11.08.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনের দ্বারা নিজের কর্মাতীত অবস্থা তৈরী করতে হবে, তার সাথে
পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার পথও বলে দিতে হবে, রূহানী সার্ভিস করতে হবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ মন্ত্র
স্মরণে রাখলে পাপ কর্ম থেকে বাঁচতে পারবে?
উত্তরঃ
বাবা মন্ত্র
দিয়েছেন - হিয়ার নো ইভিল, সী নো ইভিল...এই মন্ত্র স্মরণে রাখতে হবে। তোমাদের
কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা যেন কোনো পাপ না হয় । কলিযুগেই সর্বাধিক পাপ কর্ম হয়ে থাকে,
সেইজন্যই বাবা এই যুক্তির কথা বলেছেন, পবিত্রতার গুণ ধারণ করো - এটাই হলো নম্বর
ওয়ান গুণ।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা কার
সামনে বসে আছে, বুদ্ধিতে অবশ্যই থাকে যে আমরা পতিত-পাবন সবার সদ্গতি দাতা, অসীম
জগতের বাবার সামনে বসে আছি । যদিও ব্রহ্মা শরীরে অবস্থানরত তবুও তাঁকেই স্মরণ করতে
হবে। মানুষ কখনও সবার সদ্গতি করতে পারে না। মানুষকে পতিত-পাবন বলা যায় না।
বাচ্চাদের নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে। সমস্ত আত্মাদের পিতা তিনি । বাবা, যিনি
আমাদের স্বর্গের মালিক করে তোলেন। এই বিষয়ে বাচ্চাদের জানা উচিত এবং খুশিও হওয়া
উচিত। বাচ্চারা এও জানে আমরা নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হতে চলেছি । অতি সহজ পথের
হদিশ প্রাপ্ত হয়ে চলেছে । শুধুমাত্র স্মরণ করতে হবে আর নিজের মধ্যে দৈবীগুণ ধারণ
করতে হবে। নিজেকে যাচাই করতে হবে। যেমন নারদের দৃষ্টান্ত রয়েছে। এইসব দৃষ্টান্ত,
জ্ঞানের সাগর বাবাই দিয়েছেন। সন্ন্যাসীরা যে দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকে, সবই বাবার দেওয়া।
ভক্তি মার্গে শুধু গাওয়া হয়। যদিও তারা কচ্ছপ, সর্প, ভ্রমর ইত্যাদির দৃষ্টান্ত ও
দিয়ে থাকে , কিন্তু নিজেরা কিছু করতে অসমর্থ । বাবার দেওয়া দৃষ্টান্ত পুনরায় ভক্তি
মার্গে রিপিট হতে থাকে। ভক্তি মার্গ হলো অতীতের। এই সময় যা প্র্যাকটিকালি হচ্ছে
তারই গায়ন পরে গিয়ে হবে। যদিও দেবতাদের জন্মদিন পালন করে থাকে কিন্তু এ বিষয়ে কিছুই
জানে না। এখন তোমরা বুঝেছ। বাবার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে পতিত থেকে পাবনও হচ্ছ
আবার পতিতদের পাবন হওয়ার পথও বলে দিচ্ছো । এই হলো তোমাদের প্রধান রূহানী সার্ভিস।
প্রথমে কাউকে আত্মা সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করতে হবে। বলতে হবে তুমি আত্মা। আত্মা
সম্পর্কে কারো জানা নেই। আত্মা তো অবিনাশী। যখন সময় হয় আত্মা শরীরে এসে প্রবেশ করে
সুতরাং প্রতি মূহুর্তে নিজেকে আত্মা বলে স্মরণ করতে হবে। আমরা আত্মাদের পিতা পরমপিতা
পরমাত্মা। তিনি প্রধান টিচারও ,এটাও বাচ্চাদের সবসময় স্মরণে থাকা উচিত। ভুলে যাওয়া
উচিত নয়। তোমরা জান এখন ফিরে যেতে হবে। বিনাশ সামনেই অপেক্ষা করছে। সত্যযুগে দৈবী
পরিবার খুব ছোট হয় । কলিযুগে অসংখ্য মানুষ। অনেক ধর্ম, অনেক মত । সত্যযুগে এসব
কিছুই নেই । বাচ্চাদের সারাদিন বুদ্ধিতে এইসব বিষয় মনন করতে হবে। এটা ঈশ্বরীয়
