23-11-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
31-12-2007 মধুবন
“নতুন বছরে অখণ্ড মহাদানী, অখণ্ড নির্বিঘ্ন, অখণ্ড
যোগী এবং সদা সফলতা মূর্ত হও"
আজ বাপদাদা নিজের সামনে ডবল সভা দেখছেন। এক তো সাকারে সমুখে বসে আছে আর দ্বিতীয়তঃ,
দূরে বসেও হৃদয়ের নিকটে দেখা যাচ্ছে। উভয় সভার শ্রেষ্ঠ আত্মাদের মস্তকে আত্মদীপ
ঝলমল করছে। কত সুন্দর অত্যুজ্জ্বল দৃশ্য। এত সবাই এক সংকল্প, একরস স্থিতিতে স্থিত
পরমাত্ম ভালোবাসায় লাভলীন, একাগ্র বুদ্ধি দ্বারা স্নেহে সমাহিত, কত নিরুপম লাগছে।
তোমরাও সবাই আজ বিশেষভাবে নতুন বছর উদযাপন করার জন্য এখানে পৌঁছে গেছো। বাপদাদাও সব
বাচ্চার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে ঝলমলে আত্মদীপ দেখে প্রফুল্লিত হচ্ছেন।
আজকের দিন সঙ্গমের দিন। এক বছরের পুরাতনের বিদায় আর নতুন বছরের কল্যাণকারী ভাবনার
উদযাপন। নতুন বছর অর্থাৎ নতুন উদ্যম আর উৎসাহ। স্ব পরিবর্তনের উদ্যম, স্ব-মধ্যে
সর্বপ্রাপ্তি প্রাপ্ত হতে দেখে হৃদয়ে উৎসাহ থাকে। দুনিয়ার লোকেও এই উৎসব পালন করে,
তাদের জন্য একদিনের উৎসব আর তোমরা লাকি লাভলী বাচ্চাদের জন্য সঙ্গম যুগের সব দিন
উৎসব। কেননা, খুশির উৎসাহ বিদ্যমান। দুনিয়ার লোকে তো নিভে থাকা দীপ জ্বালিয়ে
বার্ষিকী উদযাপন করে এবং বাপদাদা চতুর্দিকের তোমরা এত সব জাগ্রত দীপকের সাথে নতুন
বছরের উৎসব উদযাপন করতে এসেছেন। উদযাপনের এই রীতি রেওয়াজ তো নামে মাত্র, কিন্তু
তোমরা সবাই উদ্দীপ্ত দীপক। নিজের প্রজ্জ্বলিত দীপ প্রতীয়মান হয় তো না! যা অবিনাশী
দীপ!
তো নতুন বছরে প্রত্যেকে হৃদয়ে স্ব-এর জন্য, বিশ্বের আত্মাদের জন্য কোনো নতুন
প্ল্যান বানিয়েছো? ১২টার পর নতুন বছর শুরু হয়ে যাবে। তো এই বছর কোন বিশেষ রূপে
উদযাপন করবে? যেমন পুরানো বছর বিদায় নেবে তো তেমনই তোমরাও সবাই পুরানো সঙ্কল্প,
পুরানো সংস্কার এসব বিদায় দেওয়ার সঙ্কল্প করেছো? বছরের সাথে সাথে তোমরাও পুরানোর
বিদায় দিয়ে নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্কল্প প্র্যাকটিক্যালে আনবে তো না! তো ভাবো
নিজের মধ্যে কী নবীনত্ব আনবে? কোন রকমের উৎসাহ- উদ্দীপনার নতুন তরঙ্গ ছড়াবে, কোন
রকম সঙ্কল্পের ভাইব্রেশন ছড়াবে ভেবেছো? কেননা, তোমরা সব ব্রাহ্মণ সমগ্র বিশ্বের
আত্মাদের জন্য পরিবর্তন-নিমিত্ত আত্মা। বিশ্বের ফাউন্ডেশন তোমরা, পূর্বজ, পূজ্য। তো
এই বছরে নিজের শ্রেষ্ঠ বৃত্তি দ্বারা কি ভাইব্রেশন ছড়াবে? ঠিক যেভাবে প্রকৃতি
চতুর্দিকে কখনো গরমের, কখনো ঠাণ্ডার, কখনো বসন্তের ভাইব্রেশন ছড়ায়। তো তোমরা
