14.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
বড়-বড় স্থানগুলিতে বড়-বড় দোকান (সেন্টার) খোলো, প্ল্যান বানাও, মিটিং করো, বিচার
বিবেচনা করতে থাকো যে কিভাবে সেবা বাড়ানো যায়”
প্রশ্নঃ -
স্থুল জগতের
সেভেন ওয়ান্ডর্সের বিষয়ে তো সবাই জানে, কিন্তু সবথেকে বড় ওয়ান্ডার কোনটি, যেটা
কেবলমাত্র বাচ্চারা, তোমরাই জানো?
উত্তরঃ
সবথেকে বড়
ওয়ান্ডার তো হলো এটাই যে, সকলের সদ্গতি দাতা বাবা এসে এখন পড়াচ্ছেন। এই আশ্চর্য
পূর্ণ কথা সবাইকে শোনানোর জন্য তোমাদেরকে নিজেদের-নিজেদের দোকানে চিত্র প্রদর্শনী
করতে হয়, কেননা মানুষ আকর্ষনীয় চিত্র-প্রদর্শনী দেখেই এখানে আসে। তাই সব থেকে ভালো
আর বড় দোকান ক্যাপিটালে হওয়া চাই, যাতে সবাই এসে বুঝতে পারে।
গীতঃ-
মরণও তোমার
পথে(গলি)/ জীবনও তোমারই পথে...
ওম্ শান্তি ।
শিব ভগবানুবাচ।
রুদ্র ভগবানুবাচও বলা যেতে পারে। কেননা শিব মালা গাওয়া হয় না ! যেটা মানুষেরা
ভক্তি মার্গে অনেক বার জপ করেছে, তার নাম রেখে দিয়েছে রুদ্র মালা। কথা তো একই,
কিন্তু সঠিক অর্থে - শিববাবা পড়াচ্ছেন, তাই তাঁর নামই হওয়া উচিত, কিন্তু রুদ্র
মালা নাম চলে আসছে। তাই সেটাও বুঝতে হবে। শিব আর রুদ্রের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা ভালোভাবে পুরুষার্থ করে বাবার মালার নিকটে আসবো।
এই দৃষ্টান্তও বলা হয়ে থাকে। যেরকম বাচ্চারা দৌড় প্রতিযোগিতা করে লক্ষ্য-বিন্দু
পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় ফিরে এসে টিচারের কাছে এসে দাঁড়ায়। বাচ্চারা, তোমরাও এটা
জানো যে, আমরা ৮৪ বার জন্ম-মৃত্যুর চক্রে এসেছি। এখন সবার প্রথমে গিয়ে মালার দানা
হতে হবে। সেটা তো হলো শরীর ধারণকারী স্টুডেন্টদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আর এটা হলো
আত্মিক প্রতিযোগিতা। তোমরা তো সেই দৌড়ের প্রতিযোগিতা করতে পারো না। এখানে তো হলো
আত্মাদের কথা। আত্মা তো বৃদ্ধ যুবক বা ছোট-বড় হয়না। আত্মা তো একই রকম হয়।
আত্মাকেই নিজের বাবাকে স্মরণ করতে হয়, এতে কোনও পরিশ্রমের কথা নেই। যদিও পড়াশোনার
মধ্যে অলসতা এসে যায় কিন্তু এতে পরিশ্রমের কি আছে! কিছুই নেই। সকল আত্মারাই হলো
ভাই-ভাই। সেখানকার দৌড় প্রতিযোগিতাতে তো অল্প বয়সীরা অতি দ্রুত গতিতে দৌড়ায়।
এখানে তো সেসব কোনো ব্যাপার নেই। বাচ্চারা তোমাদের মধ্যেই এই প্রতিযোগিতা হয় রুদ্র
মালার দানাতে আসার জন্য। বুদ্ধিতে আছে যে, আমাদের আত্মাদেরও ঝাড় আছে। সেটা তো হল
সমস্ত মনুষ্যাত্মাদের জন্য শিব বাবার মালা। এরকম নয় যে, কেবল ১০৮ বা ১৬ হাজার ১০৮
দানার মালা হবে। না। যত মানুষ আছে, সকলের মালা। বাচ্চারা মনে করে যে - নম্বরের
ক্রমানুসারে প্রত্যেকে নিজের নিজের ধর্মে গিয়ে বিরাজমান হবে, যারা পুনরায়
