26.11.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা এখন হলে ওয়ার্ল্ড সার্ভেন্ট, কোনো ব্যাপারেই তোমাদের দেহ-অভিমান আসা উচিত নয়"
প্রশ্নঃ -
কোন্ অভ্যাসটি
একেবারেই ঈশ্বরীয় নিয়ম বিরুদ্ধ, যার দ্বারা তোমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়?
উত্তরঃ
কোনো প্রকারের
সিনেমার গল্প শোনা বা পড়া, নভেল পড়া... এই ধরনের অভ্যাস একেবারেই নিয়ম বিরুদ্ধ,
এতে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। বাবার নিষেধাজ্ঞা - বাচ্চারা, তোমরা এমন কোনো বইপত্র
পড়বে না। কোনো বি. কে. যদি এই ধরনের বইপত্র পড়ে, তবে তোমরা একে অপরকে সাবধান করো।
গীতঃ-
নিজের (মনের)
চেহারা দেখ্ রে মানব তোর মন রূপী দর্পণে…
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মিক বাচ্চাদের প্রতি আত্মিক পিতা বলেন - নিজেকে চেক করো যে, স্মরণের যাত্রায়
আমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধানের দিকে কতটা অগ্রসর হয়েছি। কেননা যত যত স্মরণ করবে
ততই পাপ কাটতে থাকবে। এখন এইসব কথা কোথায় কোন্ শাস্ত্রে লেখা আছে ? কেননা যারাই
ধর্ম স্থাপন করেছে, যা তারা মানুষকে বুঝিয়েছে তার শাস্ত্র রচিত হয়েছে, তারপর মানুষ
বসে সে'সব পাঠ করে, ধর্ম পুস্তকের পূজা করে। এখন এও বোঝার বিষয় যখন এটা লেখা আছে,
দেহ সহ দেহের সর্ব সম্বন্ধকে ছেড়ে নিজেকে আত্মা মনে করো। বাবা স্মরণ করিয়ে দেন -
বাচ্চারা, তোমরা সবার প্রথমে অশরীরী এসেছিলে, সেখানে তো পবিত্রই থাকতে। মুক্তি -
জীবনমুক্তিতে কোনো পতিত আত্মা যেতে পারে না। সেটা হল নিরাকারী, নির্বিকারী দুনিয়া।
এটাকে বলা হয় সাকারী বিকারী দুনিয়া, এরপর সত্যযুগে এটাই নির্বিকারী দুনিয়া হয়ে
যায়। সত্যযুগে থাকা দেবতাদের তো অনেক মহিমা। বাচ্চাদেরকে এখন বোঝানো হয় - নিজে
ভালো করে ধারণ করে অন্যকেও বোঝানো। তোমরা আত্মারা যেখান থেকে এসেছিলে, পবিত্রই
এসেছিলো। তারপর এখানে এসে অপবিত্রও অবশ্যই হতে হয়। সত্যযুগকে ভাইসলেস ওয়ার্ল্ড,
কলিযুগকে ভিসজ (পাপ পূর্ণ) ওয়ার্ল্ড বলা হয়। এখন তোমরা পতিত - পাবন বাবাকে স্মরণ
করো যে, আমাদেরকে ভাইসলেস বানানোর জন্য ভিসজ দুনিয়া, ভিসজ শরীরে এসো। বাবা নিজে বসে
বোঝান - ব্রহ্মার চিত্রর বিষয়েই মানুষ প্রশ্ন তোলে যে, দাদাকে কেন বসানো হয়েছে এই