প্রকৃতির মালিক প্রকৃতিজিৎ কোন ধরণের ভাইব্রেশন ছড়াবে? যার দ্বারা অল্প সময়ের জন্য
হলেও আত্মাদের সুখ- নিশ্চিন্ততার অনুভব হবে। তার জন্য বাপদাদা এই ইশারা দিচ্ছেন যে,
যে ভাণ্ডারই প্রাপ্ত হয়েছে সেই সব ভাণ্ডার সময়োপযোগী করো আর সফলতা স্বরূপ হও।
বিশেষভাবে, সময়ের ভাণ্ডার কখনো যেন ব্যর্থ না হয়। এক সেকেন্ডও যেন ব্যর্থ না হয়, বরং
কার্যে প্রয়োগ করো। সময়কে সফল করো, প্রতিটা শ্বাসকে সফল করো, প্রতিটা সঙ্কল্প সফল
করো, সব শক্তি সফল করো, সব গুণ সফল করো। সফলতা মূর্ত হওয়ার এই বিশেষ বর্ষ উদযাপন করো।
কেননা, সফলতা তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার। সেই অধিকার কার্যে প্রয়োগ করে সফলতা মূর্ত
হও। কেননা, এখনের সফলতার প্রালব্ধ পুরো সময়ই প্রাপ্ত হবে। শ্বাস সফল করায়, তোমাদের
শ্বাসের সফলতার পরিণাম হিসেবে দেখ ভবিষ্যতেও সব আত্মা সম্পূর্ণ সময় সুস্থ থাকে।
অসুস্থতার লেশমাত্র থাকে না। ডক্টরসের ডিপার্টমেন্টই থাকে না। কারণ ডক্টরস কি রাজা
হয়ে যাবে? রাজা হয়ে যাবে না তো না! বিশ্বের মালিক হয়ে যাবে। কিন্তু এই সময় তোমরা
শ্বাস সফল করে থাকো। আর সকল আত্মার সুস্থ থাকার প্রালব্ধ প্রাপ্ত হয় । এরকমই
জ্ঞানের ভাণ্ডার, তার ফল স্বরূপ স্বর্গে তোমাদের নিজেদের রাজ্যে তোমরা এত বিচক্ষণ,
শক্তিমান হয়ে যাও যে সেখানে কোনো উজিরের থেকে পরামর্শ নেওয়ার আবশ্যকতা থাকে না।
নিজেরাই বিচক্ষণ শক্তিমান হয়। সমূহ শক্তি তোমরা সফল করে থাকো, তার প্রালব্ধ হিসেবে
সব শক্তি বিশেষভাবে ধর্ম সত্ত্বা, রাজ্য সত্ত্বা দুই বিশেষ শক্তি ও সত্ত্বা ওখানে
প্রাপ্ত হবে। গুণের ভাণ্ডার যখন সফল করছি তো তার প্রালব্ধ দেবতা পদের অর্থই হলো
দিব্যগুণধারী এবং সেইসঙ্গে এখন লাস্ট জন্মে তারা তোমাদের জড় মূর্তির পূজন করে, তো
কী মহিমা করে? সর্বগুণসম্পন্ন। তো এই সময়ের সফলতার প্রালব্ধ আপনা থেকেই প্রাপ্ত হয়ে
যায়। সেইজন্য চেক করো ভাণ্ডার পেয়েছ, ভাণ্ডারে সম্পন্ন হয়েছ, কিন্তু স্ব-এর জন্য এবং
বিশ্বের জন্য কতটা সফল করেছো? পুরানো বছর বিদায় দেবে, তো পুরানো বছরে জমা ভাণ্ডার
সফল করেছ? কতটা করেছো? এটা চেক করো আর আগামী বছরেও এই সমুদয় ভাণ্ডার ব্যর্থ করার
পরিবর্তে সফল করতেই হবে। এমনকি, এক সেকেন্ডও যেন আর কোনো ভাণ্ডার ব্যর্থ না হয়। আগে
বলা হয়েছে যে সঙ্গম সময়ের সেকেন্ড, সেকেন্ড নয় বছরের সমান। এরকম ভেবো না এক সেকেন্ড,
এক মিনিটই তো গেছে, ব্যর্থ যাওয়া - এটাকেই বলা হয় গড়িমসি ভাব। তোমাদের সবার লক্ষ্য
