23.10.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা এসেছেন বাচ্চারা তোমাদের সাঁতার শেখাতে, যার ফলে তোমরা এই দুনিয়া থেকে পার হয়ে যাও, এ'দুনিয়াই তোমাদের জন্য বদলে যায়"

প্রশ্নঃ -
যারা বাবার সহায়ক হয়, তাদের সহায়তার পরিবর্তে কি প্রাপ্ত হয়?

উত্তরঃ  
যেসকল বাচ্চারা এখন বাবার সহায়ক হয়, তাদের বাবা এমনভাবে তৈরী করেন যে আধাকল্প তাদের কারোর সহায়তা অথবা রায়(পরামর্শ) নেওয়ার প্রয়োজনই থাকে না। বাবা কত মহান, তিনি বলেন - বাচ্চারা, তোমরা যদি আমার সহায়তাকারী না হও তবে আমি কীভাবে স্বর্গ স্থাপন করতে সক্ষম হবো ।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি নম্বরের ক্রমানুসারে অতি মিষ্টি আত্মিক বাচ্চাদেরকে আধ্যাত্মিক পিতা বোঝান কারণ, অনেক বাচ্চারাই বোধবুদ্ধিহীন হয়ে গেছে। রাবণ অতিমাত্রায় বোধবুদ্ধিশূন্য করে দিয়েছে। এখন (বাবা) আমাদের কত বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন করে দেন। কেউ আই.সি.এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, মনে করে যে অনেক বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। দেখো, তোমরা এখন কত বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হও। একটু ভাবো তো যে, কে সঠিক অর্থে শিক্ষক? পড়ে কারা ! এই নিশ্চয়ও রয়েছে যে - আমরা প্রতি কল্পে অর্থাৎ প্রতি ৫ হাজার বছর পর বাবা-টিচার-সদ্গুরুর সঙ্গে মিলিত হতেই থাকি। বাচ্চারা শুধুমাত্র তোমরাই জানো যে - আমরা উচ্চ থেকেও উচ্চ বাবার থেকে কত উচ্চমার্গের উত্তরাধিকার লাভ করি। টিচারও তো উত্তরাধিকার দেন, শিক্ষাদান করে, তাই না! তোমাদের পড়িয়ে তোমাদের জন্য দুনিয়ারই পরিবর্তন ঘটান, নতুন দুনিয়ায় রাজত্ব করার জন্য। ভক্তিমার্গে কত মহিমা-কীর্তন করে। তোমরা ওনার দ্বারা উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছো। বাচ্চারা, এও তোমরাই জানো যে, পুরানো দুনিয়া এখন পরিবর্তিত হচ্ছে। তোমরা বলো যে - আমরা সবাই শিববাবার সন্তান। বাবাকেও আসতে হয় - পুরানো দুনিয়াকে নতুন করার জন্য। ত্রিমূর্তির চিত্রতেও দেখানো হয় যে, ব্রহ্মার দ্বারা নতুন দুনিয়ার স্থাপনা। তাহলে অবশ্যই ব্রহ্মা মুখ-বংশজাত ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী চাই। ব্রহ্মা তো নতুন দুনিয়া স্থাপন করে না। রচয়িতা হলেন বাবা। তিনি বলেন - আমি এসে যুক্তিযুক্তভাবে পুরানো দুনিয়ার বিনাশ করিয়ে নতুনট দুনিয়া গঠন করি। নতুন দুনিয়ার নিবাসীরা সংখ্যায় অল্প থাকে। গভর্নমেন্ট প্রচেষ্টা করতে থাকে যে, জনসংখ্যা কম হোক্। কম তো এখন হবে না। যুদ্ধে কোটি-কোটি মানুষ মারা যায় কিন্তু মানুষের সংখ্যা কি কমে, না কমে না, তবুও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতেই থাকে। এও তোমরাই জানো। তোমাদের বুদ্ধিতে বিশ্বের আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান রয়েছে। তোমরা নিজেদেরকে স্টুডেন্টও মনে করো। সাঁতারও শেখো। কথিতও রয়েছে, তাই না! - তরী মোর পার করে দাও। যে সাঁতার শেখে সে অত্যন্ত প্রখ্যাত হয়ে যায়। এখন তোমাদের সাঁতার কাটা দেখো কেমন, একদম উপরে চলে যাও পুনরায় এখানে আসো। তারা তো দেখায় যে, এত মাইল উপরে গেছে। তোমরা অর্থাৎ আত্মারা কত মাইল উপরে যাও। ওসব তো স্থূল বস্তু, যেগুলোর গণনা করা হয়। তোমাদের হলো অগণিত। তোমরা জানো, আমরা অর্থাৎ আত্মারা নিজেদের ঘরে ফিরে যাবো, যেখানে সূর্য, চন্দ্রাদি থাকে না। তোমাদের খুশী রয়েছে যে - ওটা আমাদের ঘর। আমরা ওখানকার বাসিন্দা। মানুষ ভক্তি করে, পুরুষার্থ করে - মুক্তিধামে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কেউই যেতে পারে না। মুক্তিধামে ভগবানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা করতে থাকে। অনেকপ্রকারের পদ্ধতি অবলম্বন করে। কেউ বলে, আমরা জ্যোতি মহাজ্যোতিতে বিলীন হয়ে যাব। কেউ বলে মুক্তিধামে যাবো। মুক্তিধাম কোথায় তা কারোর জানা নেই। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, বাবা এসেছেন নিজের ঘরে নিয়ে যাবেন বলে। মিষ্টি-মিষ্টি বাবা এসেছেন, আমাদের ঘরে নিয়ে যাওয়ার যোগ্য করে তোলেন। যার জন্য আধাকল্প পুরুষার্থ করেও হয়ে উঠতে পারিনি। না কেউ জ্যোতিতে বিলীন হয়ে যেতে পারে, না কেউ মুক্তিধামে যেতে পারে, না মোক্ষলাভ করতে পারে। যাকিছু পুরুষার্থ করে তা সবই ব্যর্থ হয়ে যায়। এখন তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণ কুলভূষণদের পুরুষার্থ সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। এই খেলা কিভাবে তৈরী হয়ে রয়েছে। তোমাদের এখন আস্তিক বলা হয়। তোমরা বাবাকে সঠিকভাবে জানো এবং বাবার মাধ্যমে সৃষ্টি-চক্রকেও জেনেছো। বাবা বলেন - মুক্তি-জীবনমুক্তির জ্ঞান কারোর মধ্যেই নেই। দেবতাদের মধ্যেও নেই। বাবাকে কেউ জানে না তাহলে কিভাবে কাউকে নিয়ে যাবে। কত অসংখ্য গুরু আছে, কতজন তাদের ফলোয়ার্স হয়। সত্যিকারের সদ্গুরু হলেন শিববাবা। তাঁর তো চরণ (পা) নেই। তিনি বলেন - আমার তো পা নেই। তাহলে আমি কিভাবে নিজের পূজা করাবো। বাচ্চারা বিশ্বের মালিক হয়ে যায়, তাদের দিয়ে কি পূজা করাবো, না তা করাবো না। ভক্তিমার্গে বাচ্চারা বাবার পায়ে পড়ে যায়। বাস্তবতঃ বাবার প্রপার্টীর মালিক হলো বাচ্চারা। কিন্তু তারা বিনম্রতা প্রদর্শন করে। ছোট বাচ্চাদি সকলেই গিয়ে পায়ে পড়ে। বাবা এখানে বলেন - তোমাদের পায়ে পড়া থেকেও মুক্ত করে দিই। বাবা কত মহান। তিনি বলেন - বাচ্চারা, তোমরা আমার সহায়তাকারী। তোমরা