25.10.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - সঙ্গম যুগেই তোমাদেরকে আত্ম-অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম করতে হয়, সত্যযুগ কিম্বা কলিযুগে এই পরিশ্রম করতে হয় না”

প্রশ্নঃ -
শ্রীকৃষ্ণের নাম তার বাবা-মায়ের থেকেও অধিক বিখ্যাত কেন?

উত্তরঃ  
কেননা শ্রীকৃষ্ণের থেকে আগে যাদেরই জন্ম হয়েছে তাদের জন্ম যোগবলের দ্বারা হয় না। কৃষ্ণের মা বাবাও কোনও যোগবলের দ্বারা জন্ম নেয় নি। ২) সম্পূর্ণ কর্মাতীত হলেন রাধা-কৃষ্ণই। তারাই সদ্গতি প্রাপ্ত করে। যখন সমস্ত পাপাত্মারা সমাপ্ত হয়ে যায়, তখন ফুলের মত পবিত্র নতুন দুনিয়াতে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়, তাকেই বৈকুণ্ঠ বলা যায়। ৩) সঙ্গম যুগে শ্রীকৃষ্ণের আত্মা সবথেকে বেশি পুরুষার্থ করেছিল, এজন্য তার নাম বিখ্যাত হয়।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি আত্মিক বাচ্চাদেরকে আত্মিক বাবা বসে বোঝাচ্ছেন। ৫ হাজার বছর পরে একবারই বাচ্চাদেরকে এসে পড়ান। বাচ্চারাও আহ্বান করেছিল যে - আমাদের পতিতদেরকে এসে পবিত্র বানাও। তাহলে প্রমাণিত হয় যে - এটা হলো পতিত দুনিয়া। নতুন দুনিয়া, পবিত্র দুনিয়া ছিল। নতুন বাড়ি খুব সুন্দর দেখতে হয়। পুরানো বাড়ি একদম ভাঙাচোরা হয়ে যায়। বর্ষাকালে ভেঙে পড়ে। বাচ্চারা এখন তোমরা জেনে গেছ যে, বাবা এসেছেন নতুন দুনিয়া সৃষ্টি করতে। এখন পড়াচ্ছেন। আবার ৫ হাজার বছর পর পড়াবেন। এইরকম কখনও কোনো সাধু-সন্ত আদি নিজের অনুগামীদেরকে পড়াবে না। তাদের তো এই জ্ঞান জানাই নেই। এই (ড্রামার) খেলার সম্বন্ধেও জানা নেই কেননা তারা হল নিবৃত্তি মার্গের। বাবা ছাড়া কেউই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্যকে বোঝাতে পারবে না। আত্ম-অভিমানী হওয়াতেই বাচ্চাদেরকে পরিশ্রম করতে হয়। কেননা অর্ধেক কল্পে তোমরা কখনও আত্ম-অভিমানী হওনি। এখন বাবা বলছেন যে নিজেকে আত্মা মনে করো। এমন নয় যে আত্মাই হল পরমাত্মা। না, নিজেকে আত্মা মনে করে পরমপিতা পরমাত্মা শিববাবাকে স্মরণ করতে হবে। স্মরণের যাত্রাই হল প্রধান, যার দ্বারাই তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হও। এতে কোন স্থুল কথা নেই। কোনও নাক কান আদি বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। মূল কথা হলো - নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করা। তোমরা অর্ধেক কল্প ধরে নিচে নেমে এসেছো - দেহ-অভিমানে থাকার কারণে। প্রথমে নিজেকে আত্মা মনে করলে, তবেই বাবাকে স্মরণ করতে পারবে। ভক্তি মার্গেও বাবা-বাবা বলে এসেছ। বাচ্চারা জানে যে, সত্য যুগে একটাই লৌকিক বাবা হবে। সেখানে পারলৌকিক বাবাকে মনে করতে হবে না, কেননা সেখানে সুখ থাকে। ভক্তি মার্গে পুনরায় দুটো বাবা হয়ে যায়। লৌকিক আর পারলৌকিক। দুঃখের সময় সবাই পারলৌকিক বাবাকে স্মরণ করে। সত্যযুগে ভক্তি হয় না। সেখানে তো হল জ্ঞানের প্রারব্ধ। এমন নয় যে জ্ঞান থাকে। এই সময়ের জ্ঞানের প্রারব্ধ প্রাপ্ত হয়। বাবা তো একবারই আসেন। অর্ধেক কল্প অসীম জগতের বাবার, সুখের উত্তরাধিকার থাকে। পুনরায় লৌকিক বাবার থেকে অল্পকালের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এইসব কথা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না। এটা হল নতুন কথা, ৫ হাজার বছর পর এই সঙ্গম যুগে একবার-ই বাবা আসেন। যখন কলিযুগের অন্ত আর সত্যযুগের আদির সঙ্গম হয়, তখনই বাবা আসেন - নতুন দুনিয়া পুনরায় স্থাপন করতে। নতুন দুনিয়াতে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল, তারপর ত্রেতাতে হলো রামরাজ্য। বাকি দেবতাদিদের যে এত চিত্র বা মূর্তি বানানো হয়, সেসব হলো ভক্তিমার্গের সামগ্রী। বাবা বলেন, এই সবকিছুকে ভুলে যাও। এখন নিজের ঘরকে আর নতুন দুনিয়াকে স্মরণ করো।