পড়াশোনা তাইনা। লৌকিক পড়াশোনাতে কত বইপত্র ইত্যাদি প্রয়োজন হয় । প্রতিটি ক্লাসে
নতুন-নতুন বইপত্র কিনতে হয়। এখানে তো কোনো বই বা শাস্ত্র ইত্যাদির বিষয়ই নেই। এখানে
একটাই বিষয়, একটাই পড়া । যখন ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট ছিল , রাজাদের রাজ্য ছিল, সেইজন্য
স্ট্যাম্পেও রাজা-রাণী ছাড়া অন্য কারো ছবি দেওয়া হতো না। আজকাল দেখ ভক্ত ইত্যাদি
যারা আছে তাদের ছবি দিয়ে স্ট্যাম্প তৈরি করা হয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য যখন হবে
চিত্রও একই মহারাজা-মহারাণীর হবে। এমনটা নয় যে অতীতে যারা দেবতা হয়ে চলে গেছে তাদের
চিত্র মুছে গেছে । তা নয়, অতি পুরানো দেবতাদের চিত্রও অন্তর থেকে গ্রহণ করা হয়।
কেননা শিববাবার পরেই হলোেন দেবতারা । এইসব বিষয় বাচ্চারা তোমরা ধারণ করে চলেছ
অন্যদেরও পথ বলে দিতে। এ হলো সম্পূর্ণ নতুন ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন । তোমরাই এই
পঠন-পাঠনের দ্বারা পদ প্রাপ্ত করেছিলে, এ বিষয়ে আর কেউ-ই জানে না। পরমপিতা তোমাদের
রাজযোগ শেখাচ্ছেন। মহাভারতের লড়াই প্রসিদ্ধ। কি হতে চলেছে সে তো এগিয়ে যেতে-যেতে
দেখতেই পাবে । কেউ একটা কিছু বলবে, কেউ অন্য কিছু করবে । প্রতিদিনই মানুষের
একটু-একটু করে অনুভব হতে থাকবে। বলবে বিশ্বযুদ্ধ লাগবে। এর আগেই বাচ্চারা তোমাদের
পড়াশোনা করে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করতে হবে। অসুর আর দেবতাদের মধ্যে কখনোই লড়াই
হয়না। এই সময় তোমরা ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ভুক্ত যারা, পরে গিয়ে দৈবী সম্প্রদায়ভুক্ত হবে।
সেইজন্যই এই জন্মে দৈবীগুণ ধারণ করে চলেছ । নম্বর ওয়ান দৈবীগুণ হলো পবিত্রতা। তোমরা
এই শরীর দ্বারা কত পাপ করে এসেছ । আত্মাকেই বলা হয় পাপ-আত্মা, আত্মা এই
কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা কত পাপ করতে থাকে। এখন খারাপ কিছু না দেখা, খারাপ কিছু না শোনা
....কাকে বলা হয়? আত্মাকে বলা হয়। আত্মাই কানের দ্বারা শোনে ।
বাবা তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে বাচ্চারা, তোমরাই সেই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের
ছিলে, চক্র সম্পূর্ণ করে এসেছ আবারও তোমাদের দেবী-দেবতা হতে হবে। এই মধুর স্মৃতি
স্মরণ হলে পবিত্র হওয়ার প্রেরণা যোগায় । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে আমরা ৮৪ চক্রের
পার্ট কীভাবে প্লে করে আসছি। এটাই তো কাহিনী, তাইনা। বুদ্ধিতে আসা উচিত ৫ হাজার বছর
পূর্বে আমরা দেবতা ছিলাম। আমরা পরমধাম নিবাসী। প্রথমে বিন্দুমাত্র এই ধারণা ছিল না
- আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের ওটাই হলো ঘর । ওখান থেকে আমরা আসি ভূমিকা পালন করতে।
সূর্য বংশী-চন্দ্র বংশী....হই । এখন তোমরা ব্রহ্মার সন্তান ব্রাহ্মণ বংশীয় । তোমরা
ঈশ্বরীয় সন্তান হয়েছো। ঈশ্বর বসে তোমাদের শিক্ষা প্রদান করছেন। ইনি সুপ্রিম পিতা,
সুপ্রিম টিচার এবং সুপ্রিম গুরু।