কল্প-কল্পে সেই জায়গাতেই আসতে থাকবে। এটাও তো আশ্চর্যের বিষয়, তাই না! দুনিয়ার
মানুষ তো এই সমস্ত কথাগুলি জানে না। তোমাদের মধ্যেও যার বুদ্ধি বিশাল হবে, সে এই
কথাগুলিকে জানতে পারবে। বাচ্চাদের বুদ্ধিতে এই চিন্তনই যেন চলে যে, আমি সবাইকে সত্য
রাস্তা কিভাবে বলবো। এ হলো বিষ্ণুর মালা। প্রথম থেকে বংশতালিকা অনুসারে শুরু হয়।
অনেক শাখা-প্রশাখাও থাকে, তাই না! সেখানে ছোটাে ছোটো আত্মা থাকে। এখানে হল মানুষের
কথা। (পরমধামে) সমস্ত আত্মারা অ্যাক্যুরেট সেখানে দাঁড়িয়ে থাকবে। এ হলো বড়ই
ওয়ান্ডারফুল কথা, তাই না! মানুষ তো এখানকার স্থুল জগতের ওয়ান্ডার্স দেখে থাকে,
কিন্তু সেসব এমন কিছু নয়। এটাই হলো সবথেকে বড় ওয়ান্ডার যে - সকলের সদ্গতি দাতা
পরমপিতা পরমাত্মা এসে এখন পড়াচ্ছেন। কৃষ্ণকে তো সকলের সদ্গতি দাতা বলা যায় না।
তোমাদেরকে এই সমস্ত পয়েন্ট গুলিকে ধারণ করতে হবে। মূল বিষয় হলো গীতার ভগবানকে নিয়ে।
এবিষয়ে জয় হলেই ব্যস্। গীতা হলো সকল শাস্ত্রের শিরোমণি, ভগবানের মুখ নিঃসৃত বাণী।
প্রথম-প্রথম তো এই বিষয়েই চেষ্টা করতে হবে। আজকাল তো মানুষ চমৎকার এবং আকর্ষণীয়
চিত্র দেখতে পছন্দ করে, যে দোকানে খুব সুন্দর সুন্দর চিত্র প্রদর্শিত হয়, সেখানেই
মানুষ বেশী করে যায়। মনে করে যে, এখানে ভালো কিছু পাওয়া যাবে। বাচ্চারা ভয় পেয়ে যায়,
এত বড় বড় সেন্টার খুলতে গেলে তো লাখ-দু লাখ সেলামী দিতে হবে, তবে মনের মতো ঘর পাওয়া
যাবে। তাই বাবা বলছেন - একটাই দোকান হোক এবং সেটা যেন রয়্যাল হয়। বড় দোকান বড় বড়
শহরেই হয়ে থাকে। তোমাদের সব থেকে বড় দোকান হওয়া চাই ক্যাপিটালে। বাচ্চাদেরকে এই
বিষয়ে বিচার সাগর মন্থন করতে হবে যে - কিভাবে সেবা আরও বৃদ্ধি করা যায়। বড় দোকান
দেখে অনেক বড় বড় ধনী মানুষও সেখানে আসবে। বড় এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বলা কথা
খুব শীঘ্রই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম প্রথম তো এই বিষয়ে প্রচেষ্টা করতে হবে।
সেবা করার জন্য সবথেকে বড় স্থান, এমন জায়গায় বানাও, যেখানে বড় বড় উচ্চপদস্থ
মানুষেরা এসে দেখে এবং আশ্চর্যান্বিত হয় আর সেখানে বোঝানোর জন্যও ফার্স্টক্লাস
আত্মা চাই। কোনও একজন বি.কে যদি হালকাভাবে বোঝায় তাহলে তারা বুঝে যায় যে, হয়তো
সমস্ত বি. কে. রা এইরকমই হয়, এইজন্য দোকানে সেলস্ ম্যানও অত্যন্ত ভালো এবং ফার্স্ট
ক্লাস রাখতে হবে। এটাও তো একটা কারবার, তাই না! বাবা বলেন, সাহসী বাচ্চার জন্য
সাহায্যকারী হলেন বাপ-দাদা। এখানকার এই বিনাশী ধন তো কোনও কাজে আসবে না। আমাদেরকে
তো নিজের জন্য অবিনাশী উপার্জন করতে হবে, আর এর দ্বারাই অনেকের কল্যাণও হবে। যেরকম
ভাবে এই ব্রহ্মাও করেছেন। বাবার আশ্রয়ে থেকে কি কেউ না খেতে পেয়ে মরবে নাকি!