স্থানে? তাদেরকে বোঝাতে হবে - ইনি তো হলেন ভাগীরথ। শিব ভগবানুবাচ হল - এই রথ আমি
এইজন্যই নিয়েছি, কারণ আমাকে প্রকৃতির আধার অবশ্যই নিতে হয়। নাহলে আমি তোমাদেরকে
পতিত থেকে পবিত্র কীভাবে বানাবো? প্রতিদিন তো পড়াতেও অবশ্যই হবে । এখন বাচ্চারা,
বাবা তোমাদেরকে বলেন, নিজেকে আত্মা মনে করো আর মামেকম্ স্মরণ করো। সকল আত্মাদের এখন
বাবাকে স্মরণ করতে হবে। কৃষ্ণকে সকল আত্মাদের বাবা বলা যাবে না। তার তো নিজের শরীর
রয়েছে। তাই এই বাবা সহজ ভাবে বোঝান যে - যখনই কাউকে বোঝাবে, বলবে - বাবা বলেন, তুমি
অশরীরী এসেছিলে, আবার এখন অশরীরী হয়ে যেতে হবে । ওখান থেকে (পরমধাম থেকে) পবিত্র
আত্মাই আসে। সে যদি কালকে কোনো আত্মা আসে, পবিত্রই আসবে, তার মহিমা অবশ্যই হবে। সাধু
সন্ন্যাসী কিম্বা গৃহী কোনো মানুষ যারা কোনো পুণ্য কর্ম করে গেছে অবশ্যই তাদের এটা
হল প্রথম জন্ম। ধর্ম স্থাপন করবার জন্যই তারা আসে। যেমন বাবা গুরু নানকের বিষয়ে
বোঝান। 'গুরু' শব্দটা অবশ্যই লিখবে, কারণ নানক নাম তো অনেকেরই আছে। যখন কারো প্রশংসা
করা হয় নিশ্চয়ই তার কোনো অর্থ আছে। তোমরা যদি ঠিক মতা প্রশংসা না করো তবে সেটা
ঠিক নয়। বাস্তবে বাচ্চাদেরকে বোঝানো হয়েছে - গুরু কেউই নয়, এক পরমাত্মা বাবা ছাড়া।
যার নাম নিয়েই গাওয়া হয় সদ্গুরু অকাল..... তিনি হলেন অকালমূর্ত, অর্থাৎ যাকে কাল
খেতে পারে না, তিনি হলেন আত্মা। তখন বসে সেই বিষয়ে কাহিনী রচনা করে বসে। অনেকেই
সিনেমার গল্পের বই, নভেল ইত্যাদি অনেক পড়তে থাকে। বাবা বাচ্চাদেরকে সতর্ক করে দেন,
কখনোই কোনো নভেল ইত্যাদি পড়বেই না। কারো কারো এই অভ্যাস রয়েছে। এখানে তো তোমরা
সৌভাগ্যশালী হয়ে ওঠো। কোনো কোনো বি. কে.ও নভেল পড়ে। সেইজন্য বাবা সব বাচ্চাদেরকে
বলেন - কখনো কাউকে যদি নভেল পড়তে দেখো, তাহলে সাথে সাথে নিয়েই ছিঁড়ে ফেলবে, ভয়
পাবে না যে আমাকে সে অভিশম্পাত করবে কি রেগে যাবে, সে সব ভাববে না। তোমাদের কাজ হলো
পরস্পরকে সাবধান করে দেওয়া। ফিল্মের গল্প শোনা কিম্বা পভ়া হলো ঈশ্বরীয় নিয়ম
বিরুদ্ধ। নিয়ম বিরুদ্ধ কোনো আচরণ দেখলে সাথে সাথে রিপোর্ট করে দেওয়া উচিত। নাহলে
পরিবর্তন হবে কী করে? নিজের ক্ষতিই করতে থাকবে। নিজের মধ্যেই যদি যোগবল না থাকে তবে
এখানে বসে কী শেখাবে ? বাবার নিষেধ আছে। এইরকম কাজ যদি করে তবে মনের ভিতরে দংশন
