16.08.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের এইম অবজেক্ট হলো ওয়ান্ডারফুল রং বেরংয়ের (স্বর্গ ) দুনিয়ার মালিক হওয়া, তাই
সদা এই খুশীতে আনন্দিত থাকো, ঝিমিয়ে থেকো না"
প্রশ্নঃ -
ভাগ্যবান
বাচ্চাদের কোন্ উৎসাহ সর্বদাই থাকবে?
উত্তরঃ
অসীম জগতের
পিতা আমাদের নতুন দুনিয়ার প্রিন্স - প্রিন্সেজ বানানোর জন্য পড়াচ্ছেন । তোমরা এই
উৎসাহের সঙ্গে সবাইকে বোঝাতে পারো যে, এই লড়াইয়ের মধ্যে স্বর্গ লুকিয়ে আছে । এই
লড়াইয়ের পর স্বর্গের দ্বার খুলে যাবে - তোমাদের এই খুশীতে থাকতে হবে আর খুশীর সঙ্গে
অন্যদেরও বোঝাতে হবে ।
গীতঃ-
দুনিয়া রং
বেরঙের (রঙ্গিলী) বাবা...
ওম্ শান্তি ।
একথা কারা
বাবাকে বলেছে যে, এই দুনিয়া রং - বেরংয়ের? এখন এর অর্থ দ্বিতীয় কেউ বুঝতে পারে না
। বাবা বুঝিয়েছেন যে, এই খেলা হলো রং - বেরংয়ের । কোনো বায়োস্কোপ ইত্যাদি হলে অনেক
রং - বেরংয়ের সীন - সীনারি হয় তো, তাই না । এখন অসীম জগতের এই দুনিয়াকে কেউ জানেই
না । তোমাদের মধ্যেও পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে সম্পূর্ণ বিশ্বের আদি - মধ্য এবং
অন্তের জ্ঞান আছে । তোমরা বুঝতে পারো যে, স্বর্গ কতো রং - বেরংয়ের, কতো সুন্দর ।
যেই স্বর্গকে কেউই জানে না । এ'কথা কারোর বুদ্ধিতেই নেই, সে হলো ওয়ান্ডারফুল রং -
বেরংয়ের দুনিয়া । গায়ন আছে না যে, ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড - এর কথা তোমরাই কেবল
জানো । তোমরাই সেই ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড - এর জন্য নিজের নিজের ভাগ্য অনুসারে
পুরুষার্থ করছো । তোমাদের এইম অব্জেক্ট তো আছেই । সে হলো ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড,
বড়ই রং - বেরংয়ের দুনিয়া, যেখানে হীরে - জহরতের মহল থাকে । তোমরা এক সেকেণ্ডে সেই
ওয়ান্ডারফুল বৈকুন্ঠে চলে যাও । তোমরা সেখানে খেলাধূলা করো, রাস বিলাস ইত্যাদি করে
থাকো । অবশ্যই সেটা ওয়ান্ডারফুল দুনিয়া, তাই না । এখানে হলো মায়ার রাজ্য । এও
কতখানি ওয়ান্ডারফুল । এখানে মানুষ কতো কি করতে থাকে । এই দুনিয়াতে কেউই বুঝতে পারে
না যে, আমরা এই নাটকে খেলা করছি । নাটক যদি বুঝতে পারো, তাহলে সেই নাটকের আদি -
মধ্য এবং অন্তের জ্ঞানও থাকবে । বাচ্চারা, তোমরাও জানো যে, বাবা কতো সাধারণ । মায়া
তোমাদের একেবারেই ভুলিয়ে দেয় । মায়া তোমাদের নাক পাকড়ে ফেলে আর সব ভুলিয়ে দেয় ।
এখনই স্মরণে আছে, খুবই আনন্দে আছে, আহা ! আমরা সেই ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড,
স্বর্গের মালিক হচ্ছি, আবার ভুলে যায়, তখনই ঝিমিয়ে যায় । এমন ঝিমিয়ে যায় যে,
ভিলও (গরীবরাও) এমন ঝিমিয়ে যায় না । তখন এইটুকুও বুঝতে পারে না যে, আমরা স্বর্গে
যাবো । অসীম জগতের বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন । একদম যেন মরার মতো হয়ে যায় । সেই খুশী
আর নেশা থাকে না । এখন সেই ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড - এর স্থাপনা হচ্ছে । সেই
ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড - এর পৃথিবীর রাজকুমার হলেন শ্রীকৃষ্ণ । এও তোমরাই জানো
। যে জ্ঞানে তীক্ষ্ণ, সে কৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতেও বোঝাতে থাকবে । শ্রীকৃষ্ণ সেই
ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড - এর প্রিন্স ছিল । সেই সত্যযুগ, তারপর কোথায় গেল !