তোমরাও খাবে, এরাও খাবে। এখানে যা কিছু খাদ্য-পানীয় পাওয়া যায়, এইসব আর অন্য
কোথাও পাওয়া যায় না। এই সবকিছুই হলো বাচ্চাদের জন্য, তাই না! বাচ্চাদেরকেই
নিজেদের রাজত্ব স্থাপন করতে হবে, এর জন্য বিশাল বুদ্ধি চাই। ক্যাপিটালে যদি এই নাম
প্রচারিত হয় তাহলে সবাই বুঝতে পারবে। বলবে অবশ্যই এরা তো সত্য কথাই বলে আসছে,
বিশ্বের মালিক তো ভগবানই এসে বানাচ্ছেন। মানুষ মানুষকে বিশ্বের মালিক বানাতে পারে
না। বাবা সেবার বৃদ্ধির জন্য রায় দিচ্ছেন।
সেবার বৃদ্ধি তখনই হবে,
যখন বাচ্চারা উদারচিত্ত হবে। যে কোনও কাজ করবে, উদার মনে করো। কোনও শুভ কাজ নিজেই
করা - এটা তো খুবই ভালো কথা। বলা হয়ে থাকে যে - যে নিজেই নিজের কাজ করে, তাকে বলা
হয় দেবতা, আর যে বলার পর কাজ করে সে হল মানুষ। বলার পরও যদি না করে......। বাবা তো
হলেন দাতা, বাবা কি কাউকে বলতে পারেন যে এটা করো। এই কাজে এই পরিমাণ প্রয়োগ করো।
না। বাবা বোঝাচ্ছেন যে - বড় বড় রাজাদের হাত কখনো বন্ধ থাকে না। রাজারা সব সময়
দান করতে থাকেন। বাবা রায় দিচ্ছেন যে - সেখানে গিয়ে কি কি করতে হবে। সর্তকতাও
প্রচুর অবলম্বন করতে হবে। মায়ার ওপরে বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে কারণ প্রাপ্তি হলো
অনেক উঁচু। অন্তিম সময়ে রেজাল্ট বেরোবে, তারপর যে খুব ভালো নম্বর নিয়ে পাস হবে,
তার খুশিও অনেক হবে। অন্তিম সময়ে তো সকলের সাথেই সাক্ষাৎকার হবে, তাইনা! কিন্তু
সেই সময় তোমরা কিছুই আর করতে পারবে না! ভাগ্যে যেটা থাকবে, সেটাই প্রাপ্ত হবে।
পুরুষার্থের কথা হল আলাদা। বাবা বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন যে, বিশাল বুদ্ধি হও। এখন
তোমরা ধর্মাত্মা তৈরি হচ্ছ। দুনিয়াতে অনেক ধর্মাত্মাই এসে ঘুরে গেছেন। তাদের
নামাচারও অনেক হয়। সেই সমস্ত ধর্মাত্মারা প্রত্যেকেই মানুষ ছিল। কেউ-কেউ তো অনেক
টাকা-পয়সা একত্রিত করতে করতেই হঠাৎ শরীর ছেড়ে দেয়। তারপর সেসব ট্রাস্টি হয়ে যায়।
কোনো কোনো বাচ্চা তো আবার দেখাশোনা করতে অযোগ্য হলে, তার সব কিছু ট্রাস্টি করে দেয়।
