18.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
নিজেই নিজের উপরে কৃপা করো, বাবা যে শ্রীমৎ দেন সেই অনুসারে চলতে থাকো, বাবার শ্রীমৎ
হলো - বাচ্চারা টাইম ওয়েস্ট ক'রো না, সঠিক কার্য করো"
প্রশ্নঃ -
যারা ভাগ্যশালী
বাচ্চা, তাদের মুখ্য ধারণা কি হবে?
উত্তরঃ
ভাগ্যশালী
বাচ্চারা সকাল-সকাল উঠে বাবাকে অত্যন্ত প্রেমপূর্বক স্মরণ করবে। বাবার সাথে
মিষ্টি-মিষ্টি কথা বলবে। কখনো নিজের প্রতি নির্দয় হবে না। তারা পাস উইথ অনার হওয়ার
পুরুষার্থ করে নিজেকে রাজ্য-ভাগ্যের উপযি করে তুলবে।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা
বাবার সম্মুখে বসে রয়েছে, তারা জানে যে - ইনি আমাদের অসীম জগতের পিতা আর আমাদের
অসীম জগতের সুখ প্রদানের জন্য শ্রীমৎ দিচ্ছেন। তাঁর উদ্দেশ্যে গাওয়াও হয় -- করুণাময়,
লিবারেটর.... অনেক মহিমা-কীর্তন করে। বাবা বলেন, শুধু মহিমারও কথা নয়। বাবার
দায়িত্ব হলো বাচ্চাদের মত প্রদান করা। অসীম জগতের বাবাও তাই মত (শ্রীমৎ) প্রদান
করেন। বাবা যখন উচ্চ থেকেও উচ্চ তখন অবশ্যই তাঁর মতও উচ্চ থেকেও উচ্চ হবে। মত গ্রহণ
করে আত্মা, ভালো-মন্দ কাজ আত্মাই করে। এ'সময় দুনিয়ায় পাওয়া যায় রাবণের মত। বাচ্চারা,
তোমরা পাও রামের মত। রাবণের মতে নাজেহাল হয়ে উল্টো কর্ম করে। বাবা মত দেন সঠিক, ভালো
কর্ম করো। সর্বাপেক্ষা ভালো কর্ম হলো নিজের উপরে কৃপা করা। তোমরা জানো যে, আমরা
আত্মারা সতোপ্রধান ছিলাম, অত্যন্ত সুখী ছিলাম কিন্তু রাবণের মত পাওয়ার পর তোমরা
তমোপ্রধান হয়ে গেছো। পুনরায় এখন বাবা মত দেন যে - এক, বাবার স্মরণে থাকো। তারপর
নিজের উপর কৃপা করো - এই মত দেন। বাবা কৃপা করেন না। বাবা শ্রীমৎ দেন যে,
এমন-এমনভাবে করো। নিজের উপরে নিজেই কৃপা করো। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো এবং নিজের
পতিত-পাবন বাবাকে স্মরণ করো তবেই তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। বাবা পরামর্শ দেন, তোমরা
কিভাবে পবিত্র হবে। বাবা-ই পতিতকে পবিত্র করেন। তিনি শ্রীমৎ দেন। যদি ওনার মতানুসারে
না চলে তবে তা হলো নিজের প্রতি নির্দয়তা। বাবা শ্রীমৎ দেন - বাচ্চারা, টাইম
ওয়েস্ট কোরো না। এই পাঠ পাকা করে নাও যে, আমরা হলাম আত্মা। শরীর নির্বাহের জন্য
অবশ্যই কাজ-কর্ম করো তথাপি সময় বের করে যুক্তি রচনা করো। কর্ম করলেও আত্মার বুদ্ধি
বাবার দিকেই থাকা উচিত। যেমন প্রেমিক-প্রেমিকারাও তো কাজ করে, তাই না!