হলো যে বাবাব্রহ্মা সমান সম্পন্ন আর সম্পূর্ন হতে হবে। তো ব্রহ্মা বাবা সমুদয়
ভাণ্ডার আদি থেকে অন্তিম দিন পর্যন্ত সফল করেছেন, এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ তোমরা দেখেছ।
সম্পূর্ণ ফরিস্তা হয়ে গেছেন। নিজেদের প্রিয় দাদিকেও তোমরা দেখেছ তিনি সবকিছু সফল
করেছেন এবং সফল করার জন্য অন্যদেরও সদা উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়িয়েছেন। তো ড্রামা অনুসারে
বিশ্ব সেবার অলৌকিক পার্টের বিশেষ নিমিত্ত হয়েছেন।
তো এই বছর, কাল থেকে প্রতিদিন নিজের চার্ট রাখো - সফল আর ব্যর্থ ... কী হয়েছে, কতটা
হয়েছে! অমৃত বেলাতেই দৃঢ় সঙ্কল্প করো, স্মৃতিস্বরূপ হতে হবে - সফলতা আমার জন্মসিদ্ধ
অধিকার। সফলতা আমার গলার হার। সফলতা স্বরূপ হওয়াই সমান হওয়া । ব্রহ্মা বাবার প্রতি
তোমাদের ভালোবাসা আছে তো না! তো ব্রহ্মা বাবার কিসের প্রতি সর্বাধিক ভালোবাসা ছিল?
জানো তোমরা? কিসের প্রতি ছিল? মুরলির সাথে। লাস্ট দিনও মুরলী পাঠ মিস করেননি। সমান
হওয়ার ক্ষেত্রে এটা চেক করো - ব্রহ্মা বাবা যা ভালোবাসতেন। ব্রহ্মা বাবার প্রতি
ভালোবাসার লক্ষণ হলো - যা কিছু বাবার ভালোবাসা ছিল তার প্রতি আমার ভালোবাসা আপনা
থেকেই সহজ হওয়া উচিত। ব্রহ্মা বাবার অন্য বিশেষত্ব কী ছিল? সদা অ্যালার্ট, অসাবধানতা
ছিল না। লাস্ট দিনেও কত অ্যালার্ট রূপে নিজের সেবার পার্ট প্লে করেছেন। শরীর দুর্বল
হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে অ্যালার্ট হয়ে, আধার নিয়ে বসেননি, বরঞ্চ অ্যালার্ট করে গেছেন।
তিন বিষয়ের মন্ত্র দিয়ে গেছেন। স্মরণ আছে তো না সকলের! তো যত অ্যালার্ট থাকবে, ফলো
করবে, অসাবধানতা শেষ হবে। অসাবধানতার বিশেষ বোল বাপদাদা অনেক শোনেন। তোমরা জানো তো
না! যদি এই তিন শব্দকে (নিরাকারী, নির্বিকারী এবং নিরহঙ্কারী) সদা নিজের মনে রিভাইজ
আর রিয়ালাইজ করে চলো তবে অটোমেটিক্যালি সহজ এবং সমান হয়ে যাবে আপনা থেকেই। তো একটা
বিষয় সফল করো, সফলতা মূর্ত হও।
আরেকটা বিষয় - বাপদাদা বাচ্চাদের বছরের রেজাল্ট দেখেছেন। কী দেখেছেন? মহাদানী হয়েছ;
কিন্তু অখণ্ড মহাদানী, অখণ্ড আন্ডারলাইন, অখণ্ড মহাদানী, অখণ্ড যোগী, অখণ্ড
নির্বিঘ্ন - এখন এর আবশ্যকতা রয়েছে। অখণ্ড হতে পারে? হতে পারে? প্রথম লাইনের তোমরা,
হতে পারে? যদি হতে পারে তবে হাত উঠাও। যারা করতে পারে, করতে পারো তোমরা? যারা
মধুবনের তারাও হাত উঠাচ্ছে। যারা মধুবনের তাদেরকে বাপদাদা আগে দেখেন। মধুবনের প্রতি