এই সময় তো হল পাপাত্মাদের দুনিয়া। বড় বড় গুরু আদিকে দান করতে হয়। যেরকম
কাশ্মীরের মহারাজা ছিলেন, তার যা কিছু সম্পত্তি ছিল, তিনি সবকিছুই আর্য সমাজের জন্য
উইল করে দেন। যাতে তাদের ধর্মের বৃদ্ধি হয়। এখন তোমাদেরকে কি করতে হবে, কোন ধর্মকে
বৃদ্ধি করতে হবে? আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মও যে ছিলো, এটা কারোর জানা নেই। এখন
তোমরা পুনরায় সেই ধর্ম স্থাপন করছো। ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা। এখন বাচ্চাদেরকে
একেরই স্মরণে থাকতে হবে। স্মরণের শক্তির দ্বারাই তোমরা সমগ্র সৃষ্টিকে পবিত্র
বানাচ্ছো, কারন তোমাদের জন্যই তো পবিত্র সৃষ্টি চাই। এখানে তো আগুন লাগলে, তবেই
পবিত্র হবে। খারাপ জিনিসকে আগুনে পুড়েই পবিত্র বানানো হয়। এই যোগাগ্নিতে সমস্ত
অপবিত্র বস্তু পুড়ে পুনরায় নতুন তৈরি হবে। তোমরা জানো যে এটা হলো একদম ছিঃ ছিঃ
নোংরা তমোপ্রধান দুনিয়া। এটাই পুনরায় সতোপ্রধান হবে। এটাই হলো জ্ঞান যজ্ঞ, তাই
না! তোমরা হলে ব্রাহ্মণ। এটাও তোমরা জানো যে শাস্ত্রতে অনেক কথা লিখে দিয়েছে, যজ্ঞে
দক্ষ প্রজাপিতাকে দেখানো হয়েছে। আবার রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞের কথাও উল্লেখ আছে। এর
জন্যও কত কত গল্প কাহিনি বসে লিখে দিয়েছে। যজ্ঞের বর্ণনাও কায়দা অনুসারে নেই। বাবা-ই
এসে সবকিছু বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এখন বাচ্চারা তোমরাই শ্রীমত অনুসারে জ্ঞান যজ্ঞের রচনা
করছো। এটাই হলো জ্ঞান যজ্ঞ, আবার বিদ্যালয়ও বলা যায়। জ্ঞান আর যজ্ঞ দুটো শব্দ হলো
আলাদা আলাদা। যজ্ঞের মধ্যে আহুতি প্রদান করতে হয়। জ্ঞান সাগর বাবা-ই এসে যজ্ঞ রচনা
করেন। এটা হলো সবথেকে বড় যজ্ঞ, যেখানে সমগ্র পুরানো দুনিয়া স্বাহা হয়ে যায়।
তাই বাচ্চাদেরকে এখন
সেবার প্ল্যান বানাতে হবে। যদিও গ্রামে গ্রামে গিয়েও সেবা করতে হবে।তোমাদেরকে
অনেকেই বলে যে - গরীবদেরকে এই জ্ঞান দিতে হবে। তারা কেবল রায় শোনায়, নিজেরা কিছু
