13.08.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"অকাল মূর্তি বাবার চলাফেরা-বলার আসন হলো এটি (ব্রহ্মা) তিনি যখন ব্রহ্মার মধ্যে আসেন, তখন তোমাদের মতো ব্রাহ্মণদের রচনা করেন"

প্রশ্নঃ -
বুদ্ধিমান বাচ্চারা কোন্ রহস্যকে বুঝে অন্যদেরও ঠিক মতো করে বোঝাতে পারে?

উত্তরঃ  
ব্রহ্মা কে? আর তিনি ব্রহ্মা তথা বিষ্ণু কিভাবে হন। প্রজাপিতা ব্রহ্মা এখানে আছেন, তিনি কোনো দেবতা নন। ব্রহ্মাই ব্রাহ্মণদের দ্বারা জ্ঞান যজ্ঞ রচনা করেছেন। এই সমস্ত রহস্য বুদ্ধিমান বাচ্চারাই বুঝে অন্যদেরও বোঝাতে পারে। ঘোড়সওয়ার আর পেয়াদা তো এতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যাবে।

গীতঃ-
ওম্ নমঃ শিবায়...

ওম্ শান্তি ।
ভক্তিতেও সেই এক-এর মহিমা করা হয় । মহিমা তো গাওয়া হয়, তাই না, কিন্তু না তাঁকে জানে, না তাঁর যথার্থ পরিচয় জানে । যদি যথার্থ মহিমা জানতো তাহলে অবশ্যই বর্ণনা করতো । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, উঁচুর থেকেও উঁচু হলেন ভগবান । মুখ্য চিত্র হলো তাঁরই । ব্রহ্মার সন্তান তো থাকবে, তাই না । তোমরা সবাই হলে ব্রাহ্মণ । ব্রহ্মাকেও ব্রাহ্মণরাই জানবে, আর কেউই জানে না, তাই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায় । ইনি কিভাবে ব্রহ্মা হতে পারে । ব্রহ্মাকে তো সূক্ষ্ম বতনবাসী দেখানো হয়েছে । এখন প্রজাপিতা তো সূক্ষ্ম বতনে থাকতে পারেন না । ওখানে তো কোনো রচনা হয় না । এই নিয়ে তোমাদের সঙ্গে অনেক বাদ - বিবাদও করে । ওদের বোঝা উচিত যে - ব্রহ্মা আর ব্রাহ্মণ আছে, তাই সঠিক, তাই না । খ্রাইস্ট থেকে যেমন খ্রীস্টান শব্দটি এসেছে। বুদ্ধ থেকে বৌদ্ধ আবার ইব্রাহিম থেকে ইসলাম । তেমনই প্রজাপিতা ব্রহ্মার থেকে ব্রাহ্মণরা হলো প্রসিদ্ধ । আদি দেব হলেন ব্রহ্মা । বাস্তবে ব্রহ্মাকে দেবতা বলতে পারো না । এও ভুল । যারা নিজেদের ব্রাহ্মণ বলে পরিচয় দেয়, তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিত যে, ব্রহ্মা কোথা থেকে এলেন? তিনি কার রচনা ? ব্রহ্মাকে কে ক্রিয়েট করেছে? একথা কেউই বলতে পারবে না, জানেই না । এও তোমরাই জানো যে - শিববাবার যে রথ, যাতে তিনি প্রবেশ করেন । ইনি হলেনই সেই আত্মা, যিনি কৃষ্ণ প্রিন্স হয়েছিলেন । ৮৪ জন্মের পরে ইনিই আবার ব্রহ্মা হন । জন্মপত্রীর নাম তো এনার আলাদাই হবে, কেননা ইনি তো মনুষ্য, তাই না । তারপর এনার মধ্যে যখন বাবা প্রবেশ করেন, তখন ব্রহ্মা নাম রেখে দেন । এও বাচ্চারা জানে যে - ওই ব্রহ্মাই হলো বিষ্ণুর রূপ । নারায়ণ তো তৈরী হন, তাই না । ৮৪ জন্মের অন্তিমে তো সাধারণ রথ হবেন, তাই না । এটা (শরীর) হলো সব আত্মাদেরই রথ । অকাল মূর্তির চলন্ত আসন, এখানে বসেই তিনি বলেন । শিখরা আবার একে আসন (তখ্ত ) বানিয়ে দিয়েছে । একে অকালতখ্ত