যদি সহায়ক না হতে তাহলে আমি কিভাবে স্বর্গ স্থাপন করতাম। বাবা বোঝান যে - বাচ্চারা, তোমরা এখন আমার সহায়ক হও, পুনরায় আমি তোমাদের এমন করে দেবো যে, আর কারোর সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজনই পড়বে না। তোমাদের কোনো রায় বা পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজনই পড়বে না। এখানে বাবা বাচ্চাদের সাহায্য নিচ্ছেন। তিনি বলেন - বাচ্চারা, এখন আর ছিঃ ছিঃ হয়ো না। মায়ার কাছে পরাজিত হয়ো না। তা নাহলে নাম কলঙ্কিত করে দেবে। বক্সিং যখন হয়, তাতে যখন কেউ জয়লাভ করে তখন সে বাহবা পায়। পরাজিতদের মুখ পীতবর্ণের(হলুদ) হয়ে যায়। এখানেও পরাজিত হয়। এখানে যারা পরাজিত হয় তাদের বলা হয় - মুখ কালো করে দিয়েছে। এসেছে সুন্দর অর্থাৎ পবিত্র হতে পুনরায় কি করে দেয়। সমস্ত উপার্জন শেষ হয়ে যায়, পুনরায় নতুন করে শুরু করতে হয়। বাবার সহায়ক হয়ে পুনরায় পরাজিত হলে বদনাম হয়ে যায়। দুটি পার্টি রয়েছে। এক হলো মায়ার খরিদ্দার (মুরীদ), আরেক হলো ঈশ্বরের। তোমরা বাবাকে ভালোবাসো। গায়নও রয়েছে বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি। তোমাদের হলো প্রীত-বুদ্ধি (সুবুদ্ধি)। তোমরা কি নাম কলঙ্কিত করবে, না তা করবে না। তোমরা হলে প্রীতবুদ্ধিসম্পন্ন, তবে কেন মায়ার কাছে পরাজিত হও। পরাজিতরা দুঃখ পায়। বিজয়ীদের উদ্দেশ্যে করতালি বাজিয়ে বাহবা (বাঃ বাঃ) দেয়। বাচ্চারা তোমরা মনে করো যে, আমরা তো পালোয়ান। এখন অবশ্যই মায়ার উপর বিজয়প্রাপ্ত করতে হবে। বাবা বলেন -- দেহ-সহ যাকিছু দেখো, সে'সব ভুলে যাও। মামেকম্ স্মরণ করো। মায়া তোমাদের সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান করে দিয়েছে। এখন পুনরায় সতোপ্রধান হতে হবে। মায়ার উপর বিজয়প্রাপ্ত করে জগতজীৎ হতে হবে। এ হলোই জয়-পরাজয়, সুখ-দুঃখের খেলা। রাবণ-রাজ্যে পরাজিত হতে হয়। বাবা পুনরায় এখন পাউন্ডের (অর্থের পরিমাপ) সমতুল মূল্যবান করে দেন। বাবা বুঝিয়েছেন - একমাত্র শিববাবার জয়ন্তীই হলো ওয়ার্থ পাউন্ড (মূল্যবান)। বাচ্চারা, এখন তোমাদের এইরকম লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে হবে। ওখানে প্রতি ঘরে দীপমালা থাকে, সকলের জ্যোতি জাগ্রত থাকে। মেইন পাওয়ার থেকে জ্যোতি জাগরিত হয়। বাবা কত সহজ রীতিতে বসে বোঝান। বাবা ছাড়া মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি আদরের দুলাল আর কে বলবে। আধ্যাত্মিক পিতাই বলেন - হে আমার মিষ্টি আদরের বাচ্চারা, তোমরা আধাকল্প ধরে ভক্তি করে এসেছো। ফিরে একজনও যেতে পারে না। বাবা-ই এসে সকলকে নিয়ে যান।