পরস্পর-পরস্পরের প্রতি প্রেমাসক্ত হয়ে পড়ে। এখানে এমন হয় না। তোমরা ভক্তিমার্গেও
স্মরণ করো। কেউ-কেউ বলে কিভাবে স্মরণ করবো? আত্মার, পরমাত্মার রূপ কেমন, যে স্মরণ
করবো? কারণ ভক্তিমার্গে গায়ন করা হয় যে, পরমাত্মা নাম-রূপের ঊর্ধ্বে। কিন্তু এমনও
নয়। বলাও হয়, ভ্রুকুটির মধ্যভাগে আত্মা নক্ষত্রের মতন তবে কেন বলা হয় যে আত্মা কি,
তাকে দেখতে পারি না। সে (আত্মা) তো জানার মতনই জিনিস। আত্মাকেও জানা যায়,
পরমাত্মাকেও জানা যায়। এ অতি সূক্ষ্ম বস্তু। জোনাকির থেকেও সূক্ষ্ম। শরীর থেকে
কিভাবে নির্গত হয়ে যায়, জানাও যায় না। আত্মা আছে, সাক্ষাৎকার হয়। আত্মার সাক্ষাৎকার
হলেও তাতে কি। সে তো নক্ষত্রের মতন সূক্ষ্ম। নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো।
যেমন আত্মা, তেমনই পরমাত্মাও সোল (আত্মা)। কিন্তু পরমাত্মাকে বলা হয় - সুপ্রীম সোল।
তিনি জন্ম-মৃত্যুতে (চক্রে) আসেন না। আত্মাকে সুপ্রীম তখনই বলা হয় যখন সে
জন্ম-মৃত্যুরহিত হয়। এছাড়া মুক্তিধামে সকলকেই পবিত্র হয়ে যেতে হবে। তারমধ্যেও
নম্বরের ক্রমানুসারে রয়েছে, যারা হিরো-হিরোইনের পার্ট প্লে করে। আত্মাদের মধ্যে
নম্বরের ক্রমানুসার তো রয়েছে, তাই না! নাটকেও কেউ অধিক পারিশ্রমিক পায়, কেউ কম পায়।
লক্ষ্মী-নারায়ণের আত্মাকে মানুষের আত্মাদের মধ্যে সুপ্রীম বলা হবে। যদিও পবিত্র
সকলেই হয় তথাপি তাঁদের নম্বরের ক্রমানুসারে মুখ্য পার্ট। কেউ মহারাজা, কেউ দাস-দাসী,
কেউ প্রজা। তোমরা হলে অ্যাক্টর্স। তোমরা জানো যে, এতসব দেবতারা নম্বরের
ক্রমানুসারেই হয়। ভালো পুরুষার্থ করলে উচ্চ আত্মা হবে, উচ্চপদ প্রাপ্ত করবে।
তোমাদের এই স্মৃতি এসেছে যে, আমরা কিভাবে ৮৪ জন্ম নিয়েছি। এখন বাবার নিকটে যেতে হবে।
বাচ্চাদের এই খুশীও রয়েছে আবার এই নেশাও রয়েছে। সকলেই বলে আমরা নর থেকে নারায়ণ অর্থাৎ
বিশ্বের মালিক হবো। তবে তো তেমনভাবেই পুরুষার্থ করতে হবে। পুরুষার্থের নম্বরের
ক্রমানুসারেই পদ প্রাপ্ত হয়। নম্বরের ক্রমানুসারেই সকলের (নিজ-নিজ) পার্ট রয়েছে। এই
ড্রামা পূর্ব-নির্ধারিত।
এখন বাবা তোমাদের
শ্রেষ্ঠ মত দিচ্ছেন। যেভাবেই হোক বাবাকে স্মরণ করো তবেই বিকর্ম বিনাশ হবে, তোমরা
তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। মাথায় অনেক পাপের বোঝা রয়েছে। সে'গুলিকে যে
করেই হোক এখানেই শেষ করতে হবে তবেই আত্মা পবিত্র হবে। তমোপ্রধানও তোমরা আত্মারাই
হয়েছো আর সতোপ্রধানও আত্মাকেই হতে হবে। এ'সময় সর্বাধিক বিকারী ভারতই। এই খেলা