তাঁর ভালোবাসা আছে। শান্তিবন কিংবা পাণ্ডব ভবন কিংবা দাদির ভুজসকল, সবাইকে গুরুত্ব
সহকারে দেখেন। যদি তোমরা অখণ্ড হও তবে মন্সা দ্বারা শক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার সেবাতে বিজি
থাকো। বাচা দ্বারা জ্ঞানের সেবা এবং কর্ম দ্বারা গুণ দান বা গুণের সহযোগ দেওয়ার সেবা
করো।
আজকাল, অজ্ঞানী আত্মা হোক বা ব্রাহ্মণ আত্মা, সবাইকে গুণের দান, গুণের সহযোগ দেওয়া
আবশ্যক। যদি নিজে সহজ সিম্পল রূপে স্যাম্পল হয়ে থাকো তবে অটোমেটিক্যালি তোমাদের
গুণমূর্ত হওয়ার সহযোগ অন্যদের আপনা থেকেই প্রাপ্ত হবে। আজকাল ব্রাহ্মণ আত্মারাও
স্যাম্পল দেখতে চায়, শুনতে চায় না। নিজেদের মধ্যেও তোমরা কী বলে থাকো? কে হয়েছে? তো
তারা প্রত্যক্ষভাবে তোমাদের গুণমূর্ত রূপ দেখতে চায়। তো কর্ম দ্বারা বিশেষ গুণের
সহযোগ, গুণের দান দেওয়ার আবশ্যকতা আছে। শুনতে কেউ চায় না, দেখতে চায়। সুতরাং এখন
বিশেষভাবে এই খেয়াল রাখতে হবে যে, আমাকে জ্ঞান দ্বারা, বাচা দ্বারা তো সেবা করতেই
হবে, নিরন্তর করতেই হবে, আমার এটা বন্ধ করা উচিত নয়। কিন্তু এখন মন্সা আর কর্ম
দ্বারা ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দাও। সকাশ ছড়িয়ে দাও। দূরে বসেও ভাইব্রেশন বা সকাশ পৌঁছাতে
পারো। শুভ ভাবনা, শুভ কামনার দ্বারা কোনও আত্মাকে মন্সা সেবা দ্বারা ভাইব্রেশন বা
সকাশ দিতে পারো। তো এখন এই বছর মন্সা শক্তির ভাইব্রেশন, শক্তি দ্বারা সকাশ আর কর্ম
দ্বারা গুণের সহযোগ এবং আজ্ঞানী আত্মাদের গুণ দান দাও।
তুন বছরে তোমরা গিফ্টও দাও তো না! তো এই বছর স্বয়ং গুণমূর্ত হয়ে গুণের গিফ্ট দাও।
গুণের টোলি খাওয়াও তো না! টোলি খাওয়ানোতে তারা খুশি হয়ে যায়, তাই না! অনেক আত্মা,
এমনকি ভাগন্তিরাও টোলি স্মরণ করে। অন্য সবকিছু ভুলে যায়, কিন্তু টোলি স্মরণে আসে।
তো এই বছর কোন টোলি খাওয়াবে? গুণের টোলি খাওয়াও। গুণের পিকনিক করো। কেননা, বাবা
সমান সময়ের নৈকট্য অনুসারে এবং দাদির ইশারা অনুসারে সময়ের সম্পন্নতা আচম্বিতে যে
কোনও কখনো হওয়া সম্ভব। সেইজন্য বাবা সমান হতে হবে অথবা দাদির ভালোবাসার রিটার্ন দিতে
হবে, সুতরাং যা আবশ্যক সেটা হলো - মন্সা আর কর্ম দ্বারা সহযোগী হওয়ার, কে কেমন, এ'
হলে আমি হবো সেটা ভেবো না। নম্বর ওয়ান হতে হ'লে যদি এ' হয় তবে হবো, এমন হ'লে তো
প্রথম নম্বর তারাই হয়ে যাবে, আর তোমরা দ্বিতীয় হয়ে যাবে। তোমরা কি দ্বিতীয় নম্বর হতে
চাও, নাকি প্রথম নম্বর হতে চাও? সাধারণত যদি কাউকে বলো তুমি দুই নম্বর নাও তবে নেবে?
