15.08.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সকাল-সকাল উঠে এই চিন্তন করো যে, আমি এত ছোট্ট আত্মা এত বড় শরীরকে চালনা করছি, আমি
আত্মার মধ্যে অবিনাশী পার্ট নিহিত রয়েছে"
প্রশ্নঃ -
শিববাবার কোন্
প্র্যাকটিসটি রয়েছে, কোনটি নেই?
উত্তরঃ
আত্মাকে জ্ঞান
রত্ন দ্বারা শৃঙ্গার করার প্র্যাক্টিস শিববাবার আছে, বাকি শরীরের শৃঙ্গার করার
প্র্যাক্টিস তাঁর নেই। কারণ বাবা বলেন, আমার তো নিজস্ব শরীরই নেই। আমি এনার শরীর
যদিও ভাড়ায় নিয়েছি কিন্তু এই শরীরের শৃঙ্গার এই আত্মা নিজেই করে, আমি করি না। আমি
হলাম সর্বদাই অশরীরী ।
গীতঃ-
দুনিয়া বদলে
যায় যাক, আমরা বদলাবো না...
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা এই
গান শুনলো। কারা শুনলো? আত্মা এই শরীরের কান দিয়ে শুনলো। বাচ্চারাও এই কথা জানে যে,
আত্মা হলো সূক্ষ্ম। আত্মা শরীরে না থাকলে শরীর কোনো কাজের থাকে না। এতো সূক্ষ্ম
আত্মার আধারে এই বিরাট দেহ সঞ্চালিত হয়। দুনিয়ায় কেউ জানেনা যে আত্মা কি জিনিস যে
এই দেহ রূপী রথে বিরাজিত আছে। অকালমূর্তি আত্মার এ হলো আসন। বাচ্চাদের এই জ্ঞান
প্রাপ্ত হয়। কতখানি রমণীয়, রহস্যযুক্ত এই জ্ঞান। যখন কোনো এমন রহস্যযুক্ত কথা শোনা
হয় তখন চিন্তন চলতে থাকে। বাচ্চারা, তোমাদেরও এই চিন্তন চলতে থাকে - এই সূক্ষ্ম
আত্মা বিরাজিত আছে বিরাট শরীরে। আত্মায় ৮৪ জন্মের পার্ট ফিক্স আছে। শরীর তো বিনাশ
হয়ে যায়। বাকি থেকে যায় আত্মা। এই হলো বিচার করার বিষয়। সকালে উঠে এই চিন্তন করা
উচিত। বাচ্চাদের স্মরণে এসেছে আত্মা কতো ছোট্ট, তারই অবিনাশী পার্ট প্রাপ্ত হয়েছে।
আমি আত্মা অত্যন্ত ওয়ান্ডারফুল। এ হলো নতুন জ্ঞান। যে জ্ঞান দুনিয়ায় কারো নেই। বাবা
নিজে এসে বলে দেন, কি স্মরণ করতে হবে। আমরা কতো ছোট্ট আত্মারা কীভাবে পার্ট প্লে করি।
এই শরীর ৫ তত্ত্বের দ্বারা নির্মিত। ব্রহ্মাবাবা জানেন না শিববাবার আত্মা কীভাবে আসা
যাওয়া করে। এমন তো নয়, সর্বদা এতেই থাকেন। সুতরাং এই চিন্তন করতে হবে। বাচ্চারা,
বাবা তোমাদের এমন জ্ঞান প্রদান করেন যে কেউ কখনও প্রাপ্ত করতে পারেনা। তোমরা জানো
এই জ্ঞান ব্রহ্মাবাবার আত্মায় ছিলো না। অন্য সৎসঙ্গে এইসব কথায় কারো চিন্তা থাকে
না। আত্মা ও পরমাত্মার এতটুকুও জ্ঞান থাকে না। কোনো সাধু সন্ন্যাসী ইত্যাদি এই কথা
বোঝে না যে আমি আত্মা এই শরীর দ্বারা অন্য আত্মাকে মন্ত্র প্রদান করি। আত্মা শরীর
দ্বারা শাস্ত্র পাঠ করে। একটি মানুষও আত্ম-অভিমানী নয়। আত্মার জ্ঞান কারো নেই, তাহলে
বাবার বিষয়ে জ্ঞান কীভাবে থাকবে।
তোমরা বাচ্চারা জানো
আমরা আত্মা, আমাদের বাবা বলেন মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা ! তোমরা কতখানি বুদ্ধিমান
হয়েছো। এমন কোনো মানুষ নেই যে বুঝবে এই শরীরে যে আত্মা আছে , তাকে পরমপিতা পরমাত্মা
