15.11.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
নিজের ক্যারেক্টার্স সংশোধনের জন্য স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে, বাবার স্মরণ-ই
তোমাদেরকে সদা সৌভাগ্যশালী বানাবে"
প্রশ্নঃ -
আত্মার
অবস্থার পরখ কোন্ সময় হয়? সঠিক অবস্থা কাকে বলা হবে?
উত্তরঃ
অসুখের সময়
অবস্থার পরখ হয়। অসুখেও যদি মন মেজাজ খুশী থাকে এবং চেহারায় খুশীর ঝলকের দ্বারা
বাবার স্মরণ করাতে থাকে, সেই অবস্থা হল ভালো অবস্থা। যদি নিজেও কাঁদবে, উদাসীন হয়ে
থাকবে তো অন্যদের খুশীতে কীভাবে রাখবে? তাহলে যাই হয়ে যাক না কেন - কান্নাকাটি করবে
না।
ওম্ শান্তি ।
দুটি শব্দের
গায়ন আছে - দুর্ভাগ্যশালী এবং সৌভাগ্যশালী। সৌভাগ্য চলে গেলে দুর্ভাগ্য বলা হয়।
স্ত্রী'র স্বামী মারা গেলেও দুর্ভাগ্য বলা হয়। একা হয়ে যায়। এখন তোমরা জানো আমরা
সদাকালের জন্য সৌভাগ্যশালী হই। সেখানে দুঃখের নাম নেই। মৃত্যুর কথা থাকে না। বিধবা
বলে কিছু হয় না। বিধবার দুঃখ হয়, শোক করে। এই যে সাধু সন্ন্যাসীর রয়েছে, এমন নয় যে
তাদের দুঃখ হয় না। কেউ পাগল হয়ে যায়, অসুখ করে রুগীও হয়ে যায়। এটা হলোই রুগীদের
দুনিয়া। তোমরা বাচ্চারা বুঝেছো আমরা ভারতকে আবার শ্রীমতের দ্বারা রোগমুক্ত করি। এই
সময় মানুষের ক্যারেক্টার অত্যন্ত খারাপ। এখন ক্যারেক্টার সংশোধনের ডিপার্টমেন্ট
নিশ্চয়ই থাকবে। স্কুলেও স্টুডেন্টদের রেজিস্টার রাখা হয়। তাদের ক্যারেক্টার জানা
যায়, তাই বাবাও রেজিস্টার রেখেছিলেন। প্রত্যেকে নিজের রেজিস্টার রাখো। ক্যারেক্টার
দেখতে হবে আমরা কোনও ভুল করিনা তো। প্রথম কথা হল বাবাকে স্মরণ করতে হবে। স্মরণ
দ্বারাই তোমাদের চরিত্র সংশোধন হয়। আয়ু বড় হয় একের স্মরণে। এই হল জ্ঞান রত্ন।
স্মরণকে রত্ন বলা হয় না। স্মরণের দ্বারা তোমাদের ক্যারেক্টারর্স সংশোধন হয়। এই ৮৪
জন্মের চক্র তোমরাই বোঝাতে পারো, অন্য কেউ নয়। এই পয়েন্ট নিয়েই বোঝাতে হবে - বিষ্ণু
এবং ব্রহ্মা। শঙ্করের ক্যারেক্টার বলা হবে না। তোমরা বাচ্চারা জানো ব্রহ্মা ও
বিষ্ণুর পরস্পরের সঙ্গে কি কানেকশন আছে। বিষ্ণুর দুইটি রূপ হল এই লক্ষ্মী-নারায়ণ।
তাদেরই ৮৪ জন্ম হয়। ৮৪ জন্মে নিজেরাই পূজ্য এবং নিজেরাই পূজারীতে পরিণত হয়।
প্রজাপিতা ব্রহ্মা নিশ্চয়ই এখানেই চাই, তাইনা। সাধারণ দেহ চাই। অনেকে এই কথায়
বিভ্রান্ত হয়। ব্রহ্মা তো হলেন পতিত-পাবন পিতার রথ। বলাও হয়... দূরদেশবাসী এসেছে
ভিন দেশে... দুনিয়াকে পবিত্রকারী পতিত-পাবন পিতা পতিত দুনিয়ায় এসেছেন। পতিত দুনিয়ায়
একজনও পবিত্র থাকতে পারে না। এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝেছো যে আমরা কীভাবে ৮৪ জন্ম নিয়ে