আমরা ওনার মত দ্বারা সব মানুষকে শ্রেষ্ঠ করে তুলি। মুক্তি-জীবনমুক্তি দুই-ই শ্রেষ্ঠ।
আমরা এখন নিজের ঘরে ফিরে যাব, তারপর পবিত্র আত্মারা এসে রাজত্ব করবে। এটাই চক্র,
তাইনা। একেই বলে স্বদর্শন চক্র। এ হলো জ্ঞানের বিষয় । বাবা বলেন তোমাদের এই
স্বদর্শন চক্র বন্ধ হওয়া উচিত নয়। ঘুরতে থাকলে বিকর্ম বিনাশ হবে। তোমরা রাবণের উপর
বিজয় প্রাপ্ত করতে পারবে । পাপ মুছে যাবে । এখন স্মৃতি এসেছে স্মরণ কররার জন্য। এমন
নয় যে, বসে বসে মালা জপ করতে হবে। আত্মার ভিতরে জ্ঞান সঞ্চিত আছে, যা বাচ্চারা,
তোমাদের অন্য ভাইবোনদেরও বোঝাতে হবে। বাচ্চারাই তো সহযোগী হবে, তাই না ! বাচ্চারা,
আমি তোমাদেরই স্বদর্শন চক্রধারী করে তুলি । এই জ্ঞান আমার মধ্যেই আছে, সেইজন্যই
আমাকে জ্ঞানের সাগর মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ বলা হয়। ওনাকে মালীও বলা হয়। দেবী-দেবতা
ধর্মের বীজ শিববাবাই রোপন করেছেন । এখন তোমরা দেবী-দেবতা হতে যাচ্ছো । এটাই যদি
সারাদিন সিমরণ করতে থাক তাতেও তোমাদের কল্যাণ হবে। দৈবীগুণ ধারণ করতে হবে। পবিত্র
হতে হবে। স্ত্রী-পুরুষ একত্রে থেকেও তোমরা পবিত্র হয়ে ওঠো । অন্য কোনও ধর্মে এমন হয়
না। নিবৃত্তি মার্গে শুধু পুরুষ। ওরা বলে স্ত্রী-পুরুষ দুজন একত্রে পবিত্র থাকতে
পারে না, এটা কঠিন । কিন্তু সত্যযুগে কী ছিল না ! লক্ষ্মী-নারায়ণের মহিমা কীর্তিত
হয় ।
এখন তোমরা জানো, বাবা আমাদের শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ তারপর দেবতা করে তোলেন। আমরাই
পূজ্য থেকে পূজারী হব। তারপর যখন বামমার্গে যাব, তখন শিবের মন্দির তৈরি করে পূজা হবে।
বাচ্চারা, তোমাদের নিজের ৮৪ জন্মের জ্ঞান আছে । বাবাই বলেন তোমরা নিজেদের জন্মকে
জানতে না, আমিই বলে থাকি । এমন কথা কোনও মানুষ বলতে পারে না। বাবা তোমাদের স্বদর্শন
চক্রধারী করে তুলছেন । তোমরা আত্মারা পবিত্র হতে চলেছ। শরীর তো এখানে পবিত্র হতে
পারবে না। আত্মা পবিত্র হয়ে গেলে অপবিত্র শরীর ত্যাগ করে চলে যেতে হয়। পবিত্র দুনিয়া
স্থাপন হচ্ছে। বাকি আত্মারা সুইট হোমে চলে যাবে। এটাই স্মরণে রাখা উচিত।
বাবাকে স্মরণ করার সাথে-সাথে ঘরকেও অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। কেননা এখন ঘরে ফিরে যেতে
হবে, ঘরেই বাবাকে স্মরণ করতে হবে। যদিও তোমরা জানো বাবা ব্রহ্মা তনে এসে আমাদের
শোনাচ্ছেন। তাই বুদ্ধি পরমধাম সুইট হোম থেকে বিছিন্ন হওয়া উচিত নয়। টিচার ঘর ছেড়ে
তোমাদের পড়াতে আসেন । পড়াশোনা করিয়ে তারপর অনেক দূরে চলে যান। সেকেন্ডেই যেখানে খুশি
যাওয়া যায়। আত্মা কত ছোট বিন্দু। অবাক হওয়ারই তো কথা । বাবা এসে আত্মার জ্ঞান
প্রদান করেছেন । তোমরা জান স্বর্গে কোনও দুর্গন্ধময় জিনিস থাকে না, যার মাধ্যমে হাত-পা
অথবা পোশাক ইত্যাদি ময়লা হবে। দেবতাদের পোশাক কত চমৎকার । ধোয়ার কোনও প্রয়োজন পড়ে
না। এসব দেখেও কতই না খুশি হওয়া উচিত। আত্মা জানে ভবিষ্যতে ২১ জন্ম আমি এমনই হব।
এটাই দেখতে থাকা উচিত। এই চিত্র সবার কাছেই থাকা উচিত। অতীব খুশি হওয়া উচিত - বাবা
আমাকে এমন (দেবতা) বানাচ্ছেন । এমন বাবার বাচ্চা আমরা, তারপরও কেন কান্নাকাটি করি !