সবাই এটাই বলবে প্রথম নম্বর নেব। সুতরাং প্রথমে নিমিত্ত হতে হবে। অন্যকে কেন
নিমিত্ত বানাও! নিজেকে নিমিত্ত বানাও না! ব্রহ্মা বাবা কী বলেছেন? সব বিষয়ে নিজে
নিমিত্ত হয়ে নিমিত্ত বানিয়েছেন। হে অর্জুন হয়ে পার্ট প্লে করেছেন। আমাকে নিমিত্ত হতে
হবে। আমাকে নিমিত্ত হতে হবে। আমাকে করতে হবে। অন্যে করবে, আমাকে দেখে অন্যরা করবে।
অন্যকে দেখে আমি করবো, না। আমাকে দেখে অন্যরা করবে। এটা ব্রহ্মার প্রথম পাঠ। তো
শুনেছ কী করতে হবে? সফলতা মূর্ত, সফল সফলতা মূর্ত, অখণ্ড দানী হতে হবে, তবে মায়ার
আসার সাহসই হবে না। যখন অখণ্ড মহাদানী হয়ে যাবে, তখন নিরন্তর সেবাধারী হবে, বিজি
থাকবে, মন বুদ্ধি সেবাধারী হবে, তাহলে মায়া কোথায় আসবে! তো এখন এই বছরে কী হতে হবে?
সবার হৃদয় থেকে যেন একটাই আওয়াজ বের হয়, এটা বাপদাদা চান, সেটা কী? নো প্রবলেম,
কমপ্লিট। প্রবলেম নেই, কিন্তু কমপ্লিট হতেই হবে। দৃঢ় নিশ্চয়বুদ্ধি, বিজয়মালায় কাছের
দানা হতেই হবে। ঠিক আছে তো না! হতে হবে, তাই না! মধুবনের হতে হবে। নো কমপ্লেন? নো
কমপ্লেন। হাত তোলো, যারা সাহস বজায় রাখো। নো প্রবলেম। বাহ্! অভিনন্দন, অভিনন্দন
অভিনন্দন।
দেখো, নিশ্চয়ের প্রত্যক্ষ প্রমাণ হলো আধ্যাত্মিক নেশা। যদি আধ্যাত্মিক নেশা না থাকে
তবে নিশ্চয়ও নেই। ফুল নিশ্চয় নেই, অল্প বিস্তর রয়েছে। তো নেশা রাখো, এমন কী বড়
ব্যাপার! কত কল্প তোমরাই বাবা সমান হয়েছো, স্মরণে আছে? অগণিত বার হয়েছো। তো এই নেশা
রাখো আমিই হয়েছিলাম, আমিই হয়েছি আর আমিই বারবার হতে থাকবো। এই নেশা সদাই যেন কর্মে
দেখা যায়। সঙ্কল্পে নয়, বোলে নয়, কিন্তু কর্মে, কর্মের অর্থ আচার আচরণে, মুখমণ্ডলে
যেন প্রতীয়মান হয়। তো হোম ওয়ার্ক পেয়ে গেছো, পেয়ে গেছো তো না? এবারে দেখা যাবে
নম্বরক্রমে আসো, নাকি নম্বরক্রমে। আচ্ছা।
বাপদাদার কাছে অনেক কার্ড, পত্র, ইমেল, স্মরণের স্নেহ-সুমন কম্পিউটারের দ্বারাও
এসেছে আর বাপদাদা প্রত্যেককে তাঁর সমুখে ইমার্জ ক'রে দূরে ব'সে থাকা হৃদয়
সিংহাসনাসীন বাচ্চাদেরকে তাদের নামসহ বিশেষত্ব সহ স্মরণের স্নেহ আর হৃদয়ের আশীর্বাদ
দিচ্ছেন। বাপদাদা জানেন যে সকলের স্মরণ-স্নেহ, ভালোবাসা থাকেই এবং বাপদাদা সদা
বিশেষ করে অমৃতবেলায় ব্রাহ্মণ আত্মাদের স্মরণের স্নেহের রেসপন্স বিশেষভাবে করে
থাকেন। সেইজন্য তোমরা খুব ভালো ভালো কার্ড বানিয়েছো, তোমরা তো কার্ড এখানে (স্টেজে)
রাখো, কিন্তু বতনে বাপদাদার কাছে আগেই পৌঁছে যায়। আচ্ছা।
চতুর্দিকের ঝলমলে আত্মদীপক বাচ্চাদের, সদা সব কিছু সফল করে এমন সফলতা স্বরূপ