বসে পড়ান। কথাটি কতটা বুঝতে হবে। কিন্তু তবুও ব্যবসা ইত্যাদিতে গিয়ে কথাটি বিস্মৃত
হয়ে যায়। সর্ব প্রথমে বাবা আত্মার জ্ঞান প্রদান করেন যে জ্ঞান কোনো মানুষ মাত্রের
নেই। গায়নও আছে - আত্মা-পরমাত্মা দূরে থেকেছে বহুকাল... হিসেব আছে তাইনা। তোমরা
বাচ্চারা জানো আত্মা ই কথা বলে শরীর দ্বারা। আত্মা ই শরীর দ্বারা ভালো খারাপ কাজ করে।
বাবা এসে আত্মাদের সুন্দর সুন্দর ফুলে (গুলগুল) পরিণত করেন। সর্বপ্রথমে বাবা বলেন
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে এই প্র্যাক্টিস বা চিন্তন করো যে আত্মা কি? যে এই শরীরের
দ্বারা শোনে। আত্মার পিতা হলেন পরমপিতা পরমাত্মা, যাকে পতিত-পাবন, জ্ঞানের সাগর বলা
হয়। তাহলে কোনও মানুষ সুখের সাগর, শান্তির সাগর বলে কেন। লক্ষ্মী-নারায়ণকে কি বলবে
সদা পবিত্রতার সাগর? না। একমাত্র বাবা হলেন সদা পবিত্রতার সাগর। মানুষ তো বসে
শুধুমাত্র ভক্তি মার্গের শাস্ত্রের বর্ণনা করে। প্রাক্টিক্যাল অনুভব নেই। এমন বুঝবে
না আমরা আত্মা এই শরীর দ্বারা বাবার মহিমা গান করি। তিনি তো হলেন আমাদের খুব মিষ্টি
বাবা। তিনিই সুখ প্রদান করেন। বাবা বলেন - হে আত্মারা, এখন আমার শ্রীমৎ অনুসারে চলো।
অবিনাশী আত্মার অবিনাশী পিতা দ্বারা অবিনাশী শ্রীমৎ প্রাপ্ত হয়। বিনাশী দেহধারীর
বিনাশী দেহধারীদের মতামত ই প্রাপ্ত হয়। সত্যযুগে তোমরা এখানকার প্রালব্ধ প্রাপ্ত করো।
সেখানে কখনও উল্টো মতামত প্রাপ্ত হয় না। এখনকার শ্রীমৎ-ই অবিনাশী হয়ে যায়, যা
অর্ধকল্প চলে। এ হলো নতুন জ্ঞান, বিশাল বুদ্ধির প্রয়োজন আছে এই জ্ঞান ধারণ করার
জন্য। তা কর্মে পরিলক্ষিত হওয়া উচিত। যারা শুরু থেকে ভক্তি করেছে তারাই ভালো ভাবে
ধারণ করতে পারবে। এই কথা বুঝতে হবে - যদি আমাদের বুদ্ধিতে সঠিকভাবে ধারণা না হয়
তাহলে নিশ্চয়ই আমরা শুরু থেকে ভক্তি করিনি। বাবা বলেন, কিছু না বুঝতে পারলে বাবাকে
জিজ্ঞাসা করো। কারণ বাবা হলেন অবিনাশী সার্জেন। তাঁকে সুপ্রীম সোল বলা হয়। আত্মা
পবিত্র হলে তার মহিমা হয়। আত্মার মহিমা হলে শরীরেরও মহিমা হয়। আত্মা তমোপ্রধান হলে
শরীরেরও মহিমা হয় না। এই সময় বাচ্চারা তোমরা খুব গুহ্য বুদ্ধি প্রাপ্ত করো। আত্মার
ই প্রাপ্তি হয়। আত্মাকে খুব মিষ্টি হওয়া উচিত। সবাইকে সুখ দেওয়া উচিত। বাবা হলেন
খুব মিষ্টি। আত্মাদেরও খুব মিষ্টি করে দেন। আত্মা কোনো অ কর্তব্য যেন না করে - এই
প্র্যাক্টিস করতে হবে। চেক করতে হবে যে আমার দ্বারা কোনো অকর্তব্য হয় না তো? শিববাবা
কি কখনও অকর্তব্য করবেন? না। তিনি আসেনই উত্তম থেকে উত্তম কল্যাণকারী কাজ করতে।
সবাইকে সদগতি প্রদান করেন। অতএব বাবা যেমন কর্তব্য করেন, বাচ্চাদেরও তেমন কর্তব্য
করা উচিত। এই কথাও বোঝানো হয়েছে, যে শুরু থেকে অনেক ভক্তি করেছে, তাদের বুদ্ধিতে এই