বলা হয় । এ তো সবই অকালতখ্ত । আত্মারা সব অকালমূর্ত । উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবানের এই রথ তো চাই, তাই না । এই রথে প্রবেশ করে তিনি এই জ্ঞান দেন । তাঁকেই নলেজফুল বলা হয় । তিনি রচনার আদি, মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান দেন । নলেজফুলের অর্থ কোনো অন্তর্যামী বা 'জানি জাননহার' নয় । সর্বব্যাপীর অর্থ আলাদা, 'জানি জানানহারের' অর্থ আলাদা । মানুষ তো সবকিছু মিলিয়ে যা মনে হয় তাই বলে দেয় । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে, আমরা সব ব্রাহ্মণরাই ব্রহ্মার সন্তান । আমাদের কুল সবথেকে উচ্চ । ওরা তো দেবতাদের উচ্চ রাখে, কেননা সত্যযুগ আদিতে দেবতারা ছিলেন । প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান ব্রাহ্মণ হয় - একথা বাচ্চারা, তোমরা ছাড়া আর কেউই জানে না । তারা কিভাবে জানবে? যেখানে তারা ধরে নেয় যে ব্রহ্মা সূক্ষ্ম বতনে থাকে । সেইসব জাগতিক ব্রাহ্মণ হলো আলাদা, যারা পূজাপাঠ করে, শ্রাদ্ধভোজের নিমন্ত্রণ খায় । তোমরা তো আর ভোজের নিমন্ত্রণ ইত্যাদি খাও না । ব্রহ্মার রহস্য এখন খুব ভালোভাবে বোঝাতে হয় । তোমরা বলো যে, অন্য সব বিষয় ত্যাগ করে, বাবা, যার দ্বারা পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে, প্রথমে তো তাঁকে স্মরণ করো । তারপর এইসব বিষয়ও বুঝে যাবে । অল্প একটুতেই সংশয় এলেই তখন বাবাকে ছেড়ে দেয় । প্রথম মুখ্য কথা হলো অল্ফ (আল্লাহ) আর বে (বাদশাহী )। বাবা বলেন মামেকম্ স্মরণ করো । আমি তো অবশ্যই কারোর মধ্যে আসবো, তাই না । তাঁর নামও তো থাকা উচিত । আমি এসে তাঁকে রচনা করি । ব্রহ্মার বিষয়ে বোঝানোর জন্য তোমাদের অনেক বুদ্ধির প্রয়োজন । পেয়াদা, ঘোড়সওয়ার তো দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায় । অবস্থা অনুসারে তো বোঝানো হয়, তাই না । প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো এখানেই আছে । ব্রাহ্মণের দ্বারা জ্ঞান যজ্ঞের রচনা করেন, তাই ব্রাহ্মণ তো অবশ্যই চাই, তাই না । প্রজাপিতা ব্রহ্মাও তো এখানেই প্রয়োজন, যার দ্বারা ব্রাহ্মণ তৈরী হতে পারে । ব্রাহ্মণরা তো বলে যে, আমরা ব্রহ্মার সন্তান । তারা মনে করে, আমাদের কুল পরম্পরা ধরে চলে আসছে, কিন্তু ব্রহ্মা কবে ছিলো, তা কেউই জানে না । এখন তোমরা হলে ব্রাহ্মণ । ব্রাহ্মণ তারাই, যারা ব্রহ্মার সন্তান । ওরা তো বাবার অক্যুপেশনকেই জানে না । ভারতে প্রথমে ব্রাহ্মণরাই থাকে । ব্রাহ্মণদের হলো উচ্চ থেকেও উচ্চ কুল । জাগতিক ব্রাহ্মণরাও মনে করে যে, আমাদের কুল অবশ্যই ব্রহ্মার থেকেই এসেছে, কিন্তু তা কিভাবে এবং কখন.... তা বর্ণনা করতে পারে না । তোমরা জানো যে, প্রজাপিতা ব্রহ্মাই ব্রাহ্মণদের রচনা করেন । যেই ব্রাহ্মণদেরই