ভারতের উপরেই। বাকি সব তো শুধু ধর্মস্থাপন করতে আসে। পুনর্জন্ম নিতে-নিতে পরে সকলেই
তমোপ্রধান হয়ে যায়। স্বর্গের মালিক তোমরা হও। তোমরা জানো, ভারত অত্যন্ত মহান দেশ
ছিল। এখন কত গরীব, গরীবকেই সকলে সাহায্য করে। প্রতিটি বিষয়ে ভিক্ষা চাইতেই থাকে।
পূর্বে অনেক আনাজপাতি এখান থেকে (ভারত) যেত। এখন দরিদ্র হয়ে পড়ায় রিটার্ন সার্ভিস
হচ্ছে। যা নিয়ে গেছে তাই-ই ঋণ হিসেবে পাচ্ছে। কৃষ্ণ এবং খ্রীস্টান - রাশি একই।
খ্রীস্টানরাই ভারতকে গ্রাস করেছে। এখন ড্রামানুসারে পুনরায় তারা পরস্পর নিজেদের
মধ্যে লড়াই করে আর বাচ্চারা, মাখন তোমরা পেয়ে যাও। এমন নয় যে, কৃষ্ণের মুখে মাখন
ছিল। এ তো শাস্ত্রে লেখা রয়েছে। সমগ্র দুনিয়া কৃষ্ণের হাতে থাকে। তোমরা সমগ্র
বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে আমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাই তাহলে
কত খুশীতে থাকা উচিত। তোমাদের প্রতি কদমে পদম (পদ্মগুণ ভাগ্য) রয়েছে। শুধু একমাত্র
লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্যই তো ছিল না। রাজবংশ ছিল, তাই না! যেমন রাজা-রানী তেমনই প্রজা
- সকলেরই পা-এ পদমগুণ ছিল অর্থাৎ সকলের কাছেই পদ্মগুণ ঐশ্বর্য্য ছিল । ওখানে অগণিত
পয়সা ছিল। পয়সা-কড়ির জন্য কেউ পাপাদি করতো না, সেখানে অগাধ ধন-সম্পদ থাকে।
আলাদিন-আশ্চর্য প্রদীপের নাটক আছে, তাই না! আল্লাহ্ যিনি আলাদিন অর্থাৎ যিনি
দেবী-দেবতা ধর্ম স্থাপন করেন। সেকেন্ডে জীবনমুক্তি দিয়ে দেন। সেকেন্ডে সাক্ষাৎকার
হয়ে যায়। কারুণের খাজানা (অসীম ধন-সম্পদ) দেখানো হয়েছে। মীরা কৃষ্ণকে সাক্ষাৎকার করে
নৃত্য করতো। ওটা হলো ভক্তিমার্গ। এখানে ভক্তিমার্গের কোনো কথা নেই। তোমরা
প্র্যাকটিক্যালি বৈকুন্ঠে গিয়ে রাজত্ব করবে। ভক্তিমার্গে শুধু সাক্ষাৎকার হয়।
বাচ্চারা, এইসময় তোমাদের এইম অবজেক্টের সাক্ষাৎকার হয়, তোমরা জানো যে, আমরা এমন হবো।
বাচ্চারা ভুলে যায় তাই তাদের ব্যাজ দেওয়া হয়। এখন আমরা অসীম জগতের পিতার সন্তান
হয়েছি। কত খুশী হওয়া উচিত। এ তো প্রতি মুহূর্তে পাকা করে দেওয়া উচিত। কিন্তু মায়া
বিরোধিতা করে তখন সেই খুশী উড়ে যায়। বাবাকে স্মরণ করতে থাকলে নেশা চড়ে থাকবে - বাবা
আমাদের বিশ্বের মালিক করে দেন। পুনরায় মায়া ভুলিয়ে দেয় তখন কিছু না কিছু বিকর্ম হয়ে
যায়। বাচ্চারা, তোমাদের স্মৃতি ফিরে এসেছে যে - আমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছি, আর কেউ ৮৪