তোমরা সঙ্গমযুগে ভালোভাবে বোঝাতে পারো। বাবা কিভাবে এসে তোমাদের নিয়ে যান। দুনিয়ায় এই অসীম জগতের নাটকের বিষয় কারোরই জানা নেই। এ হলো অসীম জগতের ড্রামা। এও শুধু তোমরাই জানো, আর কেউ (এ বিষয়ে) বলতে পারে না। যদি বলে এ হলো অসীম জগতের ড্রামা তাহলে তার বর্ণনা দেবে কিভাবে? তোমরা এখানে ৮৪-র চক্রকে জানো। বাচ্চারা, তোমরাই জেনেছো, তাই তোমাদেরকেই স্মরণ করতে হবে। বাবা কত সহজভাবে বলেন। ভক্তিমার্গে তোমরা কত ধাক্কা খাও। তোমরা কত দূরে যাও স্নান করতে। একটি হ্রদ বা জলাশয় রয়েছে, কথিত আছে যে সেখানে ডুব দিলে পরীতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। এখন তোমরা জ্ঞানসাগরে ডুব দিয়ে পরীতে রূপান্তরিত হয়ে যাও। কেউ সুচারুরূপে সাজগোজ বা ফ্যাশন করলে তখন বলা হয়, এ তো যেন পরী হয়ে গেছে। তোমরাও এখন রত্নে পরিনত হচ্ছো। বাকি মানুষের তো উড়বার মতন পাখনাদিও থাকে না। এভাবে কেউ উড়তে পারে না। ওড়ে শুধুই আত্মা। আত্মা যাকে রকেটও বলা হয়, আত্মা কত ছোট। বাচ্চারা, যখন সকল আত্মারা যাবে, হতে পারে তখন তোমাদেরও সাক্ষাৎকার হবে। বুদ্ধি দ্বারা বুঝতে পারো যে - এখানে তোমরা বর্ণনা করতে পারো, হতে পারে যেমনভাবে বিনাশের সাক্ষাৎকার হয় সেভাবেই আত্মাদের দলও দেখতে পারো যে তারা কিভাবে যায়। হনুমান, গনেশ ইত্যাদিরা তো নেই। কিন্তু তাদের ভাবনা অনুযায়ী সাক্ষাৎকার হয়ে যায়। বাবা হলেন বিন্দু, ওনার বর্ণনা কিভাবে করবে? বলাও হয়, অতি ক্ষুদ্র নক্ষত্র যাকে এই নয়নের দ্বারা দেখতে পাবে না। শরীর কত বড়, যার দ্বারা কর্ম করতে হবে। আত্মা কত ছোট, তার মধ্যেই ৮৪-র চক্র নির্ধারিত। একজন মানুষও এমন নেই যাদের বুদ্ধিতে একথা রয়েছে যে - আমরা ৮৪ জন্ম কিভাবে নিই। কিভাবে আত্মায় পার্ট নির্ধারণ করা রয়েছে। বিস্ময়কর! আত্মাই শরীর ধারণ করে নিজের পার্ট প্লে করে। সেটা হলো সীমিত জগতের নাটক, আর এ হলো অসীম জগতের। অসীম জগতের পিতা এসে নিজের পরিচয় দেন। যারা ভালো-ভালো সার্ভিসেবেল বাচ্চা, তারা বিচারসাগর মন্থন করতে থাকে। কাকে কিভাবে বোঝাবে। তোমরা এক-একজনের কাছে কত মাথা কুটতে থাকো। তথাপি বলে যে - বাবা, আমরা বুঝতেই পারি না। কেউ যদি না পড়ে তখন বলা হয় যে, এ তো প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন। তোমরা দেখো যে, এখানে তো কেউ-কেউ ৭ দিনেই অত্যন্ত খুশী হয়ে বলে - বাবার কাছে যাই। আবার কেউ-কেউ তো কিছুই বোঝে না। মানুষ শুধু বলে দেয় যে - প্রস্তরবুদ্ধি, পারশবুদ্ধি কিন্তু এর অর্থ জানে না। আত্মা পবিত্র হলে পারশনাথ হয়ে যায়। পারশনাথের মন্দিরও রয়েছে। সম্পূর্ণ সোনার মন্দির হয় না। উপরে সামান্য সোনায় মোড়া থাকে। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, আমরা বাগবান অর্থাৎ উদ্যান-পরিচারককে পেয়েছি, তিনি আমাদের কাঁটা থেকে ফুল হয়ে ওঠার যুক্তি বলে দেন। গায়নও তো রয়েছে তাই না! গার্ডেন অফ আল্লাহ্ । প্রথমের দিকে তোমাদের কাছে এক মুসলিম গিয়ে ধ্যানে মগ্ন হয়ে যেত - সে বলতো খুদা (ঈশ্বর) তাকে ফুল দিয়েছে। দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে যেত, ঈশ্বরের বাগিচা দেখতে পেতো। কিন্তু খুদার বাগিচা যে দেখাবে সে তো স্বয়ং খুদাই হবে। অন্য কেউ কিভাবে প্রত্যক্ষ করাবে? তোমাদের বৈকুন্ঠের সাক্ষাৎকার করান। খুদাই নিয়ে যান। স্বয়ং তিনি ওখানে থাকেন না। খুদা তো শান্তিধামে থাকেন। তোমাদের বৈকুন্ঠের মালিক করে দেন। কত ভাল-ভাল কথা তোমরা বুঝতে পারো। তখন আনন্দ হয়। অন্তরে অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিত - আমরা এখন সুখধামে যাচ্ছি। ওখানে দুঃখের কোনো কথাই নেই। বাবা বলেন - সুখধাম, শান্তিধামকে স্মরণ করো। ঘরকে কেন স্মরণ করবে না? আত্মা ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য কত মাথা কুটতে থাকে। জপ-তপ ইত্যাদি অনেকরকমের পরিশ্রম করে কিন্তু কেউই যেতে পারে না। বৃক্ষ (ঝাড়) থেকে নম্বরের ক্রমানুসারে আত্মারা আসতে থাকে, পুনরায় মাঝপথে কি করে ফিরে যেতে পারে, যখন বাবা-ই এখানে রয়েছেন। বাচ্চারা, তোমাদের প্রত্যহ বোঝাতে থাকেন যে - শান্তিধাম এবং সুখধামেকে স্মরণ করো। বাবাকে ভুলে যাওয়ার জন্যই দুঃখী হয়ে পড়ো। মায়ার জুতো পড়ে অর্থাৎ মায়ার দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হও। এখন আর মায়ার দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ো না । মুখ্য হলো - দেহ-অভিমান।

তোমরা এখনও পর্যন্ত যে পিতাকে স্মরণ করতে - হে পতিত-পাবন এসো, সেই পিতার নিকটে তোমরা এখন পড়ছো। তোমাদের ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট তোমাদের শিক্ষকও। বাবা-ই ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট। গন্যমান্য ব্যক্তিরা নিচে সর্বদা লেখে 'ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট'। বাবা বলেন - বাচ্চারা, দেখো আমি তোমাদের কিভাবে বসে বোঝাই। সুপুত্রদের প্রতিই বাবার ভালোবাসা রয়েছে, যারা কুপুত্র অর্থাৎ বাবার হয়ে পুনরায় ট্রেটর হয়ে যায়, বিকারে যায় তখন বাবা বলেন - এমন সন্তানের জন্ম না হলেই ভালো হতো। একজনের জন্য কতজনের নাম বদনাম হয়ে যায়। কতজন কষ্ট পায়। তোমরা এখানে কত উচ্চ কর্ম করছো। সমগ্র বিশ্বকে উদ্ধার করছো, আর তোমরা তিন পা মাটিও পাও না। বাচ্চারা, তোমরা কাউকে ঘর-পরিবার থেকে দূরে করে দাও না। তোমরা তো রাজাদেরকেও বলো যে - তোমরা দ্বিমুকুটধারী ছিলে, এখন পূজারী হয়ে গেছো। বাবা পুনরায় এখন তোমাদের পূজ্য (পূজন-যোগ্য) করছেন, তাহলে তা হওয়া উচিত, তাই না! একটু দেরী আছে। আমরা এখানে কারোর লক্ষ(অর্থ) নিয়ে কি করবো? দরিদ্ররাই রাজত্ব