সত্যযুগ থেকে শুরু করে সিঁড়ি কিভাবে নেমে এসেছে । সত্যযুগ থেকে কলিযুগ কিভাবে হলো?
অবতরণের কলা কিভাবে হলো? বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতেই এই কথা আসবে । সেই আনন্দের
সঙ্গেই অন্যদেরও বোঝানো উচিত । শ্রীকৃষ্ণ এখন আবার আসছেন । কৃষ্ণের রাজ্য আবার
স্থাপন হচ্ছে । একথা শুনে ভারতবাসীদেরও খুশী হওয়া উচিত, কিন্তু এই উৎসাহ তাদেরই আসবে
যারা ভাগ্যবান হবে । দুনিয়ার মানুষ তো রত্নকেও পাথর মনে করে ফেলে দেয় । এ তো
অবিনাশী জ্ঞান রত্ন, তাই না । এই জ্ঞান রত্নের সাগর হলেন বাবা । এই রত্নের অনেক
ভ্যালু । এই জ্ঞান রত্নই ধারণ করতে হবে । এখন তোমরা জ্ঞান সাগরের কাছ থেকে ডাইরেক্ট
শুনছো, এরপর আর অন্যকিছুই শোনার দরকার নেই । সত্যযুগে এইসব হয় না । সেখানে না এল.
এল. বি থাকে, আর না সার্জন ইত্যাদি থাকে । সেখানে এই জ্ঞানই থাকে না । ওখানে তো
তোমরা প্রালব্ধ ভোগ করো । তাই জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাচ্চাদের খুব ভালোভাবে বোঝাতে হবে
। অনেকবার এই জ্ঞান মুরলী শোনানো হয়েছে । বাচ্চাদের বিচার সাগর মন্থন করতে হবে,
তখনই নতুন নতুন পয়েন্ট বের হবে । ভাষণ করতে হলে ভোরবেলা উঠে লেখা উচিত, তারপর তা
পাঠ করতে হবে । ভুলে যাওয়া পয়েন্ট আবার যোগ করতে হবে । এতে সুন্দর ধারণা হবে, তবুও
লেখা অনুসারে সবাই বলতে পারবে না । কিছু না কিছু পয়েন্ট ভুলেই যাবে । তাই তোমাদের
বোঝাতে হয় - কৃষ্ণ কে, তিনি তো আশ্চর্যজনক পৃথিবীর মালিক ছিলেন । ভারতই স্বর্গ ছিলো
। সেই স্বর্গের মালিক শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন । আমরা আপনাদের সেই সন্দেশ শোনাচ্ছি যে,
শ্রীকৃষ্ণ এখন আসছেন । রাজযোগ ভগবানই শিখিয়েছেন । তিনি এখনো শেখাচ্ছেন । পবিত্রতার
জন্য তিনি এখন পুরুষার্থ করাচ্ছেন, তোমাদের ডবল মুকুটধারী দেবতা বানানোর জন্য ।
এইসব কথা বাচ্চাদের স্মৃতিতে আসা উচিত । যার খুব ভালো অভ্যাস থাকবে, সে খুব ভালোভাবে
বোঝাতে পারবে । কৃষ্ণের চিত্রের লিখনও একনম্বর । এই লড়াইয়ের পরে স্বর্গের দ্বার খুলে
যাবে । এই লড়াইয়ের মধ্যেই স্বর্গ লুকিয়ে আছে । বাচ্চাদেরও খুবই খুশীতে থাকা উচিত ।
জন্মাষ্টমীতে মানুষ নতুন বস্ত্র আদি পরিধান করে কিন্তু তোমরা জানো যে, আমরা এখন এই
পুরানো শরীর ত্যাগ করে নতুন কাঞ্চন কায়া ধারণ করবো । কাঞ্চন কায়া তো বলা হয়, অর্থাৎ