জ্ঞান মার্গ হলো বোধগম্যতার মার্গ, যার দ্বারা তোমরা ২১ জন্মের জন্য বুঝদার হয়ে যাও। কোনও দুঃখ থাকে না। সত্যযুগে কখনও কেউ এই রকম বলবে না যে, আমার শান্তি চাই। প্রবাদ আছে না, যে - চাওয়ার থেকে মরা ভাল। বাবা তোমাদেরকে এমন ধনী বানিয়ে দেন যে, দেবতাদেরকে ভগবানের থেকে কোনও জিনিস প্রার্থনা করার দরকারই থাকেনা। এখানে তো সবাই আশীর্বাদ প্রার্থনা করে, তাই না! পোপ আদি যখন আসে, তখন কত সবাই আশীর্বাদ নিতে যায়। পোপ কত মানুষের বিবাহাদি করিয়ে দেয়! বাবা তো এইরকম কাজ করেন না। ভক্তি মার্গে যেটা অতীত হয়ে গেছে, সেটা এখন হচ্ছে, আবার পুনরায় রিপিট হবে। দিন-প্রতিদিন ভারত নিমজ্জিত হয়েই গেছে। এখন তোমরা আছ সঙ্গমে। বাকি সবাই হল কলিযুগের মানুষ। যতক্ষণ না এখানে না আসে, ততক্ষণ কিছুই বুঝতে পারবে না যে, এখন সঙ্গমযুগ নাকি কলিযুগ? একই ঘরে বাচ্চারা বুঝতে পারে যে - আমি সঙ্গম যুগে আছি, আর (লৌকিক) বাবা বলে, এটা কলিযুগ, তো অনেক সমস্যা দেখা যায়। খাদ্য-পানীয় ইত্যাদির ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়। তোমরা সঙ্গম যুগের শুদ্ধ পবিত্র ভোজন স্বীকার করো। দেবতারা কি কখনও পিঁয়াজাদি খায়? এই দেবতাদেরকে বলা-ই যায় নির্বিকারী। ভক্তি মার্গে সবাই তমোপ্রধান হয়ে গেছে। এখন বাবা বলেছেন - সতোপ্রধান হও। এমন কেউ নেই যে বুঝবে যে আত্মা প্রথমে সতোপ্রধান ছিল, তারপর তমোপ্রধান হয়েছে, কেননা তারা তো আত্মাকে নির্লেপ মনে করে। তারা বলে দেয় - আত্মাই হলো পরমাত্মা।