অবশ্যই হবে। নিজেরই ক্ষতি হবে। সেইজন্য কারো মধ্যে যদি কোনো অবগুণ দেখো তবে বাবাকে
লেখা উচিত। কোনো বেকায়দা আচরণ করছে না তো? কেননা ব্রাহ্মণ এই সময় তো সার্ভেন্ট,
তাই না ! বাবাও বলেন, বাচ্চারা, নমস্কার। এর অর্থ সহ বাবা বোঝান। কন্যারা যারা
পড়ায় তাদের মধ্যে যেন দেহ-অভিমান না থাকে। টিচারও তো স্টুডেন্টদের সার্ভেন্ট হয়ে
থাকে, তাই না ! গভর্নর প্রমুখরা চিঠিতে একেবারে নীচে লেখে "আই অ্যাম্ ইয়োর
ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট", ঠিক তার নীচে সই করবে। বাকিটা ক্লার্ক নিজের হাতে লিখবে।
তাতে তিনি নিজের প্রশস্তি লিখবেন না। আজকাল তো গুরুরাও নিজেকেই শ্রী শ্রী আখ্যা দিয়ে
দেয়। এখানেও কেউ কেউ আছে নিজের নামের আগে শ্রী লেখে। বাস্তবে এটাও লেখা উচিত নয়।
ফিমেলরাও শ্রীমতী লিখতে পারে না। শ্রীমৎ তখনই প্রাপ্ত হয়, যখন শ্রী শ্রী নিজে এসে
মত প্রদান করেন। তোমরা সবাইকে বোঝাতে পারো যে, নিশ্চয়ই কারো মতে চলে তারা দেবতা
হয়েছিলেন ! ভারতবর্ষে কারোরই জানা নেই এনারা এত উচ্চ, বিশ্বের মালিক কী করে
হয়েছিলেন? তোমাদের তো এই নেশা চড়ে যাওয়া উচিত। এই এইম অবজেক্টের চিত্র সর্বদা বুকে
লাগিয়ে রাখা উচিত। মানুষকে বলো - আমাদেরকে ভগবান পড়ান, যার দ্বারা আমরা বিশ্বের
মহারাজা হই। বাবা এসেছেন এই রাজ্যের স্থাপনা করতে। এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ সামনে
উপস্থিত। তোমরা ছোট্ট ছোট্ট শিশু কন্যারা তোমাদের আদো আদো ভাষায়ও সবাইকে বোঝাতে
পারো। বড় বড় যে সব সম্মেলন হয় যেখানে তোমাদের তারা আমন্ত্রণ জানায়, এই চিত্র
সেখানে নিয়ে গিয়ে বসে তাদেরকে বোঝানো - ভারতে এনাদের রাজত্ব স্থাপন হচ্ছে । যে
কোনো ভরা সভাতে তোমরা এ'কথা বোঝাতে পারো। সারাদিন সার্ভিসেরই নেশা থাকা দরকার। ভারতে
এদের রাজ্য স্থাপন হচ্ছে। বাবা আমাদেরকে রাজযোগ শেখাচ্ছেন । শিব ভগবানানুবাচ - হে
বাচ্চারা, তোমরা নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমরা এই রকম হয়ে
যাবে ২১ জন্মের জন্য । দৈবী গুণও ধারণ করতে হবে। এখন তো হল সকলের আসুরিক গুণ।
শ্রেষ্ঠ বানাতে পারেন তো একমাত্র শিববাবাই। সেই উচ্চ থেকে উচ্চ পিতা আমাদেরকে পড়ান।
শিব ভগবানানুবাচ - "মন্মনাভব" । ভাগীরথ তো প্রসিদ্ধ। ভাগীরথকেই ব্রহ্মা বলা হয়।