বাচ্চাদের, সদা অখণ্ড মহাদানী, অখণ্ড নির্বিঘ্ন, অখণ্ড জ্ঞান আর যোগযুক্ত, সদা একই
সময়ে তিন সেবা করে - মন্সা ভাইব্রেশন দ্বারা বায়ুমণ্ডলের, বাণী দ্বারা বাচা সেবার
এবং আচরণ ও মুখমণ্ডলের মাধ্যমে কর্ম সেবা, তিন সেবা একই সময়ে একত্রে তখনই হবে যখন
তোমাদের প্রভাব যারা ভালো বলবে তাদের উপরে নয়, বরং যারা ভালো হবে তাদের উপরে পড়বে।
তো অনুভাবী মূর্ত হওয়ার দ্বারা অনুভব করায় এমন বাচ্চাদের নতুন বছরের জন্য বাপদাদার
পদ্ম পদ্মগুন স্মরণের স্নেহ-সুমন, আশীর্বাদ। তাছাড়া, হৃদয়াসন সদা তোমাদের হৃদয়
সিংহাসনাসীন বানায়, সেইজন্য চতুর্দিকের বাচ্চাদের যারা সমুখে আছে, দূরে বসেও হৃদয়
সিংহাসনাসীন, তাদের সবাইকে নাম আর বিশেষত্ব সহ স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
আচ্ছা - যারা প্রথমবার এসেছো তারা উঠে দাঁড়াও। হাত নাড়াও। দেখো, অর্ধেক ক্লাস প্রথম
বার এসেছে।যারা পিছনে রয়েছ তারা হাত নাড়াও। টিভিতে সব দেখা যাচ্ছে। অনেক আছ। আচ্ছা,
প্রথমবার আগতদের বাপদাদার হৃদয়ের অনেক অনেক অভিনন্দনও, আর হৃদয়ের স্মরণ-স্নেহও।
যেহেতু, তোমরা এখন এসেছ, তো এখনের আগতদের জন্য বাপদাদার বরদান রয়েছে - "অমর ভব।"
বরদান:-
যারা বদনাম করে তাদেরকেও গুণ-মালা পরিয়ে ইষ্ট দেব,
মহান আত্মা ভব
যেভাবে, আজকাল, তোমরা-বিশেষ আত্মাদের স্বাগত জানানোর
সময় গলায় কোনো স্থূল মালা পরিয়ে দেওয়া হয়, তো তোমরা তাদের গলাতে রিটার্ন করে দাও,
যারা পরিয়ে দেয়। সেভাবেই, যারা তোমাদের বদনাম করে তাদেরকে যদি তোমরা গুণ-মালা পরিয়ে
দাও তো তারাও আপনা থেকেই তোমাদের গুণ-মালা রিটার্ন করবে। কেননা, যারা বদনাম করে
তাদেরকে গুণ-মালা পরানো অর্থাৎ জন্ম-জন্মের জন্য ভক্ত নিশ্চিত করা। এই দেওয়াই
অনেকবারের নেওয়া হয়ে যায়। এই বিশেষত্বই ইষ্ট দেব, মহান আত্মা বানিয়ে দেয়।
স্লোগান:-
তোমাদের মন্সা বৃত্তি সুন্দর ও পাওয়ারফুল বানাও, তবে
খারাপও ভালো হয়ে যাবে।
অব্যক্ত ইশারা :- অশরীরী বা বিদেহী স্থিতির অভ্যাস
বাড়াও যে কোনও কার্য করার সময় চতুর্দিকের জটিল বা বিরূপ পরিস্থিতি যতই থাক না কেন,
যদি তোমাদের বুদ্ধি সেবার কার্যে অতি বিজি থাকে, তখন এরকম টাইমে অশরীরী হওয়ার
অভ্যাস করে দেখ। যথার্থ সেবার কোনো বন্ধন হয় না। কেননা, যোগযুক্ত, যুক্তিযুক্ত
সেবাধারী সদা সেবা করতে করতেও উপরম থাকে। এমন নয় যে সেবা বেশি সেইজন্য অশরীরী হতে
পারবে না। স্মরণে রাখো - আমার সেবা নয়, বাবা দিয়েছেন। তাহলেই নির্বন্ধন থাকবে।