আমাদের তো কোনো চিন্তাই থাকা উচিত না । দেবতাদের মন্দিরে গিয়ে মহিমা করে - সর্বগুণ
সম্পন্ন ....অচ্যুতম্ কেশবম্... কত নাম বলে থাকে। এইসব শাস্ত্রে লেখা আছে যা স্মরণ
করে। শাস্ত্রে কে লিখেছে? ব্যাসদেব । কেউ নতুন-নতুনও তৈরি করে থাকে। গ্রন্থ সাহেব
প্রথমে অনেক ছোট ছিল হাতে লেখা। এখন তো কত বড়-বড় তৈরি হয়েছে। নিশ্চয়ই এডিশন করেছে।
গুরু নানক তো আসেন ধর্ম স্থাপন করতে। কিন্তু জ্ঞান প্রদানকারী তো একজনই। ক্রাইস্টও
আসেন শুধুমাত্র ধর্ম স্থাপন করার জন্য। যখন সবাই এসে যায় তারপর তো ফিরে যেতেই হবে।
ঘরে কে পাঠান ? ক্রাইস্ট ? না, সে তো ভিন্ন নাম-রূপে তমোপ্রধান অবস্থায় আছে । সতো,
রজো হয়ে তমোতে আসে, তাইনা।
এই সময় সবাই তমোপ্রধান। সবারই জরাজীর্ণ অবস্থা। পুণর্জন্ম নিতে নিতে এই সময় সব
ধর্মাবলম্বীরাও তমোপ্রধান হয়ে গেছে। এখন সবাইকেই অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। পুনরায় চক্র
ঘুরবে । প্রথমে নতুন ধর্মই প্রয়োজন যা সত্য যুগে ছিল । বাবাই এসে আদি সনাতন
দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করেন। তারপর আবার বিনাশ হবে। স্থাপনা, বিনাশ তারপর পালনা।
সত্যযুগে একটাই ধর্ম হবে। এই স্মৃতি আসে তাইনা। সম্পূর্ণ চক্র স্মৃতিতে আনতে হবে।
এখন আমরা ৮৪ চক্র সম্পূর্ণ করে ঘরে ফিরে যাব । তোমরা চলতে -ফিরতে স্বদর্শন চক্রধারী
হয়ে উঠেছ। লৌকিকে বলে কৃষ্ণের স্বদর্শন চক্র ছিল, যা দিয়ে সবাইকে মেরেছে । অকাসুর
বকাসুরের চিত্র দেখানো হয়েছে। কিন্তু এমন কোনো ঘটনা নেই।
বাচ্চারা, তোমাদের এখন স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে থাকতে হবে। কেননা স্বদর্শন চক্র
দ্বারাই তোমাদের পাপ বিনষ্ট হবে। আসুরিক প্রবৃত্তি বিনষ্ট হবে। দেবতা আর অসুরের
লড়াই তো হতে পারে না। অসুর হলো কলিযুগে, দেবতারা সত্যযুগে । মাঝখানে সঙ্গম যুগ।
শাস্ত্র হলো ভক্তি মার্গের জন্য। সেখানে জ্ঞানের বিন্দুবিসর্গও নেই । সবার জন্য
একজনই জ্ঞানের সাগর বাবা। বাবা ছাড়া কোনও আত্মা পবিত্র হয়ে ফিরে যেতে পারবে না।
সকলকে অবশ্যই নিজের নিজের পার্ট প্লে করতে হবে। সুতরাং এখন নিজের ৮৪ চক্রকে স্মরণ
করতে হবে। আমরা এখন সত্যযুগে নতুন জন্মে যেতে চলেছি। এমন জন্ম আর কখনোই পাওয়া যাবে
না। শিববাবা তারপর ব্রহ্মা বাবা। লৌকিক (বাবা), পারলৌকিক আর ইনি হলেন অলৌকিক বাবা।
এই সময়েরই কথা যাকে অলৌকিক বলা হয়। তোমরা বাচ্চারাই শিববাবাকে স্মরণ করে থাক।
ব্রহ্মাকে নয় । যদিও ব্রহ্মা মন্দিরে গিয়ে মানুষ পূজা করে, তবে সেটাও তখন, যখন