বাবা বলছেন, জ্ঞান সাগর হলাম আমিই, যারা এই দেবী-দেবতা ধর্মের হবে, তারা সবাই এসে পুনরায় নিজের অনিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করবে। এখন স্যাপলিং লাগানো হচ্ছে। তোমরা বুঝতে পারবে যে - এই আত্মা এত উঁচু পদ প্রাপ্ত করার যোগ্য নয়। ঘরে গিয়ে বিবাহ আদি করে নোংরা হয়ে যায়। তাই বোঝা যায় যে, উঁচু পদ প্রাপ্ত করতে পারবে না। এখন রাজ্য স্থাপন হচ্ছে। বাবা বলছেন - আমি তোমাদেরকে রাজাদেরও রাজা বানাতে এসেছি, তাই প্রজা অবশ্যই তোমাদেরকে বানাতে হবে। না হলে তো রাজ্য কিভাবে প্রাপ্ত করবে। এসব হলো গীতার শব্দ, তাই না - একে বলাই যায় গীতার যুগ। তোমরা এখন রাজযোগ শিখছো - জানো যে আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের ফাউন্ডেশন নির্মাণ হচ্ছে। সূর্যবংশী চন্দ্রবংশী - দুই রাজবংশই স্থাপন হচ্ছে। ব্রাহ্মণ কুলের স্থাপনা হয়ে গেছে। ব্রাহ্মণেরাই পুনরায় সূর্যবংশী-চন্দ্রবংশী হয়। যে ভালো ভাবে পরিশ্রম করবে, সেই সূর্যবংশী হবে। অন্যান্য ধর্মাত্মারা যারা আসে, তারা আসেই নিজের ধর্মের স্থাপনা করতে। তার পরে সেই ধর্মের আত্মারা নামতে থাকে, ধর্মের বৃদ্ধি হতে থাকে। মনে করো কেউ যদি খ্রীষ্টান হয় তো, সেই খ্রীষ্টধর্মের বীজরূপ হলেন যীশু খ্রীষ্ট। তোমাদের বীজ রূপ কে? বাবা, কেননা বাবা-ই এসে স্বর্গের স্থাপনা করেন ব্রহ্মার দ্বারা। ব্রহ্মাকেই প্রজাপিতা বলা যায়। রচয়িতা বলা যাবে না। এনার দ্বারা বাচ্চাদেরকে দত্তক নেওয়া হয়। ব্রহ্মাকেও তো রচনা করতে হয়, তাই না! বাবা এসে এনার মধ্যে প্রবেশ করে এঁনাকে রচনা করেন। শিব বাবা বলছেন যে - তোমরা হলে আমার বাচ্চা। ব্রহ্মাও বলেন যে - তোমরা হলে আমার সাকারী বাচ্চা। তোমরা কালো পতিত হয়ে গিয়েছিলে। এখন পুনরায় ব্রাহ্মণ হয়েছো। এই সঙ্গম যুগেই তোমরা পুরুষোত্তম দেবী দেবতা হওয়ার জন্য পরিশ্রম করে থাকো। দেবতাদেরকে আর শূদ্রদেরকে কোনও পরিশ্রম করতে হয় না, তোমাদের ব্রাহ্মণদেরকেই পরিশ্রম করতে হয়, দেবতা হওয়ার জন্য। বাবা আসেনই সঙ্গমে। এটা হল অনেক ছোট যুগ, এইজন্য একে লিপ যুগও বলা হয়। একে কেউ জানেই না। বাবাকেও অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এমন নয় যে এক সেকেন্ডেই নতুন দুনিয়া তৈরি হয়ে যাবে। তোমাদের দেবতা হতে অনেক সময় লাগে। যে খুব ভাল কর্ম করে, সে ভালো বংশে জন্ম নেয়। এখন তোমরা নম্বরের ক্রমে পুরুষার্থ অনুসারে গুল-গুল (ফুল) তৈরি হচ্ছো। আত্মাই হচ্ছে। এখন তোমাদের আত্মা ভালো কর্ম করা শিখছে। আত্মাই ভালো বা খারাপ সংস্কার নিয়ে যায়। এখন তোমরা গুল-গুল (ফুল) হয়ে ভালো ঘরে জন্ম নিতে থাকবে। এখানে যারা খুব ভালো পুরুষার্থ করে, তো অবশ্যই তারা ভালো বংশে জন্ম নেয়। নম্বরের ক্রমানুসারে তো হয়, তাই না। যেরকম যেরকম কর্ম করে, সেই অনুসারে জন্ম নেয়। যখন খারাপ কর্ম করা আত্মারা সবাই উপরে চলে যায়, তখন পুনরায় স্বর্গের স্থাপনা হয়, বাছাই করা আত্মাদের নিয়ে। যা কিছু তমোপ্রধান আছে, সে