প্রাপ্ত করবে। বাবা তো দীননাথ, তাই না! তোমরা অর্থ-সহ বোঝ যে বাবাকে দীনদয়াল কেন বলা হয়? ভারতই কত দরিদ্র, তার মধ্যেও তোমরা দরিদ্র মাতারা রয়েছো। যারা বিত্তশালী তারা এই জ্ঞানকে গ্রহণ করতে পারে না। কত দরিদ্র অবলারা আসে, তাদের উপর অত্যাচার হয়। বাবা বলেন, মাতাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রভাতফেরীতেও সর্বপ্রথমে মাতারা থাকবে। ব্যাজও তোমাদের ফার্স্টক্লাস। এই ট্রান্সলাইটের চিত্র যেন তোমাদেরকে অগ্রভাগে থাকে। সকলকে শোনাও দুনিয়া পরিবর্তিত হচ্ছে। কল্প-পূর্বের মতন বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হচ্ছে। বাচ্চাদের বিচারসাগর মন্থন করতে হবে - কিভাবে সেবাকে কার্য-ব্যবহারে প্রয়োগ করবে। সময় তো লাগে, তাই না! আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বাবার প্রতি সম্পূর্ণ ভালোবাসা রেখে, তাঁর সহায়ক হতে হবে। মায়ার কাছে পরাজিত হয়ে কখনও নাম বদনাম করা উচিত নয়। পুরুষার্থ করে দেহ-সহ যাকিছু (দেহ-সম্বন্ধীয়) দেখতে পাওয়া যায় সে'সবই ভুলে যেতে হবে।

২ ) অন্তরে যেন এই খুশী থাকে যে, আমরা এখন শান্তিধাম, সুখধামে যাচ্ছি। বাবা ওবিডিয়েন্ট টিচার হয়ে আমাদের ঘরে নিয়ে যাওয়ার যোগ্য করে তোলেন। যোগ্য, সুপুত্র হতে হবে, কুপুত্র নয়।

বরদান:-
প্রতিটি সংকল্প, সময়, বৃত্তি আর কর্মের দ্বারা সেবা করে নিরন্তর সেবাধারী ভব

যেরকম বাবা তোমাদের কাছে অতিপ্রিয়, বাবা ছাড়া জীবন নেই, এইরকমই সেবা ছাড়া জীবন নেই। নিরন্তর যোগীর সাথে সাথে নিরন্তর সেবাধারীও হও। শুয়ে থাকার সময়ও সেবা হবে। শুয়ে থাকার সময় যদি কেউ তোমাদের দেখে তো তোমাদের চেহারা থেকে শান্তি, আনন্দের ভায়ব্রেশন অনুভব করবে। প্রত্যেক কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা বাবার স্মরণ মনে করিয়ে দেওয়ার সেবা করো। নিজের পাওয়ারফুল বৃত্তি দ্বারা ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দিতে থাকো। কর্ম দ্বারা কর্মযোগী ভব-র বরদান দিতে থাকো। প্রত্যেক কদমে পদমের উপার্জন জমা করতে থাকো তখন বলা হবে নিরন্তর সেবাধারী অর্থাৎ সার্ভিসেবল।

স্লোগান:-
নিজের আত্মিক পার্সোনালিটিকে স্মৃতিতে রাখো তাহলে মায়াজীৎ হয়ে যাবে।

অব্যক্ত ঈশারা :- স্বয়ং আর সকলের প্রতি মন্সা দ্বারা যোগের শক্তির প্রয়োগ করো

যেরকম বাণীর সেবা প্র্যাক্টিস করতে করতে বাণীতে শক্তিশালী হয়ে গেছো, এইরকম শান্তির শক্তিরও অভ্যাসী হতে থাকো। পরবর্তী সময়ে বাণী বা স্থুল সাধনের দ্বারা সেবার সময় পাবে না। এইরকম সময়ে শান্তির শক্তির সাধন প্রয়োজন হবে। কেননা যে যত মহান শক্তিশালী হয় সে ততই সূক্ষ্ম হয়। তো বাণীর থেকে শুদ্ধ সংকল্প হল সূক্ষ্ম এইজন্য সূক্ষ্মের প্রভাব শক্তিশালী হবে।