সূক্ষ্মবতনে সম্পূর্ণ অব্যক্ত অবস্থায় বিরাজ করেন । শরীরধারী পূজার যোগ্য নয় । তখন
সে হল মানুষ, তাইনা। মানুষের পূজা হয়না। ব্রহ্মার দাড়ি দেখানো হয়েছে, তাতেই বোঝা
যায় ইনি কোথাকার। দেবতাদের দাড়ি হয়না। এইসব বিষয়েই বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে। তোমাদের
নাম প্রসিদ্ধ, সেইজন্যই তোমাদের মন্দিরও তৈরি হয়েছে। সোমনাথ মন্দির কত উচ্চ থেকে
উচ্চ। সোমরস পান করেছিল তারপর কি হলো? তারপর দিলওয়ারা মন্দিরকেও দেখো । মন্দির হুবহু
স্মরণিক হিসেবে নির্মিত হয়েছে। নিচে তোমরা বসে তপস্যা করছো, উপরে স্বর্গ। মানুষ মনে
করেছে স্বর্গ উপরে । মন্দিরের নিচে স্বর্গ কি করে নির্মাণ করবে ! সেইজন্যই উপরের
ছাদে দেখানো হয়েছে। নির্মাণকারীরা কেউ-ই বোঝেনি এ বিষয়ে । কোটিপতি যারা তাদের বোঝাতে
হবে এই বিষয়ে। তোমরা এখন জ্ঞান পেয়েছ, সুতরাং অবশ্যই বোঝাতে পারবে । আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
ভিতরের আসুরিক প্রবৃত্তিকে সমাপ্ত করতে চলতে-ফিরতে স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে থাকতে হবে।
সম্পূর্ণ চক্রকে স্মৃতিতে আনতে হবে।
২) বাবাকে স্মরণ করার
সাথে-সাথে বুদ্ধি যেন পরমধাম ঘরেও যুক্ত থাকে। বাবা যে স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন
তা স্মরণ করে নিজের কল্যাণ করতে হবে।
বরদান:-
সর্বগুণ সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে কোনও এক বিশেষত্বে বিশেষ প্রভাবশালী ভব
যেরকম ডক্টরস্
জেনারেল রোগ নিরাময় করার নলেজ তো জানেই কিন্তু সাথে সাথে কোনও এক বিষয়ের বিশেষ নলেজে
সুপ্রসিদ্ধ হয়ে যায়, এইরকম তোমাদেরকেও সর্বগুণ সম্পন্ন হতেই হবে, তারপরও এক
বিশেষত্বকে বিশেষ রূপে অনুভব করে, সেবাতে প্রয়োগ করে এগিয়ে যেতে হবে। যেরকম
সরস্বতীকে বিদ্যার দেবী, লক্ষ্মীকে ধনের দেবী বলে পুজা করে। এইরকম তোমাদের মধ্যে
সর্বগুণ, সর্বশক্তিগুলি থাকা স্বত্ত্বেও একটা বিশেষত্বে বিশেষ রিসার্চ করে নিজেকে
প্রভাবশালী বানাও।
স্লোগান:-
বিকাররূপী সাপগুলিকে সহজযোগের শয্যা বানিয়ে দাও, তাহলে সদা নিশ্চিন্ত থাকবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের অনুভবী হও
যখন মনই বাবার তাহলে
আবার মন কিভাবে লাগাবো! প্রেম কিভাবে করবো! এইসব প্রশ্নই উঠতে পারে না, কেননা সদা
লাভলীন থাকো, প্রেম স্বরূপ, মাস্টার প্রেমের সাগর হয়ে গেছো তো প্রেম করতে হবে না,
প্রেমের স্বরূপ হয়ে গেছো। যত যত জ্ঞান সূর্যের কিরণ বা প্রকাশ বৃদ্ধি পাবে, ততই বেশী
প্রেমের ঢেউ আছড়ে পরবে।