পুনরায় দেবতা হতে হবে । বাবা এসেই ব্রাহ্মণদের পড়ান । ব্রাহ্মণদের ডিনায়েস্টি (রাজত্ব কাল) নেই । ব্রাহ্মণদের হলো কুল, ডিনায়েস্টি তখনই বলা হবে, যখন রাজা - রানী হবে, যেমন সূর্যবংশী ডিনায়েস্টি । তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের মধ্যে তো আর রাজা হয় না । ওরা যে বলে থাকে, কৌরব আর পাণ্ডবদের রাজ্য ছিলো, দুইই হলো রং । এই দুইয়েরই তো কোনো রাজত্ব থাকে না । প্রজার প্রজার উপরে রাজত্ব, তাদের রাজধানী বলা হবে না । মুকুট তো নেই । বাবা বুঝিয়েছেন যে - প্রথমে ডবল মুকুট ভারতেই ছিলো, তারপর সিঙ্গেল মুকুট । এই সময় তো কোনো মুকুটই নেই । এও খুব ভালোভাবে প্রমাণ দিয়ে বলতে হবে, যারা সম্পূর্ণ সুন্দর ধারণার হবে, তারা খুব ভালোভাবে বোঝাতে পারবে । ব্রহ্মার সম্বন্ধেই খুব বেশী করে বোঝাতে হয় । বিষ্ণুকেও কেউ জানে না । এও বোঝাতে হয় । বৈকুণ্ঠকে বিষ্ণুপুরী বলা হয়, অর্থাৎ সেখানে লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজ্য ছিলো । কৃষ্ণ প্রিন্স হলে তো বলবে, তাই না যে - আমার বাবা রাজা ছিল । এমন নয় যে, কৃষ্ণের বাবা রাজা ছিলেন না । কৃষ্ণকে প্রিন্স বলা হয়, তাহলে অবশ্যই তাঁর রাজ পরিবারে জন্ম হয়েছিলো । বিত্তবানের ঘরে জন্ম হলে তাঁকে তো প্রিন্স বলবেই না । রাজার পদ আর বিত্তবানের পদের মধ্যে রাত - দিনের তফাৎ হয়ে যায় । কৃষ্ণের বাবা যে রাজা, তার অত নাম নেই । কৃষ্ণের কতো নাম । বাবার উচ্চ পদ বলা হবে না । সেই পদ হলো সেকেণ্ড ক্লাসের পদ, যিনি কৃষ্ণকে জন্ম দেওয়ার নিমিত্ত হন । এমন নয় যে কৃষ্ণের আত্মার থেকেও তিনি বেশী পড়েছেন । তা নয় । কৃষ্ণই আবার নারায়ণ হন । বাকি বাবার নাম লুপ্ত হয়ে যায় । তিনিও অবশ্যই ব্রাহ্মণ কিন্তু পড়াতে কৃষ্ণের থেকে কম । কৃষ্ণের আত্মা তাঁর বাবার থেকে উচ্চ পড়া পড়েছিলেন, তাই তো তাঁর নামের এতো মহিমা হয় । কৃষ্ণের বাবা কে ছিলেন - একথা কেউই জানে না । এরপরে জানতে পারবে । এখান থেকেই তো তাঁকে তৈরী হতে হবে । রাধারও তো মা - বাবা থাকবেন, তাই না, কিন্তু তাঁদের থেকে রাধার নামের মহিমা বেশী। কারণ মা - বাবা কম পড়েছিলেন । রাধার নাম তাদের থেকে উচ্চ হয়ে যায় । এ'সব হলো বাচ্চাদের বোঝানোর জন্য ডিটেইল বিষয় । সমস্তকিছুই এই পড়ার উপরে নির্ভর করে । ব্রহ্মার সম্বন্ধেও বোঝানোর মতো বুদ্ধি চাই । তিনিই হলেন কৃষ্ণ, যাঁর আত্মা ৮৪ জন্ম ভোগ করে । তোমরাও ৮৪ জন্মগ্রহণ করো । সবাই তো আর একসঙ্গে আসবে না । যারা এই পড়ায় প্রথমের দিকে থাকে, তারাই প্রথমে আসবে । নম্বরের ক্রমানুসারে তো আসে, তাই না । এ অতি সূক্ষ্ম কথা । কম বুদ্ধির যারা, তারা তো ধারণা করতেই পারে না । নম্বরের ক্রমানুসারে তারা যায় । তোমরা নম্বরের ক্রমানুসারে ট্রান্সফার হয়ে যাও । যারা পরের দিকে