থাকি। কেউ তো নেবে তাইনা। যারা সবচেয়ে প্রথমে আসবে তাদের নিশ্চয়ই ৮৪ জন্ম হবে।
সত্যযুগে দেবী-দেবতাই আসে। মানুষের একটুও চিন্তন চলে না, ৮৪ জন্ম কে নেবে। বুঝে
নেওয়ার কথা। পুনর্জন্মের কথা তো সবাই বিশ্বাস করে। ৮৪ বার পুনর্জন্ম এই কথাটি যুক্তি
দিয়ে বোঝাতে হবে। ৮৪ জন্ম তো সবার হবে না । একসঙ্গে সবাই তো আসবে না এবং শরীর ত্যাগ
করবে না। ভগবানুবাচও আছে যে তোমরা নিজেদের জন্মের কথা জানো না, ভগবান নিজেই বসে
বোঝান। তোমরা আত্মারা ৮৪ জন্ম নাও। বাচ্চারা, এই ৮৪-র কাহিনী বাবা বসে তোমাদের
শোনান। এও এক পড়াশোনা। ৮৪-র চক্রের জ্ঞান অর্জন করা খুব সহজ। অন্য ধর্মের মানুষ এই
কথাগুলি বুঝবে না। তোমাদের মধ্যেও সবাই ৮৪ জন্ম নেয় না। সবার ৮৪ জন্ম হলে তো সবার
একসাথে এসে যাবে। এমনটাও হয় না। সমস্ত কিছু নির্ভর করছে পড়াশোনা ও স্মরণের উপরে।
তাতেও একনম্বরে হলো বাবাকে স্মরণ করা। কঠিন বিষয়ে নম্বরও বেশি পাওয়া যায়। তার
প্রভাবও পড়ে। উত্তম, মধ্যম, কনিষ্ঠ সাবজেক্টও তো হয় তাইনা। এতে দুটি হলো মুখ্য। বাবা
বলেন আমাকে স্মরণ করো তাহলে সম্পূর্ণ নির্বিকারী হয়ে যাবে এবং পরে বিজয় মালাতে গাঁথা
হয়ে যাবে। এই হল রেস। প্রথমে দেখতে হবে আমি নিজে কতটা ধারণ করেছি? কতখানি স্মরণ করি?
আমার চরিত্র কেমন? যদি আমার কান্নার স্বভাব থাকে তাহলে আমি কীভাবে অন্যদের খুশী দিতে
পারবো? বাবা বলেন যারা কাঁদে তারা হারায়। যা কিছু হয়ে যাক, কান্নার দরকার নেই।
অসুখের সময়েও এইটুকু তো বলতে পারো নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো।
অসুখের সময়েই অবস্থা কিরকম পরীক্ষা করা হয়। কষ্টে একটু যন্ত্রণার কাতর ধ্বনি যদিও
বেরোয় কিন্তু নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা খবর দিয়েছেন।
পয়গম্বর-ম্যাসেঞ্জার হলেন একমাত্র শিববাবা, দ্বিতীয় কেউ নয়। বাকিরা যা কিছু শোনায়,
সবই হল ভক্তি মার্গের কথা। এই দুনিয়ার সমস্ত জিনিস সবই হল বিনাশী, এখন তোমাদের
সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে কিছু ভাঙ্গাচোরা থাকে না। সেখানে সব জিনিস এমনই ভালো
তৈরি হবে যে ভাঙবে না কখনও। এখানে সায়েন্সের দ্বারা কত কিছু তৈরি হয়, সেখানেও
সায়েন্স নিশ্চয়ই থাকবে কারণ তোমাদের জন্য অনেক সুখ চাই। বাবা বলেন বাচ্চারা তোমরা
কিছুই জানতে না। ভক্তি মার্গ কখন শুরু হয়েছে, তোমরা কত দুঃখ দেখেছো - এইসব কথা
তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। দেবতাদের বলা হয় - সর্বগুণ সম্পন্ন....তাহলে কলা বা কোয়ালিটি
কম হলো কীভাবে? এখন তো কোনও কলা নেই অর্থাৎ গুণ নেই। চাঁদের কলাও ধীরে ধীরে কম হয়,
তাইনা।
তোমরা জানো যে, এই
দুনিয়া প্রথমে নতুন থাকে তখন সেখানে প্রত্যেকটি বস্তু থাকে সতোপ্রধান ফার্স্টক্লাস।