যাকে মহাবীরও বলা হয়। এখানে দিলওয়ারা মন্দিরে বসে আছে না ! জৈনরা যে এই মন্দির
গুলোকে বানিয়েছে তারা এর অর্থ তো জানেই না। তোমরা ছোট ছোট কন্যারা সেখানে যেতে পারো
এবং ভিজিট করতে পারো। এখন তোমরা অনেক শ্রেষ্ঠ হচ্ছো। এটা হল ভারতের এইম অবজেক্ট।
তাহলে কতখানি নেশা চড়ে যাওয়া উচিত ! এখানে বাবা খুব ভালো ভাবে নেশা চড়ান। সবাই বলে
আমি লক্ষ্মী নারায়ণ হবো। রাম সীতা হওয়ার জন্য কেউই হাত তোলে না। এখন তো তোমরা হলে
অহিংসক, ক্ষত্রীয়। তোমাদের অর্থাৎ ক্ষত্রীয়দেরকে কেউই জানে না। এটা তোমরা বাচ্চারা
এখন বুঝতে পারছো। গীতাতেও বলা হয়েছে - "মন্মনাভব" । নিজেকে আত্মা মনে করো। এটা তো
বোঝার মতো বিষয়, তোমরা ছাড়া আর কেউই এটা বুঝতে পারবে না। বাবা বসে বাচ্চাদেরকে
শিক্ষা প্রদান করেন - বাচ্চারা, আত্ম-অভিমানী হও । এই অভ্যাস তারপর তোমাদের ২১ জন্ম
ধরে চলে। তোমাদেরকে শিক্ষা প্রদান করাই হয় ২১ জন্মের জন্য। বাবা বারে বারে মূল
বিষয়টিকেই বোঝাতে থাকেন - নিজেকে আত্মা মনে করে বসো। পরমাত্মা বাবা আমাদেরকে অর্থাৎ
আত্মাদেরকে বসে বোঝাচ্ছেন। তোমরা বারে বারেই দেহ-অভিমানে এসে যাও, তখন ঘর সংসারের
কথা মনে এসে যায়। এটাই হয়। ভক্তি মার্গেও ভক্তি করতে করতে বুদ্ধি অন্য দিকে চলে
যায়। সম্পূর্ণ একাগ্র হয়ে নবধা ভক্তি যারা করে (একনিষ্ঠ ভক্ত/ভক্তির পরাকাষ্ঠা
যারা) তারাই কেবল বসতে পারে, যাকে তীব্র ভক্তি বলা হয়ে থাকে। একদম লভলীন হয়ে যায়।
তোমরা যেমন স্মরণে থাকো, এক এক সময় একেবারে অশরীরী হয়ে যাও, ভালো ভালো বাচ্চা যারা
তারা এইরকম অবস্থায় বসবে। দেহের ভাব চলে যাবে। অশরীরী হয়ে সেই আনন্দে মজে থাকবে।
এটাই অভ্যাস হয়ে যাবে। সন্ন্যাসীরা হল তত্ত্ব জ্ঞানী বা ব্রহ্ম জ্ঞানী। তারা বলবে
আমরা লীন হয়ে যাবো। এই পুরানো শরীর ছেড়ে ব্রহ্ম তত্ত্বে লীন হয়ে যাবো। সকলের
আলাদা আলাদা ধর্ম, তাই না ! কেউই অন্য ধর্মকে মানতে চায় না। আদি সনাতন ধর্মও
তমোপ্রধান হয়ে গেছে। গীতার ভগবান কবে এসেছিলেন? গীতার যুগ কবে ছিল? কেউই জানে না।
তোমরা জানো যে, এই সঙ্গমযুগেই বাবা এসে রাজযোগ শেখান। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান
বানান। এ হল ভারতেরই কথা। অনেক ধর্মও অবশ্যই ছিল। কথায়ও আছে এক ধর্মের স্থাপনা,