জন্ম নেয় না। এও বুঝতে হবে - যত আমরা স্মরণ করবো ততই উচ্চপদ লাভ করবো। পুনরায়
নিজ-সমও তৈরী করতে হবে, প্রজা তৈরী করতে হবে। চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম। তীর্থেও
সবার আগে নিজে যায়, তারপর আত্মীয় পরিজন ইত্যাদিদেরও একত্রিত করে নিয়ে যায়। তাই
তোমরাও প্রেমপূর্বক সকলকে বোঝাও। সকলেই বুঝবে না। একই ঘরে বাবা বুঝবে কিন্তু সন্তান
বুঝবে না। মাতা-পিতা বাচ্চাদের যতই বলুক যে, এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ো
না, তবু মানবে না। বিরক্ত করে। যারা এখানকার স্যাপলিং হবে, তারাই এসে বুঝবে। এই
ধর্মের স্থাপনা দেখো কিভাবে হয়। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্যাপলিং রোপন করা হয় না।
তারা উপর থেকে আসে। তাদের শিষ্যরাও আসতে থাকে। ইনি স্থাপন করেন আর সকলকে পবিত্র করে
নিয়ে যান। তাই ওনাকে সদ্গুরু লিবারেটর বলা হয়। সত্যিকারের গুরু একজনই হয়। মানুষ কখনো
কারোর সদ্গতি করে না। সদ্গতিদাতা একজনই, ওনাকে সদ্গুরু বলা হয়। ভারতকে সত্যখন্ডে
পরিনতও তিনি করেন, রাবণ অসত্য খন্ডে পরিণত করে। বাবার উদ্দেশ্যে অসত্য, দেবতাদের
উদ্দেশ্যে অসত্য কথা বলে। তবেই তো বাবা বলেন, হিয়ার নো ইভিল... একে বলা হয় বেশ্যালয়।
সত্যযুগ হলো শিবালয়। মানুষ কি বোঝে, না বোঝে না। সে তো নিজের মতানুসারেই চলে। কত
লড়াই-ঝগড়া চলতেই থাকে। সন্তান মা-কে, স্বামী তার স্ত্রীকে মারতে দেরী করে না। তারা
পরস্পরকে হত্যাও করতে থাকে। বাচ্চা যখন দেখে, বাবার কাছে প্রভূত সম্পত্তি আছে কিন্তু
তা দেয় না তখন মারতেও দেরী করে না। কেমন নোংরা দুনিয়া। এখন তোমরা কি হতে চলেছো। এই
তোমাদের এইম অবজেক্ট দাঁড়িয়ে রয়েছে। তোমরা তো শুধু বলতে যে -- হে পতিত-পাবন, এসে
আমাদের পবিত্র করো। এমন কি বলতে যে এসে বিশ্বের মালিক করে দাও, না তা বলতে না।
গডফাদার হেভেন স্থাপন করেন তাহলে আমরা হেভেনে কেন নেই। পুনরায় রাবণ তোমাদের নরকবাসী
করে দেয়। কল্পের আয়ু লক্ষ-লক্ষ বছর বলে দেওয়ায় সব ভুলে গেছে। বাবা বলেন, তোমরা
স্বর্গের মালিক ছিলে। পুনরায় (৮৪ জন্ম) পরিক্রমা করে নরকের মালিক হয়েছো। এখন বাবা
তোমাদের পুনরায় হেভেনের মালিক করে দেন। তিনি বলেন - মিষ্টি আত্মা-রূপী বাচ্চারা,
বাবাকে স্মরণ করো তবেই তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। তমোপ্রধান হতে
আধাকল্প লেগেছে, বরং সারা কল্পই লেগেছে কারণ কলা তো কম হতে থাকে। এ'সময় কলাহীন হয়ে