পরে পুরানো হতে হতে কলা কম হয়ে যায়। সর্বগুণ সম্পন্ন তো হলেন এই লক্ষ্মী-নারায়ণ
তাইনা ! এখন বাবা তোমাদের সত্যনারায়ণের প্রকৃত সত্য কাহিনী শোনাচ্ছেন। এখন হলো রাত
পরে দিন হয়। যখন তোমরা সম্পূর্ণ হও তখন তোমাদের জন্য সৃষ্টিও এমন হওয়া উচিত। এই পুরো
দুনিয়া ১৬ কলা সম্পন্ন হয়ে সম্পূর্ণ হয়ে যায়। এখন তো কোনও কলা নেই। বড় বড় ব্যক্তি
বা মহাত্মা যারা আছে, বাবার এই নলেজ তাদের ভাগ্যে নেই। তাদের নিজস্ব অহংকার আছে। এই
নলেজ গরিবদের ভাগ্যে অনেক আছে। অনেকে বলে এমন উচ্চ পিতার তো কোনো বড় রাজা বা পবিত্র
ঋষি ইত্যাদির দেহে আসা উচিত। সন্ন্যাসীরা পবিত্র হয়। পবিত্র কন্যার দেহে আসবেন। বাবা
বসে বোঝান আমি কার দেহে আসি। আমি তার মধ্যে আসি যে পুরো ৮৪ জন্ম নেয়। এক দিনও কম নয়।
কৃষ্ণ জন্ম থেকেই ১৬ কলা সম্পন্ন ছিলেন। পরে সতঃ, রজঃ, তমঃ-তে আসেন। প্রত্যেকটি
জিনিস প্রথমে সতোপ্রধান তারপরে সতঃ, রজঃ, তমঃ-তে আসে। সত্যযুগেও এমন হয়। শিশু হয়
সতোপ্রধান পরে বড় হয়ে বলবে এখন আমি এই শরীর ত্যাগ করে সতোপ্রধান শিশু হব। বাচ্চারা
তোমাদের এমন নেশা থাকে না। খুশীর পারদ ঊর্ধ্বে থাকে না। যারা খুব পরিশ্রম করে,
খুশীর পারদ ঊর্ধ্বে থাকে। চেহারা খুশীতে ভরা থাকে। ভবিষ্যতে গিয়ে তোমাদের
সাক্ষাৎকার হতে থাকবে। যেমন ঘরের কাছে পৌঁছে ঘর দুয়ার বাড়ি ইত্যাদি স্মরণে আসে। এও
কিছুটা সেইরকম। পুরুষার্থ করতে-করতে তোমাদের প্রালব্ধ যখন নিকটে থাকবে তখন অনেক
সাক্ষাৎকার হতে থাকবে। খুশীতে ভরে থাকবে। যারা ফেল করে তারা লজ্জায় ডুবে মরে।
তোমাদেরও বাবা বলে দেন পরে খুব অনুতাপ হবে। নিজের ভবিষ্যতের সাক্ষাৎকার করবে, আমরা
কিরূপে পরিণত হবো? বাবা দেখাবেন এই এই বিকর্ম ইত্যাদি করেছো। পুরোপুরি পড়াশোনা করোনি,
ট্রেটর হয়েছো, তাই এই দন্ড ভোগ করছো। সব সাক্ষাৎকার হবে। সাক্ষাৎকার ব্যতীত দন্ড
দেবেন কীভাবে? কোর্টেও বলা হয় - তুমি এই এই কাজ করেছো, এ হলো তারই দন্ড। যতক্ষণ
কর্মাতীত অবস্থা হচ্ছে ততক্ষণ কিছু চিহ্ন থেকে যাবে। যখন আত্মা পবিত্র হয়ে যায় তখন
শরীর ত্যাগ করতে হয়। এখানে থাকতে পারে না। সেই অবস্থা তোমাদের ধারণ করতে হবে। এখন
তোমরা ফিরে গিয়ে পুনরায় নতুন দুনিয়ায় আসার জন্য রেডি হচ্ছো। তোমাদের পুরুষার্থই হল
যে আমরা শীঘ্র ফিরে গিয়ে, শীঘ্র আসি। যেমন বাচ্চাদের খেলায় দৌড় করানো হয়। চিহ্নিত
স্থান পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসতে হয়। তোমাদেরও শীঘ্র ফিরে গিয়ে, তারপরে প্রথম নম্বরে
নতুন দুনিয়ায় আসতে হবে। সুতরাং এ হলো তোমাদের রেস। স্কুলেও তো রেস করানো হয়, তাইনা।
তোমাদের এ হলো প্রবৃত্তি মার্গ। তোমাদের প্রথমে পবিত্র গৃহস্থ আশ্রম ছিল। এখন হলো