সব কিছুই শেষ হয়ে যায়। তারপর নতুন দেবীর দেবতাদের আসা শুরু হয়। যখন ভ্রষ্টাচারী সব শেষ হয়ে যায়, তখন কৃষ্ণের জন্ম হয়, ততক্ষণ অদল-বদল হতে থাকে । যখন কোনো ছিঃ-ছিঃ, নোংরা থাকে না, তখন কৃষ্ণ আসে, ততক্ষণ তোমরা আসা-যাওয়া করতে থাকো। কৃষ্ণকে রিসিভ করার জন্য বাবা-মাকেও প্রথম থেকে চাই, তাই না ! তারপর সবকিছুই ভালো ভালো থাকবে। বাকিরা সবাই চলে যাবে, তখনই তাকে স্বর্গ বলা যাবে। তোমরাই কৃষ্ণকে রিসিভ করার জন্য থাকবে। যদিও তোমাদের ছিঃ-ছিঃ জন্ম হবে, কেননা রাবণ রাজ্য, তাই না! শুদ্ধভাবে জন্ম হতে পারবে না। গুল-গুল (পবিত্র) জন্ম কৃষ্ণেরই প্রথমে হবে। তারপর নতুন দুনিয়া বৈকুণ্ঠ বলা যাবে। কৃষ্ণ একদম গুল-গুল ফুলের মত নতুন দুনিয়াতে আসবে। রাবণ সম্প্রদায় একদম সমাপ্ত হয়ে যাবে। কৃষ্ণের নাম তার মা-বাবার থেকেও অনেক বিখ্যাত হবে। কৃষ্ণের মা-বাবার নাম এতটাও বিখ্যাত হবে না। কৃষ্ণের পূর্বে যাদের জন্ম হবে তাদের যোগবলের দ্বারা জন্ম বলা যাবে না। এমন নয় যে, কৃষ্ণের মা-বাবাও যোগবলের দ্বারা জন্ম নেবে। না, যদি এরকম হত তাহলে তাদেরও নাম বিখ্যাত হত। তাই এটাই প্রমাণিত হয় যে, তাঁর মা-বাবা এতটা পুরুষার্থ করেনি, যতটা কৃষ্ণ করেছে। এসব কথা তোমরা পরবর্তীকালে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবে। সম্পূর্ণ কর্মাতীত অবস্থা হল রাধা-কৃষ্ণেরই। তারাই সদ্গতিতে আসে। পাপাত্মারা সব শেষ হয়ে গেলে তখন তাদের জন্ম হয়, তারপর বলা যাবে পবিত্র দুনিয়া, এইজন্য কৃষ্ণের নাম বিখ্যাত হয়। তাঁর মা-বাবার নাম এতটা বিখ্যাত হয় না। পরবর্তীকালে তোমরা অনেক সাক্ষাৎকার করবে। সময় তো আছে, তাই না! তোমরা যে কাউকেই বোঝাতে পারো - আমরা এইরকম হওয়ার জন্য পড়াশোনা করছি। সমগ্র বিশ্বে এঁনাদের রাজ্য এখন স্থাপন হচ্ছে। আমাদের জন্য তো নতুন দুনিয়া চাই। এখন তোমাদেরকে দৈবী সম্প্রদায়ের বলা যাবে না। তোমরা হলে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়। দেবতা তৈরী হচ্ছো। যখন দৈব-সম্প্রদায়ের হয়ে যাবে, তখন তোমাদের আত্মা আর শরীর দুটোই স্বচ্ছ হয়ে যাবে। এখন তোমাদের সঙ্গমযুগী পুরুষোত্তম তৈরী হচ্ছো। এসব হল পরিশ্রমের কথা। স্মরণের দ্বারাই বিকর্মাজিত হতে হবে। তোমরা নিজেরাই বলো যে, বারে বারে বাবার স্মরণ ভুলে যাই। বাবা যখন পিকনিক স্পটে বসেন তখনও বাবার খেয়াল থাকে। আমরা স্মরণে না থাকলে তো বাবা কি বলবেন ! এইজন্য বাবা বলছেন - তোমরা স্মরণে থেকে পিকনিক করো। কর্ম করতে করতেই প্রেমিককে স্মরণ করো, তাহলে বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে, এতেই পরিশ্রম আছে। স্মরণের দ্বারাই আত্মা পবিত্র হবে, অবিনাশী জ্ঞান ধনও জমা হবে। তারপরও যদি অপবিত্র হয়ে যায় তো সমস্ত জ্ঞান বেরিয়ে যায়। পবিত্রতাই হল মুখ্য। বাবা তো ভালো-ভালো কথাই বোঝাচ্ছেন। এই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান আর কারো মধ্যেই নেই। আর যেসব সৎসঙ্গ আদি আছে, সেসব হল ভক্তি মার্গের।