জ্ঞান স্থির থাকবে। এখনও দেবতাদের ভক্তের সংখ্যা অনেক আছে। নিজের মস্তক দান করতেও
প্রস্তুত থাকে। অনেক ভক্তি যারা করেছে, তাদের পিছনে থাকে যারা কম ভক্তি করেছে।
তাদের মহিমা বর্ণনা করে। তাদেরকে তো স্থূল রূপে দেখতে পায়। এখানে তোমরা তো হলে
গুপ্ত রূপে। তোমাদের বুদ্ধিতে সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে। এই কথাও
বাচ্চারা জানে - বাবা আমাদের পড়াতে এসেছেন। এখন আমরা ঘরে অর্থাৎ পরমধাম ফিরে যাব।
যেখানে সব আত্মারা বাস করে, সেই হলো আমাদের ঘর। সেখানে কোনো শরীর থাকে না তাই
আওয়াজও হয় না। আত্মা না থাকলে শরীর জড় হয়ে যায়। মানুষের শরীরের প্রতি খুব মোহ থাকে
! আত্মা শরীর ত্যাগ করে গেলে ৫ তত্ত্ব পড়ে থাকে, তার প্রতিও অনেক ভালোবাসা থাকে।
স্ত্রী নিজের স্বামীর চিতায় বসতে রাজী হয়ে যায়। শরীরের প্রতি অনেক মোহ থাকে। এখন
তোমরা বুঝেছো নষ্টমোহ হতে হবে, সম্পূর্ণ দুনিয়ার থেকে। এই শরীর তো শেষ হবেই। তাই এই
শরীরের প্রতি মোহ না থাকাই উচিত, তাইনা। কিন্তু অনেক মোহ থাকে। ব্রাহ্মণদের ভোজন
করানো হয়। স্মরণ করা হয় - অমুকের শ্রাদ্ধ কার্য । এবারে সে তো আর ভোজন গ্রহণ করছে
না। বাচ্চারা, তোমাদের এইসব বিষয় থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। ড্রামায় প্রত্যেকে
নিজের পার্ট প্লে করে। এই সময় তোমাদের জ্ঞান আছে, আমাদের নষ্টমোহ হতে হবে। মোহজিত
রাজার কাহিনীও আছে যদিও কোনো মোহজিত রাজা হয় না। এইরকম অনেক কাহিনী লেখা আছে। সেখানে
অকাল মৃত্যু হয় না। তাই জিজ্ঞাসা করার কোনো প্রশ্ন থাকে না। এইসময় তোমাদের মোহজিত
বানানো হয়। স্বর্গে মোহজিত রাজারা ছিলো, যথা রাজা রানী তথা প্রজা ছিলো। সেটা হলো
নষ্টমোহ রাজধানী। রাবণের রাজ্যে মোহ থাকে। সেখানে তো বিকার থাকে না, রাবণ রাজ্য-ই
নেই । রাবণের রাজত্ব শেষ হয়। রাম রাজ্যে কি হয়, সেই জ্ঞানও থাকে না। বাবা ব্যতীত এই
জ্ঞান কেউ প্রদান করতে পারে না। বাবা এই দেহে উপস্থিত থেকেও দেহী-অভিমানী থাকেন।
লোন বা ভাড়া করা বাড়ি নিলে তাতেও মোহ থাকে। বাড়িটি সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়, এনাকে
সাজানোর দরকার নেই। কারণ বাবা তো হলেন অশরীরী তাইনা। বাবার কোনোরকম শৃঙ্গার ইত্যাদি
করার কোনো প্র্যাক্টিস-ই নেই। ওঁনার তো কেবলমাত্র অবিনাশী জ্ঞান রত্ন দ্বারা
বাচ্চাদের শৃঙ্গার করার প্র্যাক্টিস আছে। সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বুঝিয়ে দেন।
শরীর তো হলো অপবিত্র, এনার যখন অন্য নতুন দেহ প্রাপ্ত হবে তখন পবিত্র হবেন। এই সময়
তো এই হলো পুরানো দুনিয়া, যা শেষ হয়ে যাবে। সেই কথাও দুনিয়ায় কেউ জানে না। ধীরে ধীরে
সবাই জানবে। নতুন দুনিয়ার স্থাপনা এবং পুরানো দুনিয়ার বিনাশ - এটা তো বাবারই