কাজ করে না। সেবা করে না, কেবল রায় দেয় যে, এই রকম ভাবে করো, এইরকম করলে খুব ভালো
হবে। কিন্তু আমার সময় নেই। জ্ঞান খুবই ভালো। সবাই যেন এই জ্ঞান প্রাপ্ত করতে পারে।
নিজেকে বড় মানুষ আর তোমাদেরকে ছোট মানুষ মনে করে। তোমাদেরকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
লৌকিক পড়ার সাথে সাথে এই পড়াও তোমরা পড়ছো। পড়াশোনার দ্বারাই কথা বলার কলা-কৌশল
রপ্ত হয়। তোমাদের চাল-চলনও খুব ভালো হয়ে যায়। অশিক্ষিতরা তো একদম বুদ্ধু হয়।
কিভাবে কথা বলতে হয়, তাও তারা জানে না। বড় বড় ব্যক্তিদের সাথে সর্বদা
‘আপনি-আজ্ঞে’ করে কথা বলতে হয়। এখানে তো কেউ কেউ এমনও আছে, যারা পতিকেও
‘তুমি-তুমি’ করে বলে দেয়। আপনি আজ্ঞে - এই শব্দগুলি হল রাজকীয়। বড় বড়
ব্যক্তিদের সাথে আপনি আজ্ঞে করে কথা বলতে হয়। তাই বাবা প্রথমে প্রথমে এই রায়
শোনাচ্ছেন যে - দিল্লি, যেটা পরিস্থান ছিল, পুনরায় একে পরিস্থান বানাতে হবে। তাই
দিল্লিতে সবাইকে এই সন্দেশ দিতে হবে, অ্যাডভার্টাইজমেন্টও বেসশ ভালো রকম করতে হবে।
টপিক্সও বলতে হবে, সেইজন্য টপিক্সের লিস্ট বানাও, তারপর লিখতে থাকো। বিশ্বের মধ্যে
শান্তি কিভাবে হবে, তা এখানে এসে জানুন, ২১ জন্মের জন্য নিরোগী কি করে হওয়া যায়,
এখানে এসে বুঝুন। এরকম খুশির কথা সেখানে লিখতে হবে। ২১ জন্মের জন্য নিরোগী, সত্যযুগী
ডবল মুকুটধারী হওয়ার জন্য এখানে আসুন। সত্যযুগী - শব্দটি সকল টপিক্সের মধ্যেই রাখো।
সুন্দর সুন্দর শব্দ হলে তো মানুষ দেখেই খুশি হয়ে যাবে। প্রত্যেকের ঘরে ঘরেও এইরকম
বোর্ড, চিত্র ইত্যাদি লাগাতে হবে। নিজের লৌকিক ব্যবসা যদিও করো, কিন্তু তার সাথে
সাথে এই সেবাও করতে থাকো। লৌকিক ব্যবসাতে তো সারাদিন থাকতে হয় না। উপর থেকে কেবল
দেখাশোনা করতে হয়। বাকি কাজ তো অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার-ই করে। কোনও শেঠ ব্যক্তি
যদি উদারচিত্ত হয়, তবে অ্যাসিস্ট্যান্টকেও ভালো বকশিস দিয়ে গদিতে বসিয়ে দেয়।
এখানে তো হলো অসীম জগতের সেবা। আর বাকি সবকিছুই হল লৌকিক জগতের সেবা। এই অসীম জগতে