যাবে, তাদের কতো বড় ক্যু (লাইন) । নম্বরের ক্রম অনুযায়ী সবাই নিজের নিজের স্থানে গিয়ে নিবাস করবে । সকলের স্থানই নিদিষ্ট আছে । এ অনেক বড়ই ওয়ান্ডারফুল খেলা, কিন্তু তা কেউই বোঝে না । একে বলা হয় কাঁটার জঙ্গল । এখানে সবাই একে অপরকে দুঃখ দিতেই থাকে । ওখানে তো স্বাভাবিক ভাবেই সুখ থাকে । এখানে তো নকল সুখ । প্রকৃত সুখ এক বাবাই দেন । এখানে হলো কাক বিষ্ঠার সমান সুখ । এখানে দিনে দিনে মানুষ তমোপ্রধান হয়ে যায় । এখানে কতো দুঃখ । বলতে থাকে - বাবা, মায়ার তুফান অনেক আসে । মায়া বিদ্ধস্ত করে দেয়, অনেক দুঃখের অনুভব হয় । সুখদাতা বাবার বাচ্চা হয়েও যদি দুঃখের অনুভব হয়, তখন বাবা বলেন - বাচ্চারা, এ তোমাদের অনেক বড় কর্মের ভোগ । বাবাকে যখন পেয়েছো তখন দুঃখের ফিলিং আসা উচিত নয় । যে পুরানো কর্মভোগ আছে, তা যোগবলের দ্বারা শোধ করো । যদি যোগবল না থাকে তাহলে আছাড় খেয়ে শোধ করতে হবে । সাজা খেয়ে পদ পাওয়া তো ভালো কথা নয় । তোমাদের পুরুষার্থ করা উচিত না হলে বিচার সভা বসবে । প্রজা তো অনেকই হবে । এ তো ড্রামা অনুসারে সকলে গর্ভজেলে অনেক সাজা ভোগ করে । আত্মারা অনেক বিভ্রান্ত হতে থাকে । কোনো - কোনো আত্মা অনেক ক্ষতি করে -- যখন কারোর মধ্যে অশুদ্ধ আত্মার প্রবেশ হয়, তখন কতো হয়রান হয় । নতুন দুনিয়াতে এমন কথা হয় না । এখন তোমরা নতুন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করো । ওখানে গিয়ে তোমাদের নতুন নতুন মহল বানাতে হবে । তোমরা রাজার ঘরে জন্মগ্রহণ করো, যেমন কৃষ্ণ রাজার ঘরে জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু এতো মহল ইত্যাদি প্রথম থেকে থাকেই না । ও তো পরে বানাতে হয় । কে রচনা করে - যার কাছে জন্ম নেয় । এমন গায়নও আছে যে - রাজার ঘরে জন্ম হয় । কি হবে, তা তো পরের দিকে দেখতে হবে । এখন তো বাবা বলবেনই না । সে তো তাহলে নকল নাটক হয়ে যাবে, তাই তিনি কিছুই বলেন না । ড্রামাতে এই বলে দেওয়ার কথা লিপিবদ্ধ নেই । বাবা বলেন যে, আমিও পার্টধারী । ভবিষ্যতের কথা যদি পূর্ব থেকেই জানতাম, তাহলে অনেক কিছুই বলে দিতাম । বাবা অন্তর্যামী হলে প্রথম থেকেই বলে দিতেন । বাবা বলেন - এই ড্রামাতে যা কিছু হয়, তা সাক্ষী হয়ে দেখতে থাকো, আর এর সঙ্গে সঙ্গে স্মরণের যাত্রায় মস্ত থাকো । এতেই ফেল করে যায় । জ্ঞান কখনোই কমবেশী হয় না । এই স্মরণের যাত্রাই কখনো কম, কখনো আবার বেশী হয় । জ্ঞান তো যা পেয়েছো, তাই আছে । এই স্মরণের যাত্রায় কখনো উৎসাহ থাকে, কখনো আবার ঢিলেমি এসে যায় । যাত্রা নীচ - উপর হতে থাকে । জ্ঞানে তো তোমরা সিঁড়িতে চড়ে যাও না । জ্ঞানের যাত্রা বলা হয় না । যাত্রা হলো স্মরণের । বাবা বলেন যে, স্মরণে থাকলে তোমরা সেফটি থাকবে । দেহ অভিমানে আসলে তোমরা ধোকা খেয়ে যাও । বিকর্ম