পড়ে। তারা বলে যে - আমি নির্গুণী, আমার মধ্যে কোনো গুণ নেই, এর অর্থ কত পরিষ্কার।
এখানে আবার নির্গুণী বালকদের সংস্থাও রয়েছে। বালকের মধ্যে কোনো গুণ নেই। তথাপি
বালকদের মহাত্মাদের থেকেও উচ্চ বলা হয় কারণ তারা বিকারের কথা জানে না। মহাত্মারা তো
বিকার সম্বন্ধে অবহিত সেই কারণেই তারা ভুল কথা বলে। মায়া সম্পূর্ণ অধার্মিক করে দেয়।
গীতা পড়েও, আবার বলেও ভগবানুবাচ - কাম মহাশত্রু, এ আদি-মধ্য-অন্ত পর্যন্ত দুঃখ দেবে
তথাপি পবিত্রতা ধারণে বিঘ্ন উৎপন্ন করে। সন্তান যদি বিবাহ না করতে চায় তখন রুষ্ট হয়ে
পড়ে। বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমাদের শ্রীমতানুসারে চলতে হবে। যারা ফুল হওয়ার নয়
তাদের যতই বোঝাও তারা মানবে না। কোথায় বাচ্চারা বলে যে আমরা বিবাহ করবো না তখন
মাতা-পিতা কত অত্যাচার করে।
বাবা বলেন, যখন
জ্ঞান-যজ্ঞ রচনা করি তখন অনেকপ্রকারের বিঘ্ন আসে। তিন পা পৃথিবীও (জায়গা) দেয় না।
তোমরা শুধু বাবার মতানুসারে স্মরণ করে পবিত্র হও, আর কোনো কষ্ট নেই। কেবল নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো। যেমন তোমরা আত্মারা এই শরীরে অবতরিত হও তেমনই
বাবাও অবতরিত হন। তাহলে কূর্মাবতার, মৎস্যাবতার কিভাবে হতে পারেন। কত গালি দেয়। তারা
বলে যে, প্রতিটি কনায় ভগবান রয়েছেন। বাবা বলেন, আমার এবং দেবতাদের গ্লানি করে।
বাচ্চারা, আমাকে আসতে হয়, এসে পুনরায় তোমাদের উত্তরাধিকার দিই। আমি উত্তরাধিকার
দিই, রাবণ অভিশাপ দেয়। এও এক খেলা। যারা শ্রীমতে চলে না তখন বোঝা যায় এদের ভাগ্য এত
উঁচু নয়। ভাগ্যবানেরা সকাল-সকাল উঠে স্মরণ করবে, বাবার সঙ্গে কথা বলবে। নিজেকে আত্মা
নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো তবেই বিকর্ম বিনাশ হবে। খুশীর পারদ চড়তে থাকবে। যারা
পাস উইথ অনার হবে তারাই রাজ্য-ভাগ্যের যোগ্য হতে পারবে। শুধু একমাত্র
লক্ষ্মী-নারায়ণই রাজ্য করে না। রাজবংশ রয়েছে। এখন বাবা বলেন যে, তোমরা কত স্বচ্ছ
বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে যাও। একেই বলা হয় সৎসঙ্গ। সৎসঙ্গ একটাই হয়। বাবা সত্যিকারের
নলেজ দিয়ে সত্যখন্ডের মালিক করে দেন। কল্পের সঙ্গমেই সত্যের (পিতার) সঙ্গ পাওয়া যায়।
স্বর্গে কোনো রকমের সৎসঙ্গ হয় না।
এখন তোমরা হলে
স্যালভেশন আর্মি (মুক্তিযোদ্ধা)। তোমরা বিশ্বের তরী পার করে দাও। তোমাদের মুক্তিদাতা,
শ্রীমৎ প্রদানকারী হলেন বাবা। তোমাদের মহিমা অতি মহান। বাবার মহিমা, ভারতের মহিমা