সেবা করার জন্য কতো বিশাল বুদ্ধি হওয়া চাই! আমরা বিশ্বের ওপর জিৎ প্রাপ্ত করছি।
কালের উপরেও আমরা জয় প্রাপ্ত করে অমর হচ্ছি। এরকম-এরকম লেখা দেখে সবাই আসবে আর
বোঝার জন্যও চেষ্টা করবে। অমরলোকের মালিক তোমরা কিভাবে হতে পারবে, সেটা এখানে এসে
বুঝুন। অনেক টপিক্স-ই লেখা যেতে পারে। তোমরা যে কাউকেই বিশ্বের মালিক বানাতে পারো।
সেখানে কোনো দুঃখের নাম-গন্ধও থাকবে না। বাচ্চাদের তো এই বিষয়ে অনেক খুশি হওয়া
চাই। বাবা আমাদেরকে পুনরায় কি থেকে কি বানাতে এসেছেন! বাচ্চারা জানে যে, পুরানো
সৃষ্টি থেকেই নতুন তৈরি হবে, মৃত্যুও সামনে অপেক্ষা করছে। তোমরা এখন দেখতে পাচ্ছো
যে, বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ লাগার জন্য প্রস্তুত। বড় কোনো যুদ্ধ লেগে গেলে তো সমস্ত
খেলা-ই সমাপ্ত হয়ে যাবে। তোমরা তো এসব খুব ভালোভাবে জানো, তাই না! বাবা খুব
ভালোবাসার সাথে বলেন যে - মিষ্টি বাচ্চারা! বিশ্বের বাদশাহী তো তোমাদের জন্যই।
তোমরাই বিশ্বের মালিক ছিলে, ভারতেই তোমরা অনেক সুখ গ্রহণ করেছ। সেখানে রাবণ রাজ্য
হয়ই না। এসব চিন্তা করে অনেক খুশিতে থাকতে হবে। বাচ্চাদের নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা
করে প্ল্যান তৈরি করতে হবে। সংবাদ পত্রেও দিতে হবে। দিল্লীতে এরোপ্লেনের মাধ্যমে
আকাশ থেকে বাবার পর্চা ছড়িয়ে দিতে হবে। নিমন্ত্রণ দিতে হবে, এর জন্য বিশেষ কিছু
খরচাদি হয় না। বড় কোনও অফিসার বুঝে গেলে তো ফ্রিতেই সবকিছু করে দিতে পারে। বাবা
রায় দিচ্ছেন যে - যেরকম কলকাতায়, চৌরঙ্গীতে ফার্স্ট ক্লাস একটা বড় রাজকীয় দোকান
খোলা হোক, তাহলে সেখানে গ্রাহকও অনেক আসবে। মাদ্রাজ, বোম্বে - এই রকম বড় বড়
শহরগুলিতেও বড় বড় দোকান খোলা হবে। বাবা তো হলেন ব্যবসাদার, তাইনা! তোমাদের থেকে
নষ্ট হয়ে যাওয়া এক পয়সা নিয়ে পরিবর্তে কি দিচ্ছেন! এইজন্যই তাঁকে দয়ার সাগর বলা
হয়। কড়ি থেকে একদম হীরার মত তৈরী করেন, মানুষকে দেবতা বানিয়ে দেন। সবকিছুর কারণ এক
বাবা-ই। বাবা যদি না আসতেন, তাহলে কি তোমাদের মহিমা হত?
বাচ্চারা, তোমাদের এই
খুশিতে থাকতে হবে যে, স্বয়ং ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। এইম অবজেক্ট নর থেকে
নারায়ণ হওয়া, সেটাও সামনে উপস্থিত। প্রথম-প্রথম যারা অব্যভিচারী ভক্তি শুরু
করেছিল, তারাই এসে উঁচুপদ প্রাপ্ত করার জন্য পুরুষার্থ করবে। বাবা কত সুন্দর সুন্দর
পয়েন্টস্ বোঝাচ্ছেন, বাচ্চারা তো ভুলে যায়, তাই বাবা বলেন যে, পয়েন্টস্ লেখো।
টপিক্স লিখতে থাকো। ডাক্তারেরা অনেক বই পড়ে। তোমরা হলে মাস্টার আত্মিক সার্জেন।
তোমাদেরকে শেখানো হয় যে, কিভাবে আত্মাদের মধ্যে ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হয়। এ হলো
জ্ঞানের ইঞ্জেকশন। এতে সূচ ইত্যাদি কিছুই থাকে না। বাবা হলেন অবিনাশী ডাক্তার,
আত্মাদেরকে এসে পড়াচ্ছেন। কারন তারাই এখন অপবিত্র হয়ে গেছে। এটা তো খুবই সহজ। বাবা
আমাদেরকে বিশ্বের মালিক বানাচ্ছেন, আমরা কি তাঁকে স্মরণ করতে পারি না! মায়ার অনেক
অপোজিশনও রয়েছে, সেইজন্য বাবা বলেন যে - চার্ট রাখো আর সেবার চিন্তা করো তাহলেই
অনেক খুশিতে থাকবে। হয়তো কেউ খুব ভালো মুরলী শোনায় কিন্তু যোগ করে না। বাবার কাছে
সত্য থাকাও অনেক কঠিন কাজ। যদি কেউ মনে করে যে আমি খুব ভালো পুরুষার্থ করছি, তাহলে
বাবাকে স্মরণ করে সেই চার্ট বাবাকে লিখে পাঠাও, তাহলে বাবা বুঝবেন যে তুমি সত্য কথা
বলছো নাকি মিথ্যা? আচ্ছা, বাচ্চাদেরকে বোঝানো হলো যে - সেলসম্যান হতে হবে, অবিনাশী
জ্ঞান রত্নের। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
এইম অব্জেক্টকে সামনে রেখে মত্ত থাকতে হবে, মাস্টার আত্মিক সার্জেন্ হয়ে সবাইকে
জ্ঞানের ইঞ্জেকশান প্রয়োগ করতে হবে। সেবার সাথে সাথে স্মরণেরও চার্ট রাখতে হবে,
তবেই খুশিতে থাকবে।
২ ) কথাবার্তা বলার
ম্যানার্স খুব সুন্দর রাখতে হবে। আপনি-আজ্ঞে করে কথা বলতে হবে। প্রতিটি কাজ
উদারচিত্ত হয়ে করতে হবে।
বরদান:-
সকল
কর্মেন্দ্রিয়ের আকর্ষণ থেকে দূরে কমল সমান থাকা দিব্য বুদ্ধি আর দিব্য নেত্রের
বরদানী ভব
বাপদাদার দ্বারা
প্রত্যেক ব্রাহ্মণ বাচ্চার জন্ম হতেই দিব্য সমর্থ বুদ্ধি আর দিব্য নেত্রের বরদান
প্রাপ্ত হয়েছে। যে বাচ্চারা নিজের বার্থ ডে-র এই গিফ্ট সদা যথার্থ রীতি ইউজ করে তারা
কমল পুষ্পের সমান শ্রেষ্ঠ স্থিতির আসনের উপর স্থিত থাকে। কোনও প্রকারের আকর্ষণ -
দেহের সম্বন্ধ, দেহের পদার্থ বা কোনও কর্মেন্দ্রিয়, তাদেরকে আকর্ষিত করতে পারে না।
তারা সকল আকর্ষণ থেকে দূরে সদা হাসিখুশী থাকে। তারা নিজেকে কলিযুগী পতিত বিকারী
আকর্ষণ থেকে দূরে থাকার অনুভব করে।
স্লোগান:-
যখন
কোনও কিছুর প্রতি আকর্ষণ থাকবে না তখন শক্তি স্বরূপ প্রত্যক্ষ হবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
নিজের শ্রেষ্ঠ সংকল্প
দ্বারা অন্য আত্মাদের ব্যর্থ সংকল্প বা বিকল্পের বয়ে যাওয়া বন্যার থেকে আর নিজের
শক্তির দ্বারা অল্প সময়ের মধ্যে কিনারা করে দেখাও। ব্যর্থ সংকল্প শুদ্ধ সংকল্পে
পরিবর্তন করে দাও। এক স্থানে থেকেও অনেক আত্মাদের উপর তোমাদের শ্রেষ্ঠ সংকল্প আর
দিব্য দৃষ্টির প্রভাব পড়বে।