বাবা বুঝিয়েছেন - ভক্তি বাস্তবে প্রবৃত্তি মার্গে আত্মাদের করতে হয় । তোমাদের মধ্যে তো কতখানি শক্তি রয়েছে । ঘরে বসেই তোমাদের সুখ প্রাপ্ত হচ্ছে। সর্বশক্তিমান বাবার থেকে তোমরা কতো শক্তি প্রাপ্ত করো। সন্ন্যাসীদের মধ্যেও প্রথমে শক্তি ছিল, যখন তারা জঙ্গলে থাকতো। এখন তো কত বড়-বড় ফ্ল্যাট বানিয়ে থাকে। এখন তাদের মধ্যে সেই শক্তি আর নেই। যেরকম তোমাদেরও প্রথমে সুখের শক্তি থাকে। তারপর আস্তে আস্তে লুপ্ত হয়ে যায়। তাদের মধ্যেও প্রথমে শান্তির শক্তি ছিল, এখন সেই শক্তি আর নেই। আগে তো তারা সত্য কথাই বলতো যে - রচয়িতা আর রচনাকে আমরা জানি না। এখন তো আবার নিজেকেই ভগবান 'শিবোহম্' বলে বসছে। বাবা বোঝাচ্ছেন - এই সময়ে সমস্ত কল্পবৃক্ষ তমোপ্রধান হয়ে গেছে। এইজন্য সাধু আদিদেরও উদ্ধার করার জন্য আমি আসি। এই দুনিয়াই পরিবর্তিত হয়ে যাবে। সমস্ত আত্মারা পুনরায় বাড়ি ফিরে যাবে। এমন একজনও নেই, যার এ বিষয়ে জানা আছে যে আমার আত্মার মধ্যে অবিনাশী পার্ট ভরা আছে যেটা পুনরায় রিপিট হবে। আত্মা এত ছোট, তার মধ্যে অবিনাশী পার্ট ভরা আছে, যেটা কখনো বিনাশ হয় না। এর জন্য বুদ্ধি অনেক সূক্ষ্ম আর পবিত্র চাই। সেটা তখন হবে, যখন স্মরণের যাত্রায় মত্ত থাকবে। পরিশ্রম ছাড়া পদ প্রাপ্ত হবে না, এইজন্য গাওয়া হয় যে - “চড়ে তো চাখে বৈকুণ্ঠ রস....” (যে যত উপড়ে চড়বে, সে'ই বৈকুন্ঠ রস পান করতে পারবে)। কোথায় সেই উঁচুর থেকে উঁচু রাজাদেরও রাজা ডবল মুকুটধারী আর কোথায় প্রজা। শিক্ষক তো হলেন একজনই । এটাই খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে। বাবা বারংবার বোঝাচ্ছেন যে - স্মরণের যাত্রাই হলো মুখ্য। আমি তোমাদেরকে পড়িয়ে বিশ্বের মালিক তৈরী করি। তাই টিচার গুরুও হবেন। বাবা তো হলেনই টিচারদেরও টিচার, বাবারও বাবা। বাচ্চারা, এটা তো তোমরা জানো যে - আমাদের বাবা হলেন অত্যন্ত প্রিয়। এইরকম বাবাকে তো অনেক স্মরণ করতে হবে। সম্পূর্ণ রীতিতে পড়তে হবে। বাবাকে স্মরণ না করলে তো পাপ নষ্ট হবে না। বাবা সমস্ত আত্মাদেরকে সাথে করে নিয়ে যাবেন। আর এই শরীর সব শেষ হয়ে যাবে। আত্মারা নিজের নিজের ধর্মের সেকশনে গিয়ে অবস্থান করে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বুদ্ধিকে পবিত্র বানানোর জন্য স্মরণের যাত্রাতে মেতে থাকতে হবে। কর্ম করতে-করতেও এক প্রেমিকের স্মরণে থাকলে তবেই বিকর্মাজিত হতে পারবে।