অপবিত্র, পরে পবিত্র ওয়ার্ল্ড হবে। এই সব কথা তোমরা স্মরণ করো তাহলেও অনেক খুশীতে
থাকবে। আমরাই রাজত্ব প্রাপ্ত করি আমরাই সেসব হারাই। হিরো-হিরোইন বলা হয় তাইনা। আমরা
হীরে সম জন্ম নিয়ে কড়ি সম জন্মে আসি।
এখন বাবা বলেন - তোমরা
কড়ি অর্জনের জন্য টাইম ওয়েস্ট ক'রোনা। ইনিও বলেন আমিও টাইম ওয়েস্ট করতাম। তখন
আমাকে বলেছিলেন এখন তুমি আমার হয়ে এই রূহানী ধান্ধা অর্থাৎ আত্মিক সেবা কার্য করো।
তখন অবিলম্বে সব কিছু ত্যাগ করি। টাকা পয়সা কেউ তো ফেলে দেয় না। সেসব তো কাজে লাগে।
টাকা ছাড়া ঘর তো ভাড়া পাওয়া যাবে না। ভবিষ্যতে অনেক ধনী মানুষ আসবে। তোমাদেরকে
সাহায্য করবে। এক দিন তোমাদেরকে বড় কলেজে, ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে ভাষণ দিতে হবে যে এই
সৃষ্টি চক্র কীভাবে পরিক্রমণ করে। হিস্ট্রি রিপিট হয় আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত।
গোল্ডেন এজ থেকে আয়রন এজ পর্যন্ত সৃষ্টির হিস্ট্রি-জিওগ্রাফির কথা আমরা বলতে পারি।
ক্যারেক্টার সম্বন্ধে তোমরা অনেক বোঝাতে পারো। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের মহিমা করো। ভারত
খুব পবিত্র ছিল, দিব্য ক্যারেক্টারর্স ছিল। এখন তো ভিশস ক্যারেক্টার। চক্র অবশ্যই
রিপিট হবে। আমরা ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি শোনাতে পারি। সেখানে ভালো ভালো
বাচ্চাদের যাওয়া উচিত। যেমন থিওসফিক্যাল সোসাইটি আছে, সেখানে তোমরা গিয়ে ভাষণ দাও।
কৃষ্ণ তো ছিলেন দেবতা, সত্যযুগের। সর্বপ্রথমে শ্রীকৃষ্ণ যিনি পরে নারায়ণ হন। আমরা
আপনাদের শ্রীকৃষ্ণের ৮৪ জন্মের কাহিনী শোনাই, যে কাহিনী অন্য কেউ শোনাতে পারে না।
এই টপিকটি বেশ বড়। বুদ্ধিমানদের ভাষণ দেওয়া উচিত।
এখন তোমাদের মনে ইচ্ছে
হয়, আমরা বিশ্বের মালিক হব, সুতরাং কতখানি খুশীর অনুভব হওয়া উচিত। অন্তরে বসে এই জপ
করো তাহলে এই দুনিয়ার কোনও কিছু অনুভব হবে না। তোমরা এখানে আসো - বিশ্বের মালিক হতে-
পরমপিতা পরমাত্মা দ্বারা। বিশ্ব তো এই দুনিয়াকে বলা হয়। ব্রহ্মলোক বা সূক্ষ্মবতনকে
বিশ্ব বলা হয় না। বাবা বলেন আমি বিশ্বের মালিক হই না। বাচ্চারা, এই বিশ্বের মালিক
তোমাদেরকে করি। কতখানি গুহ্য কথা । তোমাদেরকে বিশ্বের মালিক করি। পরে তোমরা মায়ার
দাস হয়ে যাও। এখানে যখন সামনে যোগে বসাও তখন মনে করিয়ে দিতে হবে - আত্ম অভিমানী হয়ে
বসো, বাবাকে স্মরণ করো। ৫ মিনিট পরে বলো। তোমাদের যোগের প্রোগ্রাম চলে, তাইনা।
অনেকের বুদ্ধি বাইরে বিচরণ করে তাই ৫-১০ মিনিট পর পর সতর্ক করা উচিত। নিজেকে আত্মা
ভেবে বসে আছো? বাবাকে স্মরণ করছো? তাহলে নিজেরও মনোযোগ থাকবে। বাবা এই সব যুক্তি বলে
দেন। ক্ষণে ক্ষণে সাবধান করো। নিজেকে আত্মা ভেবে শিববাবার স্মরণে বসে আছো ? তখন