অনেক ধর্মের বিনাশ। সত্যযুগে ছিল এক ধর্ম। এখন কলিযুগে হল অনেক ধর্ম। আবার এক
ধর্মের স্থাপনা হয়। এক ধর্ম ছিল, এখন নেই। বাকি সব দাঁড়িয়ে রয়েছে। বট গাছের (হাওড়া
শিবপুরের) দৃষ্টান্তও একেবারে সঠিক। ফাউন্ডেশনটাই নেই। বাকি পুরো গাছটিই বিদ্যমান।
যদিও এতেও দেবী দেবতা ধর্ম নেই। আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্ম, যেটা হল কান্ড - সেটা
এখন প্রায় লুপ্ত হয়ে গেছে। পুনরায় বাবা তা স্থাপন করেন। বাকি যে সব ধর্ম পরে এসেছে,
পুনরায় চক্র রিপিট অবশ্যই হতে হয় অর্থাৎ পুরানো দুনিয়া থেকে আবার নতুন দুনিয়া হতে
হবে। নতুন দুনিয়াতে এদের রাজত্ব ছিল। তোমাদের কাছে বড় বড় চিত্রও আছে, ছোটও। বড়
জিনিস থাকলে মানুষ দেখে জিজ্ঞাসা করবে - এটাতে কী দেখানো হয়েছে? বলবে, আমরা এমন
জিনিস এনেছি যার দ্বারা মানুষ বেগর টু প্রিন্স হয়ে যায়। অন্তরে অনেক উৎসাহ, অনেক
খুশী থাকা চাই। আমরা আত্মারা হলাম ভগবানের সন্তান ।আত্মাদেরকে ভগবান পড়ান। বাবা
আমাদেরকে নয়নের উপরে বসিয়ে নিয়ে যাবেন। এই ছিঃ ছিঃ দুনিয়াতে আমরা থাকবই না। একটা
সময় আসতে চলেছে যখন মানুষ ত্রাহি ত্রাহি করবে, সে আর বলার নয়। কোটি কোটি মানুষ
মারা যাবে। এ সব তো বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। আমরা এই চোখ দিয়ে যা কিছু
দেখছি, এর কোনো কিছুই থাকবে না। এখানে তো মানুষ হল কাঁটার মতো। সত্যযুগ হল ফুলের
বাগিচা। তারপরে হল আমাদের মধুবন। দু'চোখ শীতল হয়ে যায়। বাগানে গেলেই তো চোখ শীতল
হয়ে যায় । অতএব তোমরা এখন পদ্মাপদম ভাগ্যশালী হয়ে উঠছো। ব্রাহ্মণ যারা হয় (ব্রহ্মা
বৎস), তাদের চরণেই রয়েছে পদ্ম। বাচ্চারা, তোমাদের বুঝতে হবে যে - আমরা এই রাজ্য
স্থাপন করছি। সেইজন্য বাবা ব্যাজ তৈরী করিয়েছেন। শ্বেত বস্ত্র পরিধানে আর তাতে
ব্যাজ লাগানো, এতে সহজেই সেবা হয়ে যায়। মানুষ কীর্তন করে - "আত্মা পরমাত্মা পৃথক
রয়েছে বহুকাল....", কিন্তু বহুকালের অর্থ কী তা কেউই বোঝে না। বাবা তোমাদেরকে
বুঝিয়েছেন বহুকাল অর্থাৎ ৫ হাজার বছর পরে তোমরা বাচ্চারা বাবার সাথে মিলিত হও। তোমরা
এও জানো যে, এই সৃষ্টিতে সব চেয়ে বিখ্যাত হল এই রাধা কৃষ্ণ। এরাই হল সত্যযুগের
ফার্স্ট প্রিন্স প্রিন্সেস। কারো মাথাতেও কখনো আসে না যে এরা কোথা থেকে এল !