কর্তব্য। বাবা এসে ব্রহ্মা দ্বারা প্রজা রচনা করে নতুন দুনিয়া স্থাপন করছেন। তোমরা
কি নতুন দুনিয়ায় আছো ? না, নতুন দুনিয়া স্থাপন হচ্ছে। সুতরাং ব্রাহ্মণদের শিখাও
উঁচুতে। বাবা বুঝিয়েছেন, বাবার সম্মুখে এলে সবচেয়ে প্রথমে স্মরণ করবে যে আমরা ঈশ্বর
পিতার সম্মুখে যাই। শিববাবা তো হলেন নিরাকার। তাঁর সম্মুখে আমরা কীভাবে যাবো। অতএব
পিতাকে স্মরণ করে তারপরে পিতার সম্মুখে আসবে। তোমরা জানো উনি এনার মধ্যে বিরাজিত
আছেন। এই শরীর তো পতিত। শিববাবার স্মরণে না থেকে কোনো কাজ করলে সেই কাজ পাপে পরিণত
হয়। আমরা শিববাবার কাছে যাই। পরে অন্য জন্মে অন্য আত্মীয়স্বজন থাকবে। সেখানে
দেবতাদের কোলে জন্ম হবে। এই ঈশ্বরীয় সান্নিধ্য বা ঈশ্বরীয় কোল একবারই প্রাপ্ত হয়।
মুখে বলে বাবা তোমার আপন হয়েছি। অনেকে এমন আছে যারা এখনও সাক্ষাৎ করেনি। বাইরে থাকে,
তারা লেখে শিববাবা আমরা তোমার কোলের সন্তান হয়েছি। বুদ্ধিতে জ্ঞান আছে। আত্মা বলে -
আমরা শিববাবার সন্তান হয়েছি। এর আগে আমরা পতিত কোলে ছিলাম। ভবিষ্যতে পবিত্র
দেবতাদের কোলের সন্তান হয়ে যাবো। তোমাদের এই জন্ম হলো দুর্লভ জন্ম। তোমরা এখানে
সঙ্গমযুগে হীরে তুল্য হও। সঙ্গমযুগ জলের সাগর ও নদীর মিলনকে বলা হয় না। রাত দিনের
পার্থক্য । ব্রহ্মপুত্র হলো বিশাল নদী, সাগরে মিলিত হয়। সব নদী সাগরে গিয়ে মিলিত হয়।
তোমরাও তো জ্ঞান সাগর থেকে বের হয়েছো তোমরা হলে জ্ঞান-নদী। জ্ঞান সাগর হলেন শিববাবা।
বিশাল নদী হলো ব্রহ্মপুত্র। তাঁর নাম হলো ব্রহ্মা। সাগরের সঙ্গে মিলন হয়। তোমরা জানো
নদী কোথা থেকে বের হয়। সাগর থেকে বেরিয়ে আবার সাগরে এসে মিলিত হয়। সাগর থেকে মিষ্টি
জল প্রাপ্ত করে। সাগরের সন্তান এসে সাগরের সঙ্গে মিলিত হয়। তোমরাও জ্ঞান সাগর থেকে
বের হয়ে সবাই সেখানে চলে যাবে যেখানে তারা থাকে, তোমরা আত্মারাও সেখানেই থাকো।
জ্ঞান সাগর এসে তোমাদের পবিত্র মিষ্টি করেন। আত্মা যে লবনাক্ত হয়ে গেছে তাদের মিষ্টি
করেন । ৫ বিকার রূপী লবণ তোমাদের মধ্যে থেকে দূর হয় তখন তোমরা তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হয়ে যাও। বাবা পুরুষার্থ করান। তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, স্বর্গে ছিলে। তোমরা
এখন ছিঃ ছিঃ হয়েছো। রাবণ তোমাদের কি বানিয়েছে। ভারতেই গায়ন আছে হীরে সম জন্ম অমূল্য।
বাবা বলেন, তোমরা
কড়ি'র পিছনে এত অস্থির কেন হও। কড়িই বা কতো চাই । গরিব মানুষ চট করে বুঝে যায়।
ধনবান বলে আমাদের জন্যে তো এখানেই স্বর্গ। তোমরা বাচ্চারা জানো - মানুষ মাত্রই এখন
সকলেরই কড়ি তুল্য জন্ম । আমরাও এইরকম ছিলাম। এখন বাবা আমাদের কি বানিয়েছেন। মুখ্য
উদ্দেশ্য তো আছে তাইনা। আমরা নর থেকে নারায়ণ হই। ভারত এখন কড়ি সম কাঙাল হয়েছে তাইনা।
ভারতবাসী নিজেরা তো জানেনা। এখানে তোমরা হলে খুব সাধারণ অবলা । কোনও ধনী মানুষের