যাদের বুদ্ধি বিচরণ করবে তাদের বুদ্ধি স্থির হয়ে যাবে। ক্ষণে ক্ষণে এই কথা স্মরণ
করানো উচিত। বাবার স্মরণ দ্বারাই তোমরা ওই পারে চলে যাবে। গানও করে নাবিক বা মাঝি,
আমার নৌকো পার লাগাও। কিন্তু অর্থ বোঝে না। মুক্তিধাম যাওয়ার জন্য অর্ধকল্প ভক্তি
করে। এখন বাবা বলেন আমায় স্মরণ করো তাহলে মুক্তিধাম চলে যাবে। তোমরা বসেছো পাপ ভস্ম
করতে তাই পাপ করা উচিত নয়। তাহলে তো পাপ থেকে যাবে। এক নম্বর পুরুষার্থ হল - নিজেকে
আত্মা ভেবে বাবাকে স্মরণ করো। এমন করে সতর্ক করতে থাকলে নিজের মনোযোগও স্থির থাকবে।
নিজেকেও সাবধান করে রাখতে হবে। নিজে স্মরণে বসলে তো অন্যদের বসাতে পারবে। আমরা আত্মা,
আমরা ফিরে যাই নিজ ধাম পরমধাম। পরে এসে রাজত্ব করবো। নিজেকে শরীর ভেবে নেওয়া - এ হলো
এক কঠিন অসুখ যার ফলে সবাই রসাতলে গেছে। তাদেরই উদ্ধার করতে হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজের সময় আধ্যাত্মিক কর্ম (রূহানী ধান্ধা) করে সফল করতে হবে। হীরে সম জীবন বানাতে
হবে। নিজেকে সতর্ক বাণী দ্বারা সাবধানে রাখতে হবে। নিজেকে শরীর ভেবে নেওয়ার কঠিন
অসুখ থেকে সুরক্ষিত রাখার পুরুষার্থ করতে হবে।
২ ) কখনও মায়ার দাস
হবে না, মনে মনে বসে জপ করতে হবে আমি হলাম আত্মা। যেন খুশী থাকে যে, আমরা বেগার থেকে
প্রিন্স হচ্ছি।
বরদান:-
অনুভবের গুহ্যতার প্রয়োগশালাতে থেকে নবীনত্বের রিসার্চ করা অন্তর্মুখী ভব
যখন নিজের মধ্যে সবার
আগে সকল অনুভব প্রত্যক্ষ হবে তখন প্রত্যক্ষতা হবে - এরজন্য অন্তর্মুখী হয়ে স্মরণের
যাত্রা বা প্রত্যেক প্রাপ্তির গুহ্যতাতে গিয়ে রিসার্চ করো, সংকল্প ধারণ করো আর
পুনরায় তার পরিণাম বা সিদ্ধি দেখো যে, যেটা সংকল্প করেছো সেটা সিদ্ধ হয়েছে নাকি হয়নি?
এইরকম অনুভবের গুহ্যতার প্রয়োগশালাতে থাকো যাতে সবাই অনুভব করবে যে এরা কোনও বিশেষ
লগণে মগণ হয়ে এই সংসারে উপরাম স্থিতিতে আছে। কর্ম করার সময় যোগের পাওয়ারফুল স্টেজে
থাকার অভ্যাস বৃদ্ধি করো। যেরকম বাণীতে আসার অভ্যাস আছে এইরকম আত্মিকতায় থাকার
অভ্যাস করো।
স্লোগান:-
সন্তুষ্টতার সীটে বসে যারা পরিস্থিতিগুলির খেলা দেখতে থাকে তারাই হলো সন্তুষ্টমণি।
অব্যক্ত ঈশারা :-
অশরীরী বা বিদেহী স্থিতির অভ্যাস বৃদ্ধি করো
যেরকম হঠযোগীরা
নিজেদের শ্বাস যতটা সময় চায় ততটা সময় বন্ধ রাখতে পারে। তোমরা সহজযোগী, স্বতঃ যোগী,
সদা যোগী, কর্ম যোগী, শ্রেষ্ঠ যোগী নিজের সংকল্পকে, শ্বাসকে প্রাণেশ্বর বাবার
জ্ঞানের আধারের উপর যে সংকল্প, যেরকম সংকল্প যতটা সময় করতে চাও ততটা সময় সেই সংকল্পে
স্থিত হয়ে যাও। এখনই শুদ্ধ সংকল্পে রমণ করো, এখনই একের লগণ অর্থাৎ একই বাবার সাথে
মিলনের, একই অশরীরী হওয়ার শুদ্ধ সংকল্পে স্থিত হয়ে যাও।