সত্যযুগের আগে নিশ্চয়ই কলিযুগ ছিল। তারা এমন কী কর্ম করেছিল যে বিশ্বের মালিক হয়ে
গেছিল ? ভারতবাসীরা কেউই এদেরকে বিশ্বের মালিক মনে করে না। এদের যখন রাজত্ব ছিল তখন
ভারতবর্ষে আর কোনো ধর্ম ছিল না। এখন বাচ্চারা, তোমরা জানো যে - বাবা আমাদেরকে
রাজযোগ শেখাচ্ছেন । আমাদের এইম অবজেক্ট হল এই। যদিও মন্দিরে তাদের (লক্ষ্মী -
নারায়ণ) চিত্র ইত্যাদি রয়েছে, কিন্তু মানুষ কী বুঝতে পারে নাকি যে এই সময় এ'সব
স্থাপিত হচ্ছে ! তোমাদের মধ্যেও নম্বর অনুসারেই বোঝে। কেউ কেউ তো একেবারেই ভুলে যায়।
আচরণ এমন যেমন পূর্বে ছিল (সেই রকমই আছে)। এখানে বোঝার সময় খুব ভালো ভাবেই বোঝে,
কিন্তু এখান থেকে বাইরে গেলেই সব উধাও। সার্ভিসের ইচ্ছা থাকা উচিত। সকলকে এই বার্তা
(পয়গাম) দেওয়ার যুক্তিও খুঁজতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। আধ্যাত্মিক নেশার সাথে বলতে
হবে - শিববাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো তবে পাপ দূর হয়ে যাবে। আমরা একমাত্র শিববাবাকে
ছাড়া আর কাউকেই স্মরণ করি না। আচ্ছা !
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
এইম অবজেক্টের চিত্র সর্বদা সাথে রাখতে হবে। নেশা যেন থাকে যে, এখন আমরা শ্রীমত
অনুসারে চলে বিশ্বের মালিক হতে যাচ্ছি। আমরা এমন ফুলের বাগিচাতে যাচ্ছি - যেখানে
আমাদের নয়ন শীতল হয়ে যাবে।
২ ) সার্ভিসে অনেক
বেশী করে আগ্রহ রাখতে হবে। অনেক বড় মন নিয়ে বা উৎসাহের সাথে বড় বড় চিত্রের উপরে
সার্ভিস করতে হবে। বেগার টু প্রিন্স বানাতে হবে।
বরদান:-
কর্মের
গতিকে জেনে গতি-সদ্গতির সিদ্ধান্তকারী মাস্টার দুঃখহরণকারী সুখ প্রদানকারী ভব
এখনই নিজের জীবনের
কাহিনী দেখতে বা শোনাতে বিজি হয়ে যেও না। পরিবর্তে প্রত্যেকের কর্মের গতিকে জেনে
গতি-সদ্গতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নাও। মাস্টার দুঃখহরণকারী, সুখ প্রদানকারীর পার্ট প্লে
করো। নিজের রচনার দুঃখ, অশান্তির সমস্যাকে সমাপ্ত করো, তাদেরকে মহাদান আর বরদান দাও।
নিজে কোনও সুবিধা নিও না, এখন দাতা হয়ে দাও। যদি স্যালবেশনের আধারে নিজের উন্নতি বা
সেবাতে অল্পকালের জন্য সফলতা প্রাপ্ত হয়েও যায়, তথাপি আজ মহান হবে তো কাল মহানতার
পিপাসু আত্মা হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
অনুভূতি
না হওয়া হলো যুদ্ধের স্টেজ। যোগী হও, যোদ্ধা নয়।
অব্যক্ত ঈশারা :-
অশরীরী বা বিদেহী স্থিতির অভ্যাস বাড়াও
যেরকম ব্রহ্মা বাবা
অব্যক্ত হয়ে বিদেহী স্থিতির দ্বারা কর্মাতীত হয়েছেন, তো তোমরা হলে অব্যক্ত ব্রহ্মার
বিশেষ পালনার পাত্র এইজন্য অব্যক্ত পালনার রেসপন্ড বিদেহী হয়ে দাও। সেবা আর স্থিতির
ব্যালেন্স রাখো। বিদেহী মানে দেহ থেকে পৃথক। স্বভাব, সংস্কার, দুর্বলতা সবই দেহের
সাথে আছে আর দেহ থেকে পৃথক হয়ে গেলে সবকিছুর থেকেই পৃথক হয়ে যাবে, এইজন্য এই ড্রিল
খুব সহযোগ দেবে, এতে কন্ট্রোলিং পাওয়ার চাই।