করে দাও । কাম হলো মহাশত্রু । এতে ফেল হয়ে যায় । ক্রোধ আদি সম্বন্ধে বাবা এতো কথা বলেন না । জ্ঞানে তো হলো এক সেকেণ্ডে জীবনমুক্তি, না হলে বলে যে, সাগরকে কালি বানাও তাও এই জ্ঞান সম্পূর্ণ করা যাবে না । না হলে বলে, কেবল অল্ফকে স্মরণ করো । স্মরণ করা কাকে বলা হয়, এ তো জানেই না । কেবল বলতে থাকে, কলিযুগ থেকে আমাদের সত্যযুগে নিয়ে চলো । পুরানো দুনিয়াতে কেবল দুঃখ আছে । তোমরা দেখো যে বর্ষাকালে কতো বাড়ী ভেঙ্গে পড়ে যায়, কতো বাড়ী ডুবে যায় । বর্ষা ইত্যাদি এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও হবে । এইসব হঠাৎই হতে থাকবে । মানুষ এখন কুম্ভকর্ণের নিদ্রায় নিদ্রিত আছে । বিনাশের সময় এলে তখন আর কি করতে পারবে । তখন সব মারা যাবে । এই ধরিত্রীও খুব জোরে দুলতে থাকবে । ঝড়, বর্ষা ইত্যাদি সব হয় । বম্বও ফেলে, কিন্তু এখানে অতিরিক্ত হলো সিভিলওয়ার....রক্তের নদী বইবে এমন বলা আছে । এখানে মহামারী হয় । একে অপরের উপর কেস করতে থাকে । তাই অবশ্যই এরা লড়াই করবে । এখানে সবাই গরীব, তোমরা হলে ধনীর ( বাবার ) । তোমাদের কোনো লড়াই আদি করতে হবে না । ব্রাহ্মণ হওয়াতে তোমরা ধনীর (বাবার ) হয়ে গেছো । ধনী বাবাকে বা পতিকে বলা হয় । শিববাবা তো হলেন পতির পতি । বিয়ের আশীর্বাদ হয়ে গেলে তখন বলে, আমরা এমন পতির সঙ্গে কবে মিলিত হবো? আত্মারা বলে - শিববাবা, আমাদের তো তোমার সঙ্গে বিয়ের আশীর্বাদ হয়ে গেছে । এখন আমরা তোমার সঙ্গে কিভাবে মিলিত হবো? কেউ কেউ তো সত্যি কথা লেখে, আবার কেউ কেউ অনেক কথা লুকিয়ে রাখে । সত্যি কথা লেখে না যে, বাবা আমাদের দ্বারা এই ভুল হয়ে গেছে । ক্ষমা করো । কেউ যদি বিকারে পড়ে যায়, তাহলে তার বুদ্ধিতে ধারণা হতে পারবে না । বাবা বলেন যে, তোমরা যদি এমন কড়া ভুল করো তাহলে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে । আমি তোমাদের সুন্দর (পবিত্র) বানাতে এসেছি, তাহলে তোমরা কিভাবে মুখ কালো করো? তাহলে তো তোমরা তখন স্বর্গে এলেও পাই - পয়সার পদ পাবে । এখন তো রাজধানী স্থাপন হচ্ছে, তাই না । কেউ কেউ তো হেরে গিয়ে জন্ম - জন্মান্তরের জন্য পদভ্রষ্ট হয়ে যায় । তখন বাবা বলবেন, তোমরা বাবার কাছে এই পদ প্রাপ্ত করতে এসেছো, বাবা এতো উচ্চ হয়েছেন, তাহলে আমরা বাচ্চারা প্রজা হবোই না । বাবা সিংহাসনে বসবেন, আর বাচ্চারা দাস - দাসী হবে, এ কতো লজ্জার কথা । পরের দিকে তোমাদের সব সাক্ষাৎকার হবে । তখন অনেক অনুতাপ করবে । নাটক এমনই বানানো আছে, সন্ন্যাসীরাও যখন ব্রাহ্মচর্যতে থাকে তখন সমস্ত বিকারী মানুষ তাঁদের সামনে মাথা নত করে । পবিত্রতার অনেক মান । কারোর যদি ভাগ্যে না থাকে তাহলে বাবা পড়ালেও বারে বারে গাফিলতি বা ভুল করে ফেলে । বাবাকে স্মরণই করে না । অনেক বিকর্ম তৈরী হয়ে যায় ।