অপার। বাচ্চারা, তোমাদের মহিমাও অপার। তোমরা ব্রহ্মান্ডেরও এবং বিশ্বেরও মালিক হয়ে
যাও। আমি শুধু ব্রহ্মান্ডের মালিক। পূজাও তোমাদের ডবল হয়। আমি তো দেবতা হই না যে
আমার দ্বৈত-পূজা হবে। তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারেই বোঝে আর খুশী হয়ে
পুরুষার্থ করে। পড়ায় তফাৎ কত। সত্যযুগে লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য চলে। সেখানে কোনো
মন্ত্রী থাকে না। লক্ষ্মী-নারায়ণ, যাদের ভগবান-ভগবতী বলা হয় তাঁরা মন্ত্রীর থেকে
পরামর্শ নেবে কী? যখন রাজারা পতিত হয়ে যায় তখন মন্ত্রী ইত্যাদিদের রাখে। এখন হলো
প্রজার উপর প্রজার রাজ্য। বাচ্চারা, তোমাদের এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য এসেছে।
জ্ঞান-ভক্তি-বৈরাগ্য। জ্ঞান শুধু আধ্যাত্মিক পিতাই শেখান আর কেউ শেখাতে পারে না।
বাবা-ই পতিত-পাবন সকলের সদ্গতিদাতা। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবাকে স্মরণের সাথে-সাথে নিজ-সম তৈরী করার সেবাও করতে হবে। 'চ্যারিটি বিগিন্স
অ্যাট হোম'.... সকলকে প্রেমপূর্বক বোঝাতে হবে।
২ ) এই পুরানো
দুনিয়ার থেকে অসীম জগতের বৈরাগী হতে হবে। হিয়ার নো ইভিল, সী নো ইভিল.... । সেই অসীম
জগতের পিতার সন্তান, তিনি আমাদের কারুনের খাজানা (অগনিত ধন-সম্পদ) দেন। সেই খুশীতেই
থাকতে হবে।
বরদান:-
প্রতিটি
সংকল্প, বাণী আর কর্মকে ফলদায়ক বানানো রূহানী প্রভাবশালী ভব
যখনই কারো সম্পর্কে
আসো তখন তার প্রতি মনের ভাবনা স্নেহ, সহযোগ আর কল্যাণের সাথে প্রভাবশালী হবে।
প্রত্যেক বাণী কাউকে সাহস, উৎসাহ দেওয়ার মতো প্রভাবশালী হবে। সাধারণ বার্তালাপ করে
যেন সময় চলে না যায়। এইরকমই প্রত্যেক কর্ম ফলদায়ক হবে - সেটা নিজের প্রতি হোক বা
অন্যের প্রতি। নিজেদের মধ্যেও প্রত্যেক রূপে প্রভাবশালী হও, তখন বাবাকে প্রত্যক্ষ
করার নিমিত্ত হতে পারবে।
স্লোগান:-
এমন
শুভচিন্তক মণী হও যে তোমাদের কিরণ বিশ্বকে আলোকিত করতে থাকবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
সময় অনুসারে শীতলতার
শক্তি দ্বারা প্রত্যেক পরিস্থিতিতে নিজের সংকল্পের গতিকে, বাণীকে শীতল আর
ধৈর্য্যশীল বানাও। যদি সংকল্পের স্পিড ফাস্ট হয় তাহলে অনেক সময় ব্যর্থ যাবে,
কন্ট্রোল করতে পারবে না এইজন্য শীতলতার শক্তি ধারণ করে নাও তাহলে ব্যর্থ থেকে বেঁচে
যাবে। এই কেন, কি, এইরকম নয় ওইরকম, এই ব্যর্থের ফাস্ট গতি থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।