সোনার কায়া । সেখানে আত্মাও পবিত্র, আবার শরীরও পবিত্র । এখন তোমাদের কায়া কাঞ্চন
নয় । নম্বরের ক্রমানুসারে তা তৈরী হচ্ছে । এই স্মরণের যাত্রাতেই কায়া কাঞ্চন তৈরী
হবে । বাবা জানেন যে, এমন অনেকেই আছে যাদের স্মরণ করারও বুদ্ধি নেই । এই স্মরণের
যখন পরিশ্রম করবে তখন তোমাদের বাণীও শক্তিশালী হবে । এখন সেই শক্তি কোথায়? তোমাদের
যোগবল নেই । লক্ষ্মী - নারায়ণ হওয়ার মতো মুখও তো চাই, তাই না । তেমন শিক্ষাও চাই ।
কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বোঝানো খুব সহজ । কৃষ্ণকে বলা হয় শ্যাম সুন্দর ।
কৃষ্ণকেও কালো, নারায়ণকেও কালো আবার রামকেও কালো বানিয়ে দিয়েছে । বাবা বলেন, আমার
বাচ্চারা যারা প্রথমে জ্ঞান চিতায় বসে স্বর্গের মালিক হয়েছিলো, তারপর তারা কোথায় চলে
গেল ! তারা কাম চিতায় বসে নম্বরের ক্রমানুসারে নামতে থেকেছে । এই সৃষ্টিও সতোপ্রধান,
সতঃ, রজঃ, তমঃ হয়ে যায় । মানুষের অবস্থাও এমনই হয় । কাম চিতায় বসে সবাই শ্যাম
অর্থাৎ কালো হয়ে গেছে । আমি এখন এসেছি তোমাদের সুন্দর বানাতে । আত্মাকে সুন্দর করা
হয় । বাবা প্রত্যেকেরই আচরণ দেখে বুঝতে পারেন যে - এ মন, বচন এবং কর্মে কিভাবে চলে
। কিভাবে কর্ম করে, তাও জানতে পারা যায় । বাচ্চাদের চলন তো একনম্বর হওয়া উচিত ।
মুখ থেকে সর্বদা রত্ন নির্গত হওয়া উচিত । কৃষ্ণ জয়ন্তীতে বোঝানো খুবই ভালো । তখন
শ্যাম এবং সুন্দরের বিষয় যেন থাকে । কৃষ্ণকেও কালো, তারপর নারায়ণ এবং রাধাকেও কেন
কালো বানানো হয় ? শিবলিঙ্গতেও কালো পাথর রাখা হয় । এখন তিনি তো কালোই নন । শিব কি
আর ওরা কি জিনিস তৈরী করে । এইসব বিষয় বাচ্চারা, তোমরাই জানো । কেন তাঁদের কালো
বানানো হয়, তোমরা এইসব বিষয়ের উপরও বোঝাতে পারবে । এখন দেখবো যে, বাচ্চারা কি সেবা
করে । বাবা তো বলেন - এই জ্ঞান সব ধর্মের মানুষের জন্য । তাদেরও বলতে হবে যে - বাবা
বলছেন, আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের জন্ম - জন্মান্তরের পাপ কেটে যাবে । তোমাদের
পবিত্র হতে হবে । তোমরা যে কাউকেই রাখী পড়াতে পারো । ইউরোপিয়নদেরও রাখী বাঁধতে পারো
। যে কেউই হোক না কেন, তোমরা তাদের বলবে - ভগবান উবাচঃ তো অবশ্যই কোনো শরীরের
দ্বারাই বলবেন, তাই না । তিনি বলেন - "মামেকম্ ( একমাত্র আমাকে) স্মরণ করো" । দেহের
সব ধর্ম ত্যাগ করে নিজেকে আত্মা মনে করো । বাবা কতো বোঝান, তবুও বুঝতে না পারলে বাবা