২ ) এই ছোট্ যুগে মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার পরিশ্রম করতে হবে। সুকর্মের অনুসারে ভালো সংস্কারগুলিকে ধারণ করে ভালো বংশে যেতে হবে।

বরদান:-
নিজের আত্মিক লাইটের দ্বারা বায়ুমন্ডলকে পরিবর্তন করার সেবা করে সহজ সফলতার মূর্তি ভব

যেরকম সাকার সৃষ্টিতে যে রঙের লাইট জ্বালাও, সেইরকমই বাতাবরণ তৈরী হয়ে যায়। যদি সবুজ লাইট হয়, তাহলে চারিদিকে তারই প্রকাশ ছেয়ে যায়। লাল লাইট জ্বললে বাবাকে স্মরণ করার বায়ুমন্ডল তৈরী হয়ে যায়। যখন স্থুল লাইট বায়ুমন্ডলকে পরিবর্তন করে দেয় তাহলে তোমরা লাইট হাউসরাও পবিত্রতার লাইট বা সুখের লাইটের দ্বারা বায়ুমন্ডল পরিবর্তন করার সেবা করো, তাহলে সফলতার মূর্তি হয়ে যাবে। তারা স্থুল লাইট চোখ দিয়ে দেখছে, আত্মিক লাইট অনুভবের দ্বারা জানবে।

স্লোগান:-
ব্যর্থ কথাতে সময় আর সংকল্প নষ্ট করা - এটাও হলো অপবিত্রতা।

অব্যক্ত ঈশারা :- স্বয়ং আর সকলের প্রতি মন্সা দ্বারা যোগের শক্তির প্রয়োগ করো

যেকোনও খাজানা কম খরচ করে অধিক প্রাপ্ত করে নেওয়া, এটাই হল যোগের প্রয়োগ। পরিশ্রম কম সফলতা বেশী এই বিধির দ্বারা প্রয়োগ করো। যেরকম সময় আর সংকল্প হলো শ্রেষ্ঠ খাজানা তো সংকল্প খুব কম খরচ হবে কিন্তু প্রাপ্তি বেশী হবে। সাধারণ মানুষ দু-চার মিনিট সংকল্প করার পর, চিন্তা করার পর যে সফলতা বা প্রাপ্তি করতে পারে সেটাই তোমরা এক-দু সেকেন্ডে করতে পারো, একেই বলা হয় কম খরচ করতে পারা ভাগ্যের অধিকারী। খরচ কম করো কিন্তু প্রাপ্তি ১০০ গুণ হবে, এর দ্বারা সময়ের বা সংকল্পের যে সঞ্চয় হবে, সেটা অন্যদের সেবাতে লাগাতে পারবে, দান পূণ্য করতে পারবে, এটাই হল যোগের প্রয়োগ।