এখানে বসার ইচ্ছে হবে না। যেখানে বড় লোক মানুষ সন্ন্যাসী গুরু ইত্যাদি থাকবে
সেখানকার বড় বড় সভায় যাবে। বাবাও বলেন আমি হলাম দীন নাথ (গরিব নিবাজ)। বলা হয় ভগবান
গরীব মানুষকে রক্ষা করেন। এখন তোমরা জানো - আমরা খুব ধনী ছিলাম। এখন আবার পরিণত
হচ্ছি। বাবা লেখেন তোমরা পদ্মপতি হও। সেখানে কোনো মারামারি নেই। এখানে দেখো টাকা
পয়সার জন্য কত মারামারি হয়। ঘুষ দেওয়া হয়। মানুষের টাকা তো চাই তাইনা। তোমরা
বাচ্চারা জানো বাবা আমাদের খাজানা ভরপুর করে দেন। অর্ধকল্পের জন্য যত চাই তত ধন
প্রাপ্ত করো, কিন্তু পুরো পুরুষার্থ করো। গাফিলতি কোরোনা। বলা হয় ফলো ফাদার করো
তাইনা। ফাদারকে ফলো করলে তবে এমন স্বরূপে পরিণত হবে। নর থেকে নারায়ণ, নারী থেকে
লক্ষ্মী, খুব কঠিন এই পরীক্ষা। এতে একটুও গাফিলতি করা উচিত নয়। বাবা শ্রীমৎ দেন
অতএব সেই অনুযায়ী চলতে হবে। নিয়ম কায়দা উলঙ্ঘণ করবে না। শ্রীমৎ দ্বারা তোমরা শ্রী
স্বরূপে পরিণত হও। লক্ষ্য খুবই উঁচুতে। নিজের প্রতিদিনের খাতা রাখো। উপার্জন জমা
হয়েছে নাকি ক্ষতি হয়েছে? বাবাকে কতক্ষণ স্মরণ করেছো? কতজনকে পথ দেখিয়েছো? তোমরা হলে
অন্ধের লাঠি তাইনা। তোমরা জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত করো। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবা যেমন মিষ্টি, তেমনই মিষ্টি হয়ে সবাইকে সুখ দিতে হবে। কোনোরকম অকর্তব্য কার্য
করবে না। উত্তম থেকেও উত্তম কল্যাণের কাজই করতে হবে।
২ ) কড়ির পিছনে
হয়রান হবে না। পুরুষার্থ করে নিজের জীবন হীরে তুল্য বানাতে হবে। গাফিলতি করবে না।
বরদান:-
নিশ্চয়রূপী পা-কে অচল রেখে সদা নিশ্চয়বুদ্ধি নিশ্চিন্ত ভব
সবথেকে বড় রোগ হলো
চিন্তা, এর ওষুধ ডাক্তারদের কাছেও নেই। চিন্তিত ব্যক্তি যতই প্রাপ্তির পিছনে ছুটতে
থাকে ততই প্রাপ্তি তার আগে আগে ছুটতে থাকে । সেইজন্য নিশ্চয়ের পা সদা অচল রাখো। সদা
এক বল এক ভরসা - এই পা অচল থাকলে বিজয় নিশ্চিত। নিশ্চিত বিজয়ী সদাই নিশ্চিন্ত থাকে।
মায়া নিশ্চয়রূপী পা-কে নাড়ানোর জন্য ভিন্ন-ভিন্ন রূপে আসে কিন্তু মায়া নড়ে যাবে
কিন্তু তোমাদের নিশ্চয়রূপী পা যেন না নড়ে, তাহলে নিশ্চিন্ত থাকার বরদান প্রাপ্ত হয়ে
যাবে।
স্লোগান:-
প্রত্যেকের বিশেষত্বকে দেখতে থাকো তবে বিশেষ আত্মা হয়ে যাবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের অনুভবী হও
তোমাদের গোপ-গোপীদের
চরিত্র গায়ন হয়ে থাকে - বাবার সাথে সর্ব সম্বন্ধের সুখ নেওয়া আর মগ্ন থাকা অথবা
সর্ব-সম্বন্ধের লভ্ এ লভলীন থাকা। যখন কেউ অতি স্নেহের সাথে মিলন করে তো সেই সময়
স্নেহের মিলনের এই শব্দ হয় যে একে-অপরের মধ্যে সমাহিত হয়ে যায় বা দুজনে মিলেমিশে এক
হয়ে যায়। তো বাবার স্নেহে সমাহিত হয়ে যাওয়া অর্থাৎ বাবার স্বরূপ হয়ে যাওয়া।