মনে করেন, এর ভাগ্যে নেই । এ তো বুঝবেই যে, শিববাবা আমাদের পড়ান । রথ (শরীর ) ছাড়া
তো তিনি পড়াতে পারেন না । এই ইঙ্গিত দেওয়াই হলো যথেষ্ট । কোনো কোনো বাচ্চার বোঝানোর
অভ্যাস খুবই ভালো । বাবা - মাম্মার কথা তো বুঝতেই পারো যে, এনারা উঁচু পদ পাবেন ।
মাম্মাও তো সেবা করতেন, তাই না । এই কথাও বোঝাতে হয় । মায়ারও অনেক প্রকারের রূপ হয়
। অনেকেই বলে যে, আমার মধ্যে মাম্মা আসে, শিববাবা আসে, কিন্তু নতুন নতুন পয়েন্টস তো
নির্ধারিত শরীরের দ্বারাই শোনাবেন, নাকি অন্য কারোর দ্বারা শোনাবেন? এ তো হতেই পারে
না । এমনিতে তো বাচ্চারা নিজেদেরও অনেক প্রকারের পয়েন্টস শোনায় । ম্যাগাজিনে কতো কথা
লেখা হয় । এমন নয় যে, মাম্মা - বাবা তাদের মধ্যে আসেন, তাঁরা লেখান । তা নয়, বাবা
তো এখানে প্রত্যক্ষভাবে আসেন, তাই তো তোমরা এখানে শোনার জন্য আসো । বাবা - মাম্মা
যদি অন্য কারোর মধ্যে আসতেন, তাহলে সেখানে বসেই তাদের কাছে পড়তো । তা নয়, এখানে
আসার জন্যই সবাই চেষ্টা করে । দূরে যারা থাকে, তারা আরো বেশী চেষ্টা করে । বাচ্চারা,
তোমরা তাই জন্মাষ্টমী উপলক্ষে অনেক সেবা করতে পারো । কৃষ্ণের জন্ম কবে হয়েছে, এও
কেউ জানে না । তোমাদের ঝুলি এখন ভর্তি হচ্ছে তাই তোমাদের খুশীতে থাকা উচিত, কিন্তু
বাবা দেখেন যে, কারোর কারোর মধ্যে খুশী একদমই নেই । শ্রীমতে না চলার জন্য যেন
প্রতিজ্ঞা করেই বসে আছে । সেবা পরায়ণ বাচ্চাদের তো কেবল সেবার নেশাই লেগে থাকবে ।
তারা মনে করে যে, বাবার সেবা যদি না করি, কাউকে যদি পথ না দেখাই তাহলে তো আমরা
অন্ধই রয়ে গেলাম । এ তো বোঝার মতো কথা, তাই না । ব্যাজেও কৃষ্ণের চিত্র আছে, তোমরা
এর উপরও বোঝাতে পারো । কাউকে জিজ্ঞেস করো, এনাকে কালো কেন দেখানো হয়েছে, কেউ বলতে
পারবে না । শাস্ত্রে লিখে দিয়েছে যে, রামের স্ত্রীকে হরণ করা হয়েছিলো, কিন্তু এমন
কোনো ঘটনা সেখানে হয় না ।
তোমরা ভারতবাসীরাই
পরীস্তানী ছিলে, এখন তোমরা কবরস্থানী হয়ে গেছো, আবার জ্ঞান চিতায় বসে দৈব গুণ ধারণ
করে পরীস্থানী হও । এই সেবা তো বাচ্চাদের করতেই হবে । সবাইকে খবর দিতে হবে । এতে
বৃহৎ বুদ্ধির প্রয়োজন । এমন নেশা থাকা উচিত যে - আমাদের ভগবান পড়ান । আমরা ভগবানের
সঙ্গে থাকি । আমরা ভগবানের সন্তানও,আবার তাঁর কাছে পড়ি । বোর্ডিংয়ে থাকলে বাইরের
সঙ্গ লাগে না । এখানেও তো স্কুল, তাই না । খ্রীস্টানদের স্বভাব - চরিত্রও খুব
সুন্দর ছিলো, এখন আর তা নেই, সকলেই তমোপ্রধান এবং পতিত । এই পতিত আত্মারা দেবতাদের
