না।
স্লোগান:-
স্নেহের ভাণ্ডারে সৌভাগ্যবান হয়ে সবাইকে স্নেহ দাও
আর স্নেহ নাও।
অব্যক্ত ঈশারা :- আত্মিক রয়্যাল্টি আর পিওরিটির
পার্সোনালিটি ধারণ করো পবিত্রতার শক্তি পরমপূজ্য বানায়। পবিত্রতার শক্তি দ্বারা এই
পতিত দুনিয়াকে তোমরা পরিবর্তন করে থাকো। পবিত্রতার শক্তি বিকারের অগ্নিতে জ্বলছে
এমন আত্মাদের শীতল বানিয়ে দেয়। আত্মাকে অনেক জন্মের বিকর্মের বন্ধন থেকে নিষ্কৃতি
দিয়ে থাকো। পবিত্রতার আধারে দ্বাপর থেকে এই সৃষ্টির কিছু না কিছু স্থিরতা ছিল। এর
গুরুত্ব জেনে পবিত্রতার লাইটের ক্রাউন ধারণ করে নাও।