বাচ্চারা, তোমাদের উপর এখন বৃহস্পতির দশা । এর থেকে উঁচু দশা আর কিছুই হয় না । বাচ্চারা, তোমাদের উপরে এই দশা চক্র ঘুরপাক খেতে থাকে । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই ড্রামার প্রতিটি সীন সাক্ষী হয়ে দেখতে হবে, এক বাবার স্মরণে মজে থাকতে হবে । স্মরণের যাত্রায় কখনো যেন উৎসাহ কম না হয় ।

২ ) পড়াশোনাতে কখনো গাফিলতি ক'রো না, নিজের উচ্চ ভাগ্য বানানোর জন্য অবশ্যই পবিত্র হতে হবে । হেরে গিয়ে জন্ম - জন্মান্তরের জন্য পদভ্রষ্ট হয়ো না ।

বরদান:-
সত্যিকারের সেবার দ্বারা অবিনাশী, অলৌকিক খুশীর সাগরে ভাসতে থাকা ভাগ্যবান আত্মা ভব

যে বাচ্চারা সেবা করে বাপদাদা আর নিমিত্ত বড়দের স্নেহের আশীর্বাদ প্রাপ্ত করে তারা অন্তর থেকে অলৌকিক, আত্মিক খুশী অনুভব করে। তারা সেবার দ্বারা আন্তরিক খুশী, আত্মিক আনন্দ, অসীম প্রাপ্তির অনুভব করে সদা খুশীর সাগরে ভাসতে থাকে। সত্যিকারের সেবা সকলের স্নেহ, সকলের দ্বারা অবিনাশী সম্মান আর খুশীর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হওয়ার সৌভাগ্যের, শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের অনুভব করায়। যারা সদা খুশীতে থাকে তারাই হল ভাগ্যবান।

স্লোগান:-
সদা হাসিখুশী বা আকর্ষণমুর্তি হওয়ার জন্য সন্তুষ্টমণী হও।

অব্যক্ত ঈশারা :- সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের অনুভবী হও

কর্মে, বাণীতে, সম্পর্ক বা সম্বন্ধে লভ্ আর স্মৃতি বা স্থিতিতে লভলীন থাকতে হবে, যে যত লাভলী হবে, সে ততই লবলীন থাকতে পারবে। এই লভলীন স্থিতিকে মনুষ্যাত্মারা লীন হয়ে যাওয়ার কথা বলে দিয়েছে। বাবার প্রতি ভালোবাসা সমাপ্ত করে কেবল লীন শব্দকে বলে দিয়েছে। তোমরা বাচ্চারা বাবার লভে লভলীন থাকলে তো অন্যদেরকেও সহজ নিজ সমান বা বাবার সমান বানাতে পারবে।