সামনে গিয়ে মাথা ঠোকে । সেই দেবতাদের কতো মহিমা । সত্যযুগে সকলের চরিত্রই দৈবী ছিলো,
এখন সকলেই আসুরী চরিত্রের । তোমরা যদি এমন - এমনভাবে ভাষণ দাও, তাহলে সকলেই শুনে
খুশী হয়ে যাবে । ছোটো মুখে বড় কথা - একথা কৃষ্ণের জন্য বলা হয় । এখন তোমরা কতো বড়
কথা শোনো, এতো বড় হওয়ার জন্য । তোমরা যে কাউকেই রাখী বাঁধতে পারো । বাবার খবর তো
সবাইকেই দিতে হবে । এই লড়াই স্বর্গের দ্বার খোলে । তোমাদের এখন পতিত থেকে পবিত্র হতে
হবে । বাবাকে স্মরণ করতে হবে । তোমরা দেহধারীকে স্মরণ করো না । এক বাবাই সকলের সদগতি
করেন । এ হলো আয়রন এজেড ওয়ার্ল্ড । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতেও পুরুষার্থের
নম্বর অনুসারে ধারণা হয় । স্কুলেও যেমন স্কলারশিপ নেওয়ার জন্য পরিশ্রম করে ।
এখানেও কতো বড় স্কলারশিপ । এখানে সেবাও অনেক বড় । মায়েরাও চিত্র দেখিয়ে অনেক সেবা
করতে পারে । কৃষ্ণের কালো, নারায়ণের কালো, রামচন্দ্রেরও কালো, শিবেরও কালো, এইসব
চিত্র দেখিয়ে সকলকে বোঝাও । দেবতাদের কেন কালো বানানো হয়েছে? শ্যাম - সুন্দর ।
শ্রীনাথের মন্দিরে যাও তো সেখানে সম্পূর্ণ কালো চিত্র । তাই এই সমস্ত চিত্র একত্রিত
করা উচিত । তোমাদের বাবার চিত্রও দেখানো উচিত । শ্যাম - সুন্দরের অর্থ বুঝিয়ে বলো,
তোমরাও যদি এখন রাখী বেঁধে কাম চিতা থেকে নেমে জ্ঞান চিতায় বসো, তাহলে সুন্দর (গৌর
বর্ণ এর) হয়ে যাবে । এখানেও তোমরা সেবা করতে পারো । তোমরা খুব সুন্দর ভাষণ দিয়ে
বুঝিয়ে বলতে পারো যে, এঁদের কেন কালো করা হয়েছে? শিবলিঙ্গকেও কালো কেন বানানো
হয়েছে ! বলো, সুন্দর আর শ্যাম কেন বলা হয়, আমরা বুঝিয়ে বলবো । এতে কেউই বিরক্ত হবে
না । সেবা তো খুবই সহজ । বাবা তো বোঝাতেই থাকেন - বাচ্চারা, তোমরা ভালো গুণ ধারণ করো,
বংশের নাম উজ্জ্বল করো । তোমরা এখন জানো যে, আমরা হলাম উঁচুর থেকেও উঁচু ব্রাহ্মণ
কুলের । এরপর রাখী বন্ধনের অর্থও তোমরা কাউকেই বোঝাতে পারো । তোমরা বারবনিতাদেরও
বুঝিয়ে রাখী বাঁধতে পারো । তোমাদের সঙ্গে যেন চিত্রও থাকে । বাবা বলেন যে - মামেকম্
স্মরণ করো, এই ফরমান পালন করলে তোমরা সুন্দর হয়ে যাবে । অনেক যুক্তি রয়েছে । কেউ
বিরক্ত হবে না । কোনো মানুষই কারোর সদগতি করতে পারে না, কেবল সেই এক ছাড়া । রাখী
বন্ধনের দিন না থাকলেও যে কোনোদিন রাখী বাঁধতে পারো । এ তো অর্থ বোঝার কথা । রাখী
যখন চায় তখনই বাঁধতে পারে । তোমাদের কর্তব্যই হলো এটা । বলো, বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা
করো । বাবা বলেন, মামেকম্ স্মরণ করো, তাহলে তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে । তোমরা মসজিদে
গিয়েও ওদের বোঝাতে পারো । বলবে, আমরা রাখী বাঁধার জন্য এসেছি । এই কথা তোমাদেরই
বোঝানোর অধিকার আছে । বাবা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমাদের পাপ দূর হবে,
তোমরা পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে । এখন তো পতিত দুনিয়া, তাই না ।
অবশ্যই একসময় গোল্ডেন এজ ছিলো, এখন হলো আয়রন এজ । তোমরা গোল্ডেন এজে ঈশ্বরের কাছে
যেতে চাও না? এমনভাবে শোনাও তাহলে চট করে (বাবার) চরণে এসে পড়বে। আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন সুপ্রভাত ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
জ্ঞান রত্নের সাগরের থেকে যে অবিনাশী জ্ঞান রত্ন প্রাপ্ত হচ্ছে, তার ভ্যালু রাখতে
হবে । বিচার সাগর মন্থন করে নিজের মধ্যে জ্ঞান রত্ন ধারণ করতে হবে । মুখ থেকে সর্বদা
যেন রত্নই নির্গত হয় ।
২ ) স্মরণের যাত্রায়
থেকে বাণীকে ধারালো বানাতে হবে । এই স্মরণেই আত্মা কাঞ্চন হবে, তাই স্মরণ করার কায়দা
শিখতে হবে ।
বরদান:-
আমার
ভাব-এর সূক্ষ্ম স্বরূপেরও ত্যাগী সদা নির্ভয়, নিশ্চিন্ত বাদশাহ ভব
আজকের দুনিয়াতে ধনও
আছে আর ভয়ও রয়েছে । যত ধন ততই ভয়ে ভীত হয়ে খেতে বসে বা ঘুমােতে যায়। যেখানে আমার
ভাব আছে সেখানে ভয় অবশ্যই থাকবে। কোনও সোনা হিরাও যদি আমার হয় তো ভয় থাকবে। কিন্তু
যদি আমার এক শিববাবা আছে তাহলে নির্ভয় হয়ে যাবে। তো সূক্ষ্ম রূপেও আমার-আমারকে চেক
করে তার ত্যাগ করো তো নির্ভয়, নিশ্চিন্ত বাদশাহ থাকার বরদান প্রাপ্ত হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
অন্যদের মতামতকে সম্মান দাও - তাহলে তোমাদের সম্মান স্বভাবতঃই প্রাপ্ত হবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের অনুভবী হও
একদিকে হলো অসীমের
বৈরাগ্য, অন্যদিকে বাবার সমান হয়ে বাবার লভ্ - এ লীন থাকো। এক সেকেন্ড আর এক
সংকল্পও এই লভলীন অবস্থা থেকে নিচে এসো না। এইরকম লভলীন বাচ্চাদের সংগঠনই বাবাকে
প্রত্যক্ষ করাবে। তোমরা নিমিত্ত আত্মারা পবিত্র প্রেম আর নিজের প্রাপ্তিগুলির দ্বারা
সবাইকে শ্রেষ্ঠ পালনা দাও, যোগ্য বানাও